![scriptForHost](https://ajkerbd24.com/wp-content/uploads/2023/01/326421156_1110325216316972_5065626383168132709_n.jpg)
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ চিকিৎসা একটি মহান সেবামূলক পেশা। এই মহান পেশাকে কলঙ্কিত করতে কোন মেডিকেল কলেজে পড়াশোনা না করে। নেই বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি)’র রেজিস্ট্রেশন। অথচ তিনি একজন চক্ষুর উপর বিশেষ ট্রেনিং প্রাপ্ত ডাক্তার। লিখছেন সব রোগের চিকিৎসার ব্যবস্থাপত্র। মুন্সিগঞ্জ, টঙ্গীবাড়ী উপজেলার বালিগাঁও বাজারের কলমা রাস্তার মোড়ের পূর্বপাশে দোকান ভাড়া নিয়ে চেম্বার বানিয়ে বসেন এস এম হেদায়েতুল ইসলাম (লাভলু)। এলাকাতে লাভলু ডাক্তার নামে পরিচিত।
এদিকে ব্যবহার করছেন ভূয়া রেজিস্ট্রেশন। বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি)’র ওয়েবসাইডে গিয়ে তার কার্ডে ব্যবহার করা রেজিস্ট্রেশন নাম্বার খুজে পাওয়া যায়নি। পড়াশোনা করেনি কোন মেডিকেল কলেজে । তার পরেও তিনি নামের আগে ব্যবহার করছে চিকিৎসক পদবী।
সরেজমিনে উপজেলার বালিগাঁও বাজারে কলমা রাস্তার মোড়ে কথিত চিকিৎসক এস এম হেদায়েতুল ইসলাম (লাভলু)’র চেম্বারে গিয়ে দেখা যায়, অন্ধকার ছোট্ট একটি রুমে ডাক্তার লাভলু ও তার সহকারি নিয়ে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত রোগিদের দিচ্ছে চিকিৎসা। সপ্তাহে একদিন বন্ধ। রোগিদের কাছ থেকে নিচ্ছে ৩ শত টাকা । কারো কাছে আরো বেশি। (বিএমডিসি)’র আইন অমান্য করে লিখছেন সব ধরনের রোগের চিকিৎসার ব্যবস্থাপত্র। ঔষধ কিনার পর রোগিদের কাছ থেকে রেখে দিচ্ছেন চিকিৎসার ব্যবস্থা পত্র। এছাড়াও তিনি মৌখিক চুক্তির মাধ্যমে রোগিদের কাছে বড় অংকের টাকা নিয়ে চিকিৎসা দেন। ১৫ দিন অথবা ১ মাসে রোগ সারাবে বলে। গ্রামের মানুষের অসহায় ও অজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে কথিত চিকিৎসক প্রতি মাসে হাতিয়ে নিচ্ছে কয়েক লক্ষ টাকা।
জানা যায়, চক্ষুর মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গের সার্জারিও করছেন তার ছোট্র অন্ধকার চেম্বারে। বিদ্যুৎ না থাকলে মোবাইলের আলোয়ও সার্জারি করা হয় এখানে। তার ভিজিটিং কার্ডে লেখা আছে চিকিৎসকঃ এস এম হেদায়েতুল ইসলাম (লাভলু)। তিনি বিশেষ ট্রেনিং প্রাপ্ত কলিকাতা, চক্ষু হাসপাতাল পাহাড়তলী, চট্রগ্রাম থেকে প্রশিক্ষন নিয়েছেন। রেজিঃ নং- ৩৬৮০৪, জি.আর.এম.পি রেজিঃ নং- ৩৪৬০(২৪৯)। অথচ তিনি নাক, কান-গলা, যৌন, চক্ষু, হাপানী চর্মরোর কঠিন ও জটিল রোগ সহ সকল রোগের চিকিৎসা দিচ্ছেন। এছাড়াও লিখছে প্রসূতি মায়ের চিকিৎসা ব্যবস্থাপত্র। যা সম্পুর্ণ বে-আইনি এবং দন্ডনীয় অপরাধ।
জানা যায়, পূর্ববর্তী সময়ে টঙ্গীবাড়ী উপজেলা প্রশাসন ভ্রাম্ম্যমান আদালতের মাধ্যমে হেদায়েতুল ইসলাম লাভলুকে ৬ মাসের কারাদন্ড দিয়েছিলেন। কারাদন্ড শেষ করে এসে পুনরায় চিকিৎসা দেয়া শুরু করাতে ২০২০ সালেও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন আইন ২০০৯ এর ৫২ ধারায় হেদায়েতুল ইসলাম লাভলু নামের এই ভুয়া ডাক্তারকে ত্রিশ হাজার টাকা জরিমানা করেছিল ভ্রাম্ম্যমান আদালত। এবং তাকে চেম্বার না করারও নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছিল। কিন্তু উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙুলি দেখিয়ে বালিগাঁও বাজারের কলমা রাস্তার মোড়ের পূর্বপাশে দোকান ভাড়া নিয়ে দেদারসে প্রেসক্রাইভ/স্লিপ করেই চলেছে এবং সাধারন মানুষের সাথে প্রতারণা করে আসছেন এই ভুয়া চিকিৎসক।
এ বিষয়ে সরেজমিনে গিয়ে ডাক্তার পরিচয়দানকারী হেদায়েতুল ইসলাম লাভলুকে ডাক্তার লেখার সমস্ত কাগজপত্র আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, হ্যা ডাক্তার লেখার কাগজপত্র আছে আমার। কিন্তু আমার কোনো কাগজপত্রেই এখন আর ডাক্তার লেখা নাই। আমি চিকিৎসক। আমার কোনো সমস্যা নাই ইনশাআল্লাহ্।
এ বিষয়ে টঙ্গীবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আসলাম হোসাইন বলেন, এ বিষয়ে দ্রুতই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আপনার মতামত লিখুন :