• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০১:৪১ পূর্বাহ্ন

খুলনা নগরীর সরকারী হাসপাতাল গুলোতে ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে দালাল চক্র


প্রকাশের সময় : নভেম্বর ৩০, ২০২২, ১২:৫৩ পূর্বাহ্ন / ১০২
খুলনা নগরীর সরকারী হাসপাতাল গুলোতে ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে দালাল চক্র

মোস্তাইন বীন ইদ্রিস চঞ্চলঃ খুলনা নগরীর সব সরকারী হাসপাতাল গুলোতে ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে দালাল চক্র। যার মধ্যে রয়েছে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, খুলনা জেনারেল হাসপাতাল, শহীদ শেখ আবুনাসের হাসপাতালসহ ৯টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।

মূলতঃ সরকারী হাসপাতালে দালাল, সিন্ডিকেট কার্যক্রম হলো, রোগ নির্ণয়ের জন্য পরিক্ষা বাণিজ্য, এ্যাম্বুলেন্স বাণিজ্য, প্রতারণা, চুরি, গ্রামগঞ্জ থেকে আসা রোগীদের ভাগিয়ে নিয়ে প্রতারণা করা। তবে মাঝে মধ্যে প্রশাসনের র‌্যাব বা ডিবি পুলিশের অভিযানে এ সব দালাল চক্রদের আটক করে অর্থদন্ড কারাদন্ড দিলেও জামিনে বের হয়ে আবারো আগের পেশায় কাজ চালিয়ে যায়।

মূলতঃ এসব দালাল চক্রদের পিছনে থেকে উৎসাহ যোগায় বেসরকারী হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার গুলো। এছাড়া এসব দালালদের নাকরণ করা হয় মার্কেটিং অফিসার। কোন রকম রোগীদের ভুলিয়ে যদি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নেয়া যায় তাহলে বাজিমাত। শতকরা ৪০ থেকে ৫০ ভাগ কমিশন চলে আসে দালালদের হিসাবে। এছাড়া অভিযোগ রয়েছে, সরকারি হাসপাতালে ও ডাক্তার চেম্বারে চিকিৎসা নিতে গেলে দূরদূরান্ত থেকে আসা রোগীদের প্রয়োজন ছাড়াই রক্ত, প্রসাব পরীক্ষা, আলট্রাসনোগ্রাম, এক্স-রেসহ বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থা পত্র ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এমনকি রোগীদের বলে দেওয়া হচ্ছে, কোন প্রতিষ্ঠানে এ পরীক্ষাগুলো করতে হবে। তাই রোগীরা ডাক্তারের নির্দেশিত প্রতিষ্ঠানগুলোতে পরীক্ষা করাতে বাধ্য হচ্ছেন। এবিষয়ে সচেতন নাগরিক মো. খালিদ হোসেন বলেন, খুলনা নগরীর অলিগলিতে গড়ে উঠেছে শত শত ডায়াগনস্টিক সেন্টার। আর অধিক মূনাফা লোভী ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড প্যাথলজিক্যাল সেন্টারগুলোতে চলছে চিকিৎসার নামে কমিশন বাণিজ্যের ব্যবসা। এ জন্য অবশ্যই সরকারী হাসপাতালে দায়িত্বরত ডাক্তার, নার্স ও দালাল চক্র জড়িত। পাশাপাশি কমিশন বাণিজ্যের কারণে দিন দিন এসবব্যবসা জমজমাট হচ্ছে। সরকারি স্বাস্থ্যনীতির তোয়াক্কা না করে এসব প্রতিষ্ঠান গুলোতে চিকিৎসার নামে চলছে রোগীদের জীবন বিপন্ন করার কাজ।

এছাড়া বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার প্রতিষ্ঠায় আইন মানা হচ্ছে না। বিশেষ করে উপজেলা পর্যায়ে সরকারি হাসপাতালের সামনে ও আশপাশে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠেছে হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। আর এসব বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত বেতনভুক্ত দালালরা সরকারি হাসপাতালের রোগীদের ভাগিয়ে নিচ্ছে। এ জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষর আরো বেশি নজদারি বাড়াতে হবে। পাশাপাশি প্রশাসনের তৎপরতা আরো কঠোর হতে হবে।

এ বিষয়ে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভুক্তভোগী রোগী আকলিমা বেগম বলেন, আমার পেটে সমস্যায় কারণে হাসপাতালে বর্হিবিভাগে টিকিট কাটার সময়ে এক মহিলা দালাল সাথে কথা হয়। মহিলা বলেন, কি সমস্যায় এসেছেন আমি সমস্যার কথা বলতেই বলে। এখনও ডাঃ আসেনি। আর কখন আসবে বলা যাচ্ছে না। খুলনা মেডিকেলের অবসর প্রাপ্ত চিকিৎসক আছে ২০০ টাকা দিলে আপনাকে সময় নিয়ে দেখবে। আমি তার কথায় রাজি হতেই আমাকে পাশের সুগন্ধা ডায়গনস্টিক সেন্টারে নিয়ে যায়। ডাক্তারের কাছে যাই। তিনি আমার সম্যার কথা বলতেই বেশ কয়েকটি এখানো পরিক্ষার কথা বলে। সব মিলিয়ে সাড়ে তিন হাজার টাকা খরচ হবে। আমার কাছে এত টাকা নেই মাত্র ১১০০ টাকা আছে তখন বলে আপনি এখন এই টাকা দিয়ে পরিক্ষা করাবেন বাকি টাকা রিপোর্ট নেয়ার সময় দিবেন। আমি রাজি না হয়ে চলে আসি কারণ আমার কাছে এত টাকা যোগাড় করা অসম্ভব। এবিষয়ে খুলনা সিভিল সার্জন ডাঃ সুজাত আহমেদ বলেন, দালালদের নিয়ন্ত্রণের জন্য আনসার সদস্যদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তবে জনবল সংকট থাকায় তদারকি করা হচ্ছেনা। তবে দালাল নিয়ন্ত্রণ ও সচেতনাতা মূলক কার্যক্রম চলমান আছে।