• ঢাকা
  • সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ১২:৪৭ অপরাহ্ন

ইমু অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে কোটি টাকা আত্মসাৎ চক্রের তিন সদস্য গ্রেফতার


প্রকাশের সময় : এপ্রিল ১০, ২০২৩, ৩:০৮ পূর্বাহ্ন / ৮২
ইমু অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে কোটি টাকা আত্মসাৎ চক্রের তিন সদস্য গ্রেফতার

এম রাসেল সরকারঃ ইমু অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে কোটি টাকা আত্মসাৎ চক্রের ৩ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা-সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (দক্ষিণ) বিভাগ।গ্রেফতারকৃতরা হলো- মো: শিপন আহম্মেদ ওরফে আরিফ, মো: মজিবুল ইসলাম ও মো: রাসেল আহম্মেদ।

গোয়েন্দা-সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (দক্ষিণ) বিভাগের অর্গানাইজড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিমের সহকারী পুলিশ কমিশনার শিপ্রা রানী দাস জানান, উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল এন্ড কলেজের সহকারী প্রধান শিক্ষক মো: নাসির উদ্দিনের ইমু আইডি হ্যাকাররা হ্যাক করে পরিচিত বন্ধু ও আত্মীয়-স্বজনদের নিকট টাকা চেয়ে বার্তা প্রেরণ করে। তার বন্ধু ও আত্মীয়-স্বজন সরল বিশ্বাসে হ্যাকারদের দেয়া বিকাশ নম্বরে বিভিন্ন সময়ে টাকা পাঠান। পরবর্তীতে তার বন্ধু ও আত্মীয়-স্বজন টাকা পেয়েছে কিনা জানতে চায়। তখন নাসির উদ্দিন তার ইমু আইডি হ্যাক ও প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পারেন।

তার অভিযোগের প্রেক্ষিতে রমনা থানায় মামলা রুজু হয়। গোয়েন্দা-সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (দক্ষিণ) বিভাগের অর্গানাইজড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিম মামলাটি তদন্তকালে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় গত শুক্রবার রাজশাহী জেলার বাঘা থানায় অভিযান চালিয়ে চক্রের ৩ সদস্যকে গ্রেফতার করে। এসময় তাদের হেফাজত হতে প্রতারণায় ব্যবহৃত ২টি মোবাইল ও ৭টি সিম উদ্ধার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্য সম্পর্কে তিনি বলেন, হ্যাকাররা প্রথমে তাদের নিজের মোবাইলে একটি ফেইক মোবাইল নম্বর দিয়ে ইমু আইডি খুলে। IMO Find Friend নামে অ্যাপ ব্যবহার করে এগারো ডিজিটের ফোন নম্বর ব্যবহার করে সার্চ দিলে ১০-৫০ টি ইমু অ্যাকাউন্ট চলে আসে। সেখান থেকে প্রধানত প্রবাসিদের টার্গেট করে হ্যাকাররা। টার্গেট করা ইমু আইডিটি প্রথমে একটি ইমু গ্রুপের সাথে যুক্ত করে পরবর্তীতে তাকে বিভিন্ন উপায়ে কল দিয়ে ও স্টিকার পাঠিয়ে বিরক্ত করে। তাকে ইমুতে ফোন দিয়ে গ্রুপে থাকতে চান কিনা জানতে চায়।

টার্গেটকৃত ব্যক্তি বিরক্ত হলে বলে যে, না আমি থাকতে চাই না, আমাকে গ্রুপ থেকে রিমুভ করে দেন। হ্যাকার এই সুযোগটি কাজে লাগিয়ে বলে, আপনাকে গ্রুপ থেকে রিমুভ করে দিচ্ছি, আপনার ফোনে একটি ওটিপি কোড গিয়েছে সেটি দেন। টার্গেটকৃত ব্যক্তির নিকট হতে কোড নিয়ে প্রতারক তার ফোনে ইমু অ্যাকাউন্ট নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয়। সেখান থেকে টার্গেটকৃত ব্যক্তির অসুস্থতা বা জরুরি প্রয়োজনের কথা বলে বন্ধু-বান্ধব বা আত্মীয় স্বজনদের নিকট টাকা চেয়ে ইমুতে ম্যাসেজ পাঠায়। প্রতারকের এই ধরনের ম্যাসেজ বিশ্বাস করে টাকা পাঠিয়ে অনেকেই প্রতারিত হয়।

প্রতারক চক্রটি ২০২১ সাল থেকে ইমু আইডি হ্যাক করে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে বলে জানান গোয়েন্দা এ কর্মকর্তা। গ্রেফতারকৃ তিন প্রতারকের বিরুদ্ধে রমনা থানায় রুজুকৃত মামলায় বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।গোয়েন্দা-সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (দক্ষিণ) বিভাগ এসব প্রতারণা এড়াতে কিছু সুপারিশ প্রদান করেছে:

যেমন: ইমু অ্যাপ ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করা। যাচাই বাছাই না করে বিকাশ কিংবা অন্য কোন মাধ্যমে কাউকে টাকা না দেওয়া। ইমু বা অন্যান্য যোগাযোগ মাধ্যমে কোন আত্মীয়-স্বজনের আইডি থেকে টাকা চাওয়া হলে তা যাচাই-বাছাই করে নেওয়া। মধ্যপ্রাচ্যে বসবাসরত প্রবাসীদের ইমো ব্যবহার ও হ্যাকিংয়ের ব্যাপারে সচেতন হওয়া। ই-ট্রানজেকশনের ক্ষেত্রে কাহাকে টাকা দিচ্ছেন তার সম্পর্কে সু-স্পষ্ট ভাবে ধারণা নেওয়া। ইমু বা ম্যাসেঞ্জারে অপরিচিত গ্রুপ কলে যুক্ত না হওয়া। কখনো অপরিচিত/স্বল্প পরিচিত কারো সাথে ব্যক্তিগত ইমু নাম্বার অথবা OTP শেয়ার না করা।