এম রাসেল সরকারঃ কোনো সাংবাদিক সংগঠনের নেতাকর্মীদের মতানৈক্য দেখা দিলে কিংবা যে কোনো বিষয় নিয়ে বিরোধ তৈরী হলে কয়েকজন মিলে আরেকটি নতুন সংগঠন তৈরী করে। নতুন তৈরী হওয়া সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে পূনরায় মতানৈক্য দেখা দিলে সেখান থেকে কয়েকজন চলে গিয়ে আবার নতুন আরেকটি সংগঠন তৈরী করে নেতা হয়ে যায়।
এরপর সদস্য আহবান করে জেলায় জেলায় কমিটি গঠন করে। বিনা পুঁজিতে এর চেয়ে ভাল ব্যবসা আর আছে?
বর্তমান প্রেক্ষাপটে পুঁজি খাটিয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তৈরী করে ব্যবসায় লাভ লোকশান হওয়ার নিশ্চয়তা অনিশ্চয়তার মধ্যে থেকে হিমশিম খাওয়ার চেয়ে, বিনা পুঁজিতে সাংবাদিকদের গাধা ও হালের বলদ বানানোর মাধ্যমে পয়সা উপার্জনের চেয়ে ভাল ব্যবসা আর নেই। ভূইঁফোড় সাংবাদিক সংগঠনের স্বঘোষিত বড় বড় পদবীধারী নেতারা এখন নিজেদের পেট ও পিঠ বাঁচাতে এই পথ বেছে নিয়েছে।অধিকাংশ সাংবাদিক সংগঠনের নেতারা সাংবাদিক সংগঠনকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে রুপান্তর করে প্রকৃতপক্ষে নিজেদের আখের গোছানোর ধান্ধা ফিকিরে ব্যস্ততম সময় পার করছেন কিন্তু সাংবাদিকদের ন্যায়সঙ্গত দাবীর বিষয়ে এখন আর তেমন মাথা ব্যথা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। যেখানে সুবিধা আছে সেখানে দৌড়াচ্ছেন।
জেলা উপজেলায় কমিটি গঠন ও সদস্য সংখ্যা বাড়াতে পারলেই সাংবাদিকদের মাথা বিক্রি করা যায়। নিজেকে বেশী পরিমানে জাহির করা যায়। ইনকামও ভাল হয়। সাংবাদিক সংগঠনের স্বঘোষিত বড় বড় পদবীধারী নেতারা যখন ব্যক্তিগত বিশেষ সুবিধা লাভের উদ্দেশ্যে দুর্নীতিবাজদের তৈলমর্দন করে এমতাবস্থায় কি পেশাদারিত্ব থাকে ? পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিকরা দুর্নীতিবাজদের দ্বারা হামলা, মামলা এবং নির্যাতনের শিকার হওয়ার এটাও একটা কারন। এখন পর্যন্ত কোনো সাংবাদিক সংগঠনকে সংবিধানের ৩৯(২) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সাংবাদিকদের জন্য চাকুরী, সুরক্ষা, স্বাধীন পেশাদারিত্ব ও স্বাধীন গণমাধ্যম কমিশন আইন পাশের দাবী উপস্থাপন করতে দেখলাম না। সংবিধানের ৩৯(২) অনুচ্ছেদে সংবাদক্ষেত্রের স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে।
অনেক বছর যাবৎ কিছু সাংবাদিক সংগঠন সাংবাদিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন সংগ্রাম করে আসছে। দাবীর লিস্টটাও কয়েক হাজার মাইলের হবে। হাজার মাইলের দাবীর তালিকা দরকার কি যেখানে একটি দাবী বাস্তবায়ন হলে সব সমস্যর সমাধান সম্ভব। সংবিধানের ৩৯(২) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সংবাদক্ষেত্রের স্বাধীনতার আলোকে সাংবাদিকদের জন্য চাকুরী, সুরক্ষা, স্বাধীন পেশাদারিত্ব ও স্বাধীন গণমাধ্যম কমিশন আইন পাশের দাবী উপস্থাপিত হলে সেটি যুক্তিযুক্ত হবে। সংবিধানের ৩৯(২) অনুচ্ছেদে সংবাদক্ষেত্রের স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে।
প্রতিবাদ করার সক্ষমতা বা সৎ সাহস থাকা সত্ত্বেও অন্যায় দেখেও পাশ কাটিয়ে চলে যাওয়া এবং নিরবতা পালন করা মানে আরও হাজারটা অপরাধের জন্ম দেওয়া। সমাজের দায়িত্বশীল সচেতন মানুষ এর দায় এড়াতে পারেন না। একটি দেশ বারবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী দায়ী নয়। সচেতন মানুষগুলোর শ্রবণ ও বাক-প্রতিবন্ধী মানসিকতাই দায়ী।
আপনার মতামত লিখুন :