এম শিমুল খানঃ সদ্য সমাপ্ত গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে গোপালগঞ্জে হচ্ছে টা কি? এ প্রশ্ন এখন সবার মুখে মুখে। পেপার-পত্রিকা, টেলিভিশন ও ফেসবুক খুললেই চোখের সামনে ভেসে উঠছে গোপালগঞ্জে আন্দোলন সংগ্রাম আর জ্বালাও পোড়াও। পাল্টা-পাল্টি ফেসবুকে পোস্ট দেখে বোঝা যায় দিন দিন আবহাওয়া আরো উতপ্ত হয়ে উঠছে। এটা স্বাধীন দেশে কারোই কাম্য নয়।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় একজন নিহতের ঘটনা ঘটে যা আসলে খুবই দুঃখ জনক ঘটনা। কি কারনে তাকে গুলি করে হত্যা করা হলো সে বিষয়টা অবশ্যই খুজে দেখতে হবে। সেই সাথে ঘটনার সাথে জড়িতদেরকে খুজে বের করে তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। সেই সাথে সকলকে ওই নিহতের পরিবারের পাশে দাঁড়াতে হবে। নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতার ঘটনা নতুন কিছু নয়। এ রকম ঘটনা অহরহ ঘটে থাকে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করার কোন কারন থাকতে পারে না।
গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়া ও টুঙ্গিপাড়ায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচন শেষ হয়েছে। কই সেখানে তো এমন কোন ঘটনা বা ছোট কোন ঘটনা ঘটার সংবাদ তো চোখে পড়েনি। তা হলে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কি এমন ঘটনা ঘটলো যে জ্বালাও পোড়াও বা আন্দোলন সংগ্রাম করতে হবে।
গোপালগঞ্জের এ সকল ঘটনা এখন সারা দেশে আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে পরিনত হয়েছে। দেশের সব জায়গায় চলছে আলোচনা-সমালোচনা। এতে করে লাভবান হচ্ছে কারা? কখনো কি ভেবে দেখেছেন বিষয়টা।
বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিজ জেলা গোপালগঞ্জের এমন ঘটনা আসলে লজ্জা জনক। সরকার বিরোধীরা কি এতে উস্কানি পাবে না। এ সব আন্দোলন-সংগ্রাম করে কি সরকার বিরোধীদের কে কি উস্কানি দেওয়া হচ্ছে না। সরকার বিরোধীরা বার বার বিভিন্ন নির্বাচন নিয়ে কথা বার্তা বলছে। তারপরও গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে এমন আন্দোলন সংগ্রাম করার ফলে সরকার বিরোধীদের আগুনে ঘি ঢালার মত নয় কি।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে গোপালগঞ্জ জেলা ও উপজেলা আওয়ামীলীগ আজ দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। খোদ গোপালগঞ্জে যদি এমন ঘটনা ঘটে তবে সারা দেশের অবস্থা কি হতে পারে তা একবার ভেবে দেখা উচিত।
সারা দেশে প্রচলিত আছে গোপালগঞ্জের মানুষ শান্তি প্রিয়। সেই শান্তির জায়গায় আজ অশান্তির আগুন জ্বলছে এর দ্বায়ভার কে নেবে। গোপালগঞ্জে যারা আন্দোলন সংগ্রামের নামে জ্বালাও পোড়াও করছে তাদের দ্বায়ভার কে নেবে। সব ঘটনার শেষ আছে, সব ঘটনার সমাধান আছে। তাই গোপালগঞ্জের নেতাদের একত্রে বসে এ সব ঘটনার সমাধান করা উচিত। আপনারা একত্রে বসে যদি এ সব ঘটনার সমাধান করতে না পারেন তবে স্থানীয় এমপি সাহেবের শরনাপন্ন হতে পারেন। তারপরও যদি সমাধানের কোন পথ খুজে না পান তা হলে সর্বোপরি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার শরণাপন্ন হতে পারেন।
সর্বোপরি কথা হলো সরকার বিরোধীদেরকে আন্দোলন সংগ্রামের রসদ না যুগিয়ে নিজেরা সমাধান করুন। তা না হলে এই ছোট খাটো আন্দোলন সংগ্রাম এক সময় সরকার বিরোধীদের রসদ হয়ে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়তে পারে। তখন কিন্তু দেখবেন আমও যাবে ছালাও যাবে। তখন আর কান্নাকাটি, চিৎকার চেচামেচি আর চোখের জল ফেলেও কোন লাভ হবে না।
লেখকঃ এম শিমুল খান সিনিয়র সাংবাদিক, ঢাকা।
আপনার মতামত লিখুন :