• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:৫৫ পূর্বাহ্ন

উৎপাদনশীল সকল শিল্প-কারখানা সচল রাখার জন্য এফবিসিসিআই এর সভাপতির আহ্বান


প্রকাশের সময় : জুলাই ১৬, ২০২১, ৬:৫০ অপরাহ্ন / ২৫৫
উৎপাদনশীল সকল শিল্প-কারখানা সচল রাখার জন্য এফবিসিসিআই এর সভাপতির আহ্বান

মনিরুজ্জামান অপূর্ব: কোভিডজনিত বিধি-নিষেধের আওতায় সকল প্রকার শিল্প-কারখানা বন্ধ রাখা হলে অর্থনৈতিক কার্যক্রমের প্রাণশক্তি উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ থাকবে এবং সাপ্লাই চেইন (সরবরাহ ব্যবস্থা) সম্পূর্ণভাবে বিঘ্নিত হবে। এতে উৎপাদন থেকে ভোক্তা পর্যন্ত প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত সকলেই ক্ষতিগ্রস্থ হবে। বিশেষ করে, খাদ্য-সামগ্রী, কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ, বোতলজাত পানীয়, নিত্য-প্রয়োজনীয় পণ্য ইত্যাদি উৎপাদন বন্ধ থাকলে ভোক্তা সাধারণ সমস্যার সম্মুখীন হবেন। পণ্য-সামগ্রী সঠিকভাবে সরবরাহ ও বাজারজাত না হলে পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পাবে। এতে স্বল্প আয়ের ক্রেতারা ভোগান্তির শিকার হবেন।

পাশাপাশি রপ্তানি খাতের উৎপাদন ব্যবস্থা বন্ধ থাকলে সময়মত পরবর্তী রপ্তানি অর্ডার অনুযায়ী সাপ্লাই দেয়া সম্ভব হবে না। এতে রপ্তানি অর্ডার বাতিল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। উল্লেখ্য যে, ঈদের ছুটিসহ প্রায় ১৮-২০ দিন কারখানা বন্ধ থাকলে এক অনিশ্চয়তার মাঝে লেইট সামার, ক্রিসমাস ও বড়দিন এবং আগামী শীতের কার্যাদেশসমূহ হাতছাড়া হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। এক মাসের রপ্তানি শিডিউল বিঘ্নিত হলে পরবর্তি ছয় মাসের রপ্তানি শিডিউলে নেতিবাচক প্রভাব পরবে। সেসাথে উৎপাদন বন্ধ থাকলে আমদানিকৃত কাঁচামাল অব্যবহৃত হয়ে নষ্ট হয়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। এতে আমদানিকারক ও উৎপাদক উভয়ই আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবেন। এছাড়া ক্ষুদ্র ও ছোট কারখানাসমূহ বন্ধ রাখা হলে উদ্যোক্তাগণ আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবেন এবং কারখানাসমূহ পুনরায় চালু রাখা অসম্ভব হয়ে পড়বে। এ অবস্থায়, ইতিমধ্যে বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বিটিএমএ, প্লাস্টিক গুড্স ম্যানুফ্যাকচারার্স এন্ড এক্সপোর্টারর্স এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ টেরি-টাওয়েল ম্যানু: এন্ড এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ ট্যানার্স এসোসিয়েশনসহ রপ্তানি ও উৎপাদনের সাথে সংশ্লিষ্ট এসোসিয়েশনসমূহ ও চেম্বারসমূহ শিল্প-কারখানার উৎপাদন কার্যক্রম সচল রাখার বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়ার জন্য এফবিসিসিআই-এর প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে।
কোভিড বিস্তার রোধে জারিকৃত বিধি-নিষেধ সংক্রান্ত সার্কুলারে ঔষধ কারখানা বিষয়ে সুনির্দিষ্ট দিক-নির্দেশনা নেই। যদি ঔষধ কারাখানা বন্ধ রাখা হয় তবে জীবন রক্ষাকারী ঔষধ সরবরাহ ব্যবস্থা ব্যাহত হবে। অপরদিকে ট্যানারি কারখানা বন্ধ রাখা হলে কোরবানি ঈদে সংগৃহীত চামড়া সংরক্ষণ কার্যক্রম ব্যাহত হবে।
বর্তমান কোভিড পরিস্থিতিতে জীবন রক্ষাকে অবশ্যই অগ্রাধিকার দিতে হবে। কিন্তু উৎপাদন ব্যবস্থা সম্পূর্ণ বন্ধ রাখা হলে খাদ্য-পণ্য সহ অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য থেকে সকলেই বঞ্ছিত হবেন।
সর্বোপরি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুযোগ্য নেতৃত্ব ও দিক-নির্দেশনায় বিদ্যমান বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দা পরিস্থিতির মধ্যেও দেশের অর্থনৈতিক কার্যক্রম সচল রয়েছে এবং জাতীয় প্রবৃদ্ধি ৬.১% অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। যদি উৎপাদন ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণ বন্ধ রাখা হয় তাহলে অর্থনীতির চলমান গতিধারা ব্যাহত হবে। জীবন ও জীবিকার মধ্যে সমন্বয়ের বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে অর্থনৈতিক কার্যক্রমকেও সচল রাখতে উৎপাদন ব্যবস্থাকে চলমান রাখা জরুরী।
এ প্রেক্ষাপটে, শিল্প-কারখানাকে বিধি-নিষেধের আওতার বাহিরে রেখে উৎপাদন প্রক্রিয়াকে চলমান রাখার জন্য সরকার-এর প্রতি এফবিসিসিআই-এর সভাপতি জনাব মো: জসিম উদ্দিন আহ্বান জানিয়েছেন।