• ঢাকা
  • রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ১০:২৪ অপরাহ্ন

খুলনার পাইকগাছায় স্বামী ও শ্বশুরের বেধড়ক পিটুনিতে গৃহবধূর মৃত্যু


প্রকাশের সময় : মে ৭, ২০২৪, ৯:৫৯ অপরাহ্ন / ১৮
খুলনার পাইকগাছায় স্বামী ও শ্বশুরের বেধড়ক পিটুনিতে গৃহবধূর মৃত্যু

মানছুর রহমান জাহিদঃ খুলনা জেলার পাইকগাছা উপজেলার হরিঢালীতে স্বামী ও শ্বশুরের নির্মম অত্যাচারে পুত্রবধূ আবেদা বেগম (২৭) নামে এক গৃহবধূর মৃত্যুের ঘটনা ঘটেছে। শ্বশুর ও স্বামীর বেধড়ক মারপিটে অসুস্থ হয়ে পড়লে ওই গৃহবধূকে হাসপাতালে ভর্তির এক পর্যায়ে তার মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে সর্বশেষ এ ঘটনার মৃত্যের পরিবারের পক্ষ থেকে হত্যা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছিলো।

এলাকাবাসী, পুলিশ ও মৃতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার হরিঢালী ইউপির হরিঢালী গ্রামের মোহাম্মদ আলী সরদারের বড় ছেলে জাকারিয়া সরদার (৩০) এর সহিত একই ইউপির সোনাতনকাটী গ্রামের ফরিদ গাজীর কন্যা আবেদা বেগম (২৭) এর সহিত বিবাহ হয়। বিবাহ পরবর্তী পারিবারিক নানা প্রতিকুলতার অজুহাতে আবেদা বেগমের শ্বশুর মোহাম্মদ আলী সরদার, শ্বাশুড়ী রাবেয়া খাতুন ও স্বামী জাকারিয়া সরদার উভয়ে মিলে প্রতিনিয়ত মারপিট থেকে শুরু করে তার উপর অমানুষিক নির্যাতন চালিয়ে আসছিল।

এমতাবস্থায় ঘটনার দিন শনিবার (৪ঠা মে) দুপুর ১২ টার দিকে গরুর খাবার দিতে দেড়ি হওয়ার অপরাধে স্বামী এসে তাকে মারপিট করতে থাকে। এক সময় বিচুলীর গাদার উপরে থাকা শ্বশুর মোহাম্মদ আলী নিচে নেমে এসে কাঠের চলা দিয়ে বেধড়ক পেটায় ও মাটিতে ফেলে পা দিয়ে পাড়াতে থাকে। এ সময় শ্বশুর মোহাম্মদ আলী ছেলেকে উদ্দেশ্য করে বলে “কিভাবে বউ পিঠাতে হয় শিখে নে”।

একপর্যায়ে গৃহবধূ আবেদা বেগম মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়লে স্বজনেরা তাকে তড়িঘড়ি করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেয়। হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তার অবস্থার অবনতি দেখে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পরামর্শ দেয়। সেখানে নেয়ার দু’দিন পর সোমবার গভীর রাতে গৃহবধূ আবেদার মৃত্যু হয়।

এ সময় গৃহবধূর স্বজনেরা কৌশলে খুলনা থানা পুলিশের সহায়তায় স্বামী জাকারিয়াকে আটক করে।

এদিকে পুত্রবধু আবেদার মৃত্যুের খবর পাওয়ার সাথে সাথেই পুত্রবধু হত্যা ঘটনার মূল নায়ক শ্বশুর মোহাম্মদ আলী সরদার কৌশলে গাঁ ঢাকা দিয়েছে। মৃত আবেদা বেগমের আব্দুল্লাহ সরদার (৯) ও আবির হাসান নামের (১৮ মাস) দুই পুত্র সন্তান রয়েছে।

এ ব্যাপারে মৃতের ফুফাতো ভাই মিজানুর রহমান গাজী জানান, আমার বোনকে তার স্বামী, শ্বশুর ও শ্বাশুড়ী মিলে ঘটনারদিন কয়েক দফায় বেদম মারপিট করলে সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। এরপর একাধীক বার বমি করে সে। এ কারনে লাঞ্চ ফেটে যাওয়ায় তার মৃত্যু হয়েছে।

তিনি আরও জানান, আমার বোনের শ্বশুরের কু-প্রস্তাবের কারণে জাকারিয়ার আগের স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে গেছে। আমার বোনকে তারা পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করেছে। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।

পাইকগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ওবাইদুর রহমান বলেন, আবেদার মৃত্যুের খবর আমরা শুনেছি। তার লাশ খুমেক হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। লাশের ময়না তদন্ত শেষে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছিল।