বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকাঃ বাবা সংসদ সদস্য, শ্বশুরও সংসদ সদস্য, শাশুড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান, নিজে ওয়ার্ড কাউন্সিলর। আর কী চাই! তাইতো ক্ষমতা ও দাপটে বাবা হাজী সেলিমকেও ছাড়িয়ে গেছেন ইরফান সেলিম। যখন তখন মানুষের সাথে বেয়াদবি, মানুষকে অপমান অপদস্থ আর মারধর করা অনেক আগে থেকেই তার অভ্যাস। স্থানীয় সূত্র এসব তথ্য জানিয়েছে। কথায় আছে, চোরের দশদিন গৃহস্থের একদিন। তার বেলায় যেন তেমনি হলো। এতদিনের কুকর্মের খাতাটার পৃষ্ঠাগুলো এখন এক এক করে সবাই পড়ে ফেলছেন।
কথায় কথায় মারধরঃ২০১৯ সালের ১৬ নভেম্বর শহীদ হাজী আব্দুল আলিম খেলার মাঠ উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে মারামারির ঘটনা ঘটান ইরফান সেলিম। সেদিন মূলত ছিল নিজেকে জানান দেওয়ার শো ডাউন। ওই অনুষ্ঠানে তৎকালিন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন প্রধান অতিথি ছিলেন। মাঠের নাম ফলকে হাজী সেলিমের নাম না থাকায় তার ছেলে ইরফান সেলিম দলবল নিয়ে হাজির হন সেখানে। এক পর্যায়ে কাউন্সিলর হাসিবুর রহমান মানিককে থাপ্পড় মারেন হাজী সেলিম।.
বাপকেও ছাড়েননিঃ পুরান ঢাকার বিশেষ করে চকবাজার এলাকার সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করতেন ইরফান সেলিম। একাদশ সংসদ নির্বাচনে পিতার আসনে দলীয় মনোনয়ন ফরমও তুলেছিলেন ইরফান। পরে আওয়ামী লীগ থেকে হাজী সেলিমকে মনোনয়ন দিলে নির্বাচনে বিজয় লাভ করেন।
যেভাবে ক্ষমতার লাইসেন্সঃ এমপি হতে না পারলেও জনপ্রতিনিধি হওয়ার স্বপ্ন থেকেই যায় তার। তাই ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৩০ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ইরফান সেলিম। হয়ে যান কাউন্সিলর।
চাঁদাবাজি-দখলবাজিঃ সশস্ত্র দেহরক্ষীদের মাধ্যমে তিনি এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেন। দখল, চাঁদাবাজি থেকে হেন কোনো অপকর্ম নেই যা করেননি সেলিম। প্রত্যেক রাতে বাড়িতে মদের আড্ডা বসাতেন, সেখানেই পরিকল্পনা হতো জমি দখল কিংবা চাঁদাবাজির। পরিকল্পনা অনুযায়ী সশস্ত্র ক্যাডার বাহিনী পাঠিয়ে ব্যর্থ হলে জমি ও দোকান মালিকদের ধরে এনে টর্চার সেলে নির্যাতন করা হতো।
শেষমেশ ধরাঃ সম্প্রতি ধানমন্ডিতে সংসদ সদস্যের স্টিকারযুক্ত হাজী সেলিমের একটি গাড়ি থেকে নেমে নৌবাহিনীর লেফটেন্যান্ট মো. ওয়াসিফ আহমেদ খানকে মারধর করেন ইরফান সেলিম। এরপর তার বিরুদ্ধে মারধর ও হত্যা চেষ্টা মামলা করেন ওয়াসিফ আহমেদ। সেই মামলায় কারাগারে কাউন্সিলর ইরফান সেলিম। সূএ: পূর্বপশ্চিমবিডি
আপনার মতামত লিখুন :