

এম এ মান্নান, মধ্যনগর, সুনামগঞ্জঃ সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলার জোর খলার গোদারাঘাট যাত্রীদের জন্য, বিনা ভাড়ায় নৌকা চালু করলেন মিজানুর রহমান মিনু। তিনি মধ্যনগর উপজেলার বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক ও বারবার সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, মরহুম আব্দুল লতিফ তালুকদার এর কনিষ্ঠ পুত্র। এবং বর্তমান উপজেলা বিএনপির ১ নং যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কাইয়ুম মজনু তালুকদার এর ছোট ভাই।
দির্ঘদিন পর অবশেষে মধ্যনগর উপজেলার ছাত্রদলের আহ্বায়ক মিজানুর রহমান মিনু’র উদ্যোগে উন্মুক্ত করা হয়েছে এই জোরখলা নামের খেয়াঘাটি। এতে পথযাত্রীদের মুখে আনন্দের হাসি, এবং প্রাণবন্ত স্বস্তি প্রকাশ করছেন এলাকাবাসী। দীর্ঘদিনের ভোগান্তি নিরসনে লক্ষ্যে,এই মানবিক উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি। তার নিজস্ব অর্থায়নে খেয়াঘাটটি উন্মুক্ত করে বিনামূল্যে নৌকা চালু করেছেন তিনি। ফলে বহুদিন ধরে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে পারাপারে বাধ্য হওয়া পথযাত্রীদের মুখে ফিরেছে স্বস্তি ও খুশির হাসি।
স্থানীয়সূত্রে জানাগেছে, মধ্যনগর উপজেলার সদর থেকে নেত্রকোনা জেলার কলমাকান্দা উপজেলার সাথে সড়কের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সংযোগস্থল। জোরখলার গোদারাঘাট নামের এই ঘাটটি শুষ্ক মৌসুমে কয়েক বছর ধরে ইজারা দিয়ে আসছিল মধ্যনগর সদর ইউনিয়ন পরিষদ।মৌসুমি ইজারাদাররা ওই সময় মোটরসাইকেল পারাপারে ২০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত ভাড়া আদায় করত। এতে প্রতিদিন শত শত মোটরসাইকেল,অটো ও সিএনজি চালক, কর্মজীবী মানুষ এবং ছাত্রছাত্রীদের ভোগান্তি পোহাতে হতো।
এই পরিস্থিতিতে ঘাটটি সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত করে নিজ খরচে নৌকা চালু করেন ছাত্রদল নেতা মিজানুর রহমান মিনু। তিনি বলেন,“ পথযাত্রীরা প্রতিদিন খেয়া পারাপারে যে টাকা ভাড়া দিতে হতো, এখন থেকে আর ভাড়া দিতে হবে না। মানুষের কষ্ট লাঘব করতেই এরকম উদ্যেগ নিয়েছি। যাত্রী পারাপার আরও সহজ করতে এক সপ্তাহের মধ্যেই বাঁশ ও কাঠ দিয়ে একটি অস্থায়ী সেতু নির্মাণ করা হবে। ভবিষ্যতে ব্রীজ স্থাপনা করে স্থায়ী সমাধানের পরিকল্পনার কথাও জানান তিনি।
স্থানীয় মোটরসাইকেল চালক মো.হারুন মিয়া সহ ভাড়ায় চালিত অটোরিকশা, সিএনজি ডাইবাররা বলেন,“আগে খেয়াঘাট পার হতে মোটরসাইকেল ৩০ টাকা অটোরিকশা, সিএনজি ৬০ টাকা দিতে হতো, এখন বিনা খরচে যাওয়া আসা করা যাবে। এতে মিনুর এই কাজ সত্যিই প্রশংসনীয়।”
গলহা গ্রামের বাসিন্দা ডালিয়া আক্তার বলেন,“আগে এই রাস্তা দিয়ে মোটরসাইকেলে যেতে-আসতে ৬০ টাকা খরচ হতো। এবছর এই ঘাটটি উন্মুক্ত করে ফ্রি পারাপারের ব্যবস্থা করে দেওয়ায় আমাদের অনেক উপকার হয়েছে।”
শিক্ষক অনুকূল দেবনাথ বলেন,এই ঘাটটি উন্মুক্ত করে দেওয়ায় শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসীর খুবই উপকার হয়েছে।এই এলাকার অনেক শিক্ষার্থী রয়েছে যারা প্রতিদিন ভাড়া দিয়ে স্কুলে যাওয়া-আসা করতো।অনেক সময় অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের ভাড়ার টাকা দিতে ব্যার্থ হলে সেদিন শিক্ষার্থী স্কুলে যাওয়া বন্ধ থাকত।ঘাটটি উন্মুক্ত করে দেওয়ায় শিক্ষার্থীসহ এই এলাকার যারা প্রতিদিনিই বাজারে যাওয়া-আসা করে তাদের জন্য খুবই উপকার হয়েছে।যিনি এই মহতী উদ্যেগ নিয়েছেন তাকে বিশেষ ধন্যবাদ জানাই।
এ বিষয়ে মধ্যনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উজ্জ্বল রায় বলেন,“স্থানীয়ভাবে জনগণের দুর্ভোগ লাঘবে সামাজিক দায়িত্ববোধ থেকে কেউ এমন উদ্যোগ নিলে তা অবশ্যই প্রশংসনীয়। তবে ঘাট ও সেতু সংক্রান্ত কাজগুলো নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন করা প্রয়োজন। প্রশাসন সবসময় স্থানীয়দের কল্যাণে কাজ করছে।”
আপনার মতামত লিখুন :