• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০২:৩২ অপরাহ্ন

আশুলিয়ায় পিকআপ ড্রাইভারের মেয়ে সালমা আঙুল ফুলে কলাগাছ : হতে চান জনপ্রতিনিধি


প্রকাশের সময় : মার্চ ১৬, ২০২৪, ৮:১৭ অপরাহ্ন / ৯৫
আশুলিয়ায় পিকআপ ড্রাইভারের মেয়ে সালমা আঙুল ফুলে কলাগাছ : হতে চান জনপ্রতিনিধি

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাভারঃ আঙুল ফুলে কলাগাছ এর মানে হচ্ছে, অপ্রত্যাশিত সম্পদের মালিক, রাতারাতি অঢেল সম্পদের মালিক বনে যাওয়া ইত্যাদি।

সাধারণত অবৈধ পথে অর্থ উপার্জন করে হঠাৎ ধনী হয়ে যাওয়া ব্যক্তি সম্পর্কে আঙুল ফুলে কলাগাছ কথাটা বেশি ব্যবহার করা হয়। আশুলিয়ায় তেমনি একজন নারী রাতারাতি আঙুল ফুলে কলাগাছ হওয়ার বিষয়টি এখন পাড়া-মহল্লার চায়ের দোকানে আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে পরিনত হয়েছে।

যদিও এই নারী সম্পদের দিক থেকে বনে গেছে বটগাছের চেয়েও মোটা, আর অবৈধ সম্পদ অর্জনের অহংকার এখন তার পাহাড় সমান। তিনি আবার বর্তমানে এলাকার জনপ্রতিনিধি হওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন বলে জানা গেছে।

ওই নারীর নিকটতম প্রতিবেশী ও আত্মীয় স্বজনরা জানান, আশুলিয়ার গাজিরচট এলাকার পিক-আপের ড্রাইভার শাহাজান মিয়ার মেয়ে সালমা (৪৫) কিছু দিন আগেও বুড়ি বাজার সংলগ্ন সফি নীট লিমিটেড নামক পোশাক কারখানায় হেলপার হিসাবে চাকুরী করতো, কেউ চাকুরির বিষয়ে জানতে চাইলে বলতো ভায়ার ডিলিংস করি। কারখানার বড় কর্মকর্তাদের সাথে কক্সবাজারসহ বিভিন্ন ভ্রমণ স্পটে বেড়িয়ে ইনকাম করেছে। মজার ব্যাপার হলো তার এক ডজন বিয়ে হলেও, প্রত্যক স্বামীই তাকে দেনা পাওনা মিটিয়ে ডিভোর্স দিয়েছে। বর্তমানে সে মানসিকভাবে অনেকটা বিপজ্জনক সাইকো প্রকৃতির। সালমা এ পর্যন্ত ধনাঢ্য ব্যবসায়ী, প্রবাসী, রাজনীতিবীদ,পুলিশ কর্মকর্তাসহ প্রায় ডজনখানেক বিবাহ করেছে। পরবর্তীতে প্রত্যেক স্বামীকে ফাঁসিয়ে বিপুল পরিমাণ সম্পদ রেখে তার সকল স্বামীদের সাথে বিবাহ বিচ্ছেদ করেছে

বর্তমানে সালমা তার ১৩ নম্বর স্বামীর খোজে বিভিন্ন পর্যায়ের ক্ষমতাধর রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে টার্গেট করেছে। তাদের সাথে সেলফি তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোডসহ ব্যানার ফেস্টুন বানিয়ে বিভিন্ন জনবহুল এলাকার নিজেকে বড় মাপের জনপ্রতিনিধি বানাতে হন্যে ঘুরে বেড়াতে দেখা যাচ্ছে।

সালমা আক্তারের এক নিকট প্রতিবেশী বলেন, সালমা ঝোপ বুঝে কোপ মারায় ব্যাপক পারদর্শী, একারণে সে ডজনখানেক বিয়ে করে অঢেল সম্পদের পাহাড় তৈরি করতে পেরেছে, তাতে এলাকায় তার সূনাম বেড়েছে অনেকগুন। তাই সে এখন এলাকার জনপ্রতিনিধি হলে ষোলকলা পূর্ণ হবে। তবে সালমার কার্যকলাপে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে এলাকার সুশীল সমাজ।

আশুলিয়া থানায় গত ১১/০৩/২৪ ইং তারিখে মোছাঃ শাহানাজ পারভীন শোভা নামের এক নারী সালমার বিরুদ্ধে আপত্তিকর ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছেড়ে দেওয়ার হুমকি, ব্লাকমেইল ও প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ায় একটি সাধারণ ডায়েরি ও লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। এছাড়াও গাজীরচট এলাকার বিভিন্ন মানুষের সম্মান হানীর উদ্দেশ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য ও হুমকি ধামকির কারনে এলাকার ভূক্তোভোগিরা আশুলিয়া থানায় সাধারণ ডায়েরি ও লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে।

এ বিষয়ে আশুলিয়া থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) শেখ আফজালুল হক জানান, এ ঘটনায় শাহানাজ পারভীন শোভা একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। তদন্ত চলছে, আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ভূক্তোভোগিরা জানান, সালমা আক্তার ইয়াবার নেশায় আসক্ত হওয়ায় কিছুটা মানসিক সমস্যা আছে। বাড়ির পাশে অফিস খুলে তার বড় ভাই দেলোয়ারকে দিয়ে রানা ও লিটনের সহযোগিতায় এলাকায় মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণসহ পুলিশের ভয় দেখিয়ে বিচার শালিসের নামে করছে চাঁদাবাজি ও ফিটিং বানিজ্য। এলাকার ওষুধ ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে রিকশাওয়ালা কিংবা বাড়িমালিক কেউই রেহাই পাচ্ছে না ভয়ংকর নারী সন্ত্রাসী সালমা বাহিনীর হাত থেকে। এসব কর্মকাণ্ডের আবার আবার নাম দিয়েছে সালমা আপার ডিজিটাল জনসেবা, তার এই অপকর্মকে এবার সরকার অনুমোদিত করতে জনপ্রতিনিধি হওয়ার নেশায় হন্যে হয়ে উঠেছে। আশুলিয়ায় ধামসোনা ইউনিয়নে সালমা ও তার পরিবারের তেমন পরিচিতি না থাকলেও সালমার সাবেক ১ ডজন স্বামীর মধ্যে একজন সুনামধন্য পুলিশ কর্মকর্তার পরিচয় এবং তার মামাবাড়ির সুনাম ব্যবহার করে সে পেছন থেকে লাফিয়ে সামনের কাতারে আসার চেষ্টা করছে। সালমার বিরুদ্ধে তার ভাই দেলোয়ারকে দিয়ে কিশোর অপরাধীদের নিয়ন্ত্রণসহ এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে। প্রশাসান ও দুদকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এলাকাবাসী যথাযথ আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।

আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, সালমার বিরুদ্ধে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ভূক্তোভোগিরা। এ ঘটনার তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। তদন্ত শেষে উর্ধ্বতন কর্মকতাদের নির্দেশনা মোতাবেক আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।