
নিজস্ব প্রতিবেদক, ফরিদপুরঃ ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলায় কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাত দিন দিন বাড়ছে। এ গ্যাংয়ের নেতৃত্ব দিচ্ছেন আলফাডাঙ্গা পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ রায়হান রনি।
অভিযোগ উঠেছে, এই বিপথগামী কিশোররা মাদক ব্যবসা থেকে শুরু করে নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়ছে। তারা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে গিয়ে হামলার হুমকি দিয়ে নিয়মিত চাঁদা দাবি করছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ সকাল ১০টার দিকে নাজমা মেডিকেয়ারের সামনে রায়হান রনি ও তার সহযোগীরা ক্লিনিক মালিকদের উদ্দেশ্যে অশ্লীল গালিগালাজ শুরু করে। তারা হুমকি দেয়, নিয়মিত চাঁদা না দিলে প্রতিষ্ঠান ভেঙে ফেলা হবে। এমনকি তারা ২ লাখ টাকা দাবি করে সাত দিনের আল্টিমেটামও দেয়। এ সময় নাজমা মেডিকেয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ হারুনুর রশীদসহ একাধিক ব্যক্তি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন।
এর মাসখানেক আগে ল্যাব-ক্লিনিক মালিক সমিতির আরেকটি প্রতিষ্ঠান লাইফ কেয়ার এর কাছেও চাঁদা দাবি করেছিল একই গোষ্ঠী।
শুধু তাই নয়, রনি শেখের বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসায় জড়িত থাকার অভিযোগও রয়েছে। তার বিরুদ্ধে যাত্রাবাড়ী থানায় হত্যাচেষ্টা মামলা (মামলা নং–৭১, তারিখ: ২০ জানুয়ারি ২০২৫) চলমান।
এদিকে প্রগতি সার্জিকাল ক্লিনিকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও আলফাডাঙ্গা উপজেলা প্রাইভেট ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোঃ সিরাজুল হক মিয়া অভিযোগ দায়ের করতে থানায় গেলে পুলিশ তা গ্রহণ করেনি।
বাদী সিরাজুল হক জানান, ঘটনার পরপরই থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করতে চাইলে আলফাডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ শাহজালাল আলম মামলা নিতে অস্বীকৃতি জানান। ভুক্তভোগী ও এলাকাবাসীর দাবি, অভিযুক্তদের পুলিশ প্রশাসন আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে।
অভিযোগ উঠেছে, অভিযুক্ত রায়হান রনি ইতোমধ্যে তার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে নাজমা মেডিকেয়ারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। তিনি মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে জনমনে বিভ্রান্তি তৈরি করছেন এবং ভুয়া অভিযোগ তুলে অক্টবরের ৩ তারিখে মানববন্ধনের ডাক দিয়েছেন। এ বিষয়েও ক্লিনিক মালিকরা থানাকে অবহিত করেছেন, কিন্তু তাতেও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
পরে সাংবাদিকরা এ বিষয়ে আলফাডাঙ্গা থানার ওসি শাহজালাল আলমকে ফোন করলে তিনি প্রথমে অভিযোগ অস্বীকার করেন। তবে পরে তিনি বলেন, তারা এখনও কিছু করেনি, করলে তখন দেখা যাবে।
ক্লিনিক মালিকরা অভিযোগ করেন, চাঁদাবাজি ও মাদক ব্যবসায় জড়িত এ ধরনের অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা না নিলে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালানো অসম্ভব হয়ে পড়বে। তারা অবিলম্বে মামলা গ্রহণ, দোষীদের গ্রেপ্তার এবং স্বচ্ছ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।
আপনার মতামত লিখুন :