• ঢাকা
  • রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ১০:৩৪ অপরাহ্ন

ইরাক ফেরত জামালের আকুতি বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার হাত থেকে সাহায্যের প্রার্থনা


প্রকাশের সময় : ফেব্রুয়ারী ১৬, ২০২২, ৬:৪০ অপরাহ্ন / ১৭৬
ইরাক ফেরত জামালের আকুতি বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার হাত থেকে সাহায্যের প্রার্থনা

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ শেরপুর জেলার শ্রীবরদী থানার রানী শিমূল গ্রামের বাসিন্দ মৃত আব্দুল করিমের ছেলে জামাল । ১৯৮৮সালে সহায় সম্বল ও পৈত্রিক ভিটামাটি বিক্রি করে পারি জমায় ইরাকে। অনেক আশা আকাঙ্খা করে জীবনকে সুখে শান্তিতে ছেলে সন্তানদের কে নিয়ে ভাল ভাবে বাঁচার জন্য বিদেশ পারি জমান জামাল। ইরাকে গিয়ে কোরিয়ান কোম্পানিতে রাস্তার কাজ পান জামাল। ইরাকের কিরকুক শহরে ২বছর থাকলেও কোন টাকা পয়সা রোজগার করতে পারেনি। বিদেশে যাওয়ার সময় ঋণ করে যাওয়া সেই টাকা পরিশোধ এবং সেই সাথে নিজের পরিবারের ভরণ পোষণ করা খুবই কষ্ট সাধ্য হয়ে ছিল, তেমন টাকা উপার্জন করতে পারেনি। ইরাকের ভাষা ও কাজ শিখতে শিখতে সময় লেগে যাওয়ায় তার বেতন খুবই অল্প ছিল। সেই স্বল্প বেতনের টাকা বাড়ীতে পাঠালেও তা ছিল যত সামান্য। তাও মনের দূঃখ্য কষ্ট নিয়ে যদিও কাজ চালিয়ে যাচ্ছিল এদিকে শুরু হয়ে গেল যুদ্ধ। ১৯৯০ সালের কুয়েত ইরাক যুদ্ধে ইরাকে থাকার কোন উপায় ছিল না তার । তাই যুদ্ধের সময় সে দেশ থেকে পালিয়ে সিরিয়া হয়ে ইরানের তেহরান জেল হাজতে আটক থাকে। মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ করতে না পারলেও জামাল বঙ্গবন্ধু শেক মজিবুর রহমান কে মনে প্রাণে ভাল বাসতো। এই মহানয়ককে যারা হত্যা করে ছিল তাদের অনেকেই নাম জানতো এই জামাল । তাই বিদেশ থেকে ফেরত আসায় সেই বঙ্গবন্ধুর খুনিকে দেখে অবাক হয় জামাল। সে অনেককে বলেছে যে যুদ্ধের সময় বঙ্গবন্ধুর খুনি ইরানে বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত । সেই খুনিকে দেখে প্রবাসী জামাল হতবাগ হয়েছিলেন তিনি বলেন, আমি প্রবাসে এসেও বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শুনি আর আমি বঙ্গবন্ধুকে ভাল বাসী। আমি বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের আদর্শে নিবেদীত প্রাণ। আমি তারই প্রতিটি বাক্য ও তার বক্তব্যকে মনে করে পথচলি। সেই বঙ্গবন্ধুর স্বাধীন দেশে খুনিরা বিদেশে রাজত্ব করবে এটা আমার কাছে খুব খারাপ লাগছিল। যে রাষ্ট্র নায়কের হাত ধরে পরাধীন থেকে আজ আমরা স্বাধীন একটি দেশ পেয়েছি।যে দেশের পাসপোর্ট ধারণ করে আমরা বিদেশে পরিচয় দিয়েছি আমরা বাঙ্গালী। যে দেশটি বিশ্বের মানচিত্রে আজ বাংলাদেশ নামে পরিচিত সেই মহানায়কের খুনিকে আজ দেখতে হচ্ছে রাজকীয় হালে। আজ আমরা বঙ্গবন্ধুর স্বাধীন দেশের মানুষ হয়েও আমরা অবহেলিত । দেশের শত্রুরা এদেশের পরিচালক দেখে আমি হতভম্ব হয়ে ছিলাম।

এই প্রবাসী জামাল সর্বস্ব হারিয়ে বিদেশ থেকে জেল খেটে বাংলাদেশ আসলেও তার পাসপোর্টটি সে হারিয়ে ফেলে।যার জন্য ইরাক থেকে যুদ্ধের সময় সকল প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের সাহায্য পেলেও জামাল এই সাহায্য থেকে বঞ্চিত ছিল। কারণ কোন প্রকার প্রমান পত্র না থাকায় সে আর সাহায্য চেয়েও পায়নি।বিদেশ যাওয়ার সময় ঋণ করে যাওয়া সেই টাকা গুলো নিজের শেষ ভিটা টুকু বিক্রি করে দিয়ে এখন অন্যের জায়গায় ভাড়া থাকতে হচ্ছে।
প্রবাস ফেরত জামাল একদিন হঠাৎ প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার রাষ্ট্রীয় বাস ভবনে ঢুকে পরলেও প্রধান মন্ত্রী বিদেশ সফরে থাকায় তার এই পদক্ষেপটি বিফলে চলে যায়। তার পর আর কোন দিন প্রঢোগল ম্যানেজ করে প্রধান মন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করা সম্ভব হয়নি। প্রবাস ফেরৎ নিঃস্ব এই জামাল তার জীবনে প্রধান মন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন একটু বেঁচে থাকার জন্য। জামাল তার ভাষায় বলেন, লক্ষ লক্ষ গরীব মানুষকে ঘর বানিয়ে দিচ্ছে টাকা পয়সা দিয়ে ভাল ভাবে জীবন যাপনের ব্যবস্থা করতেছেন মহান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের লালিত দিকনির্দেশনার একমাত্র প্রতিক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে যদি কিছু পেতাম তাহলে জীবনে আর কোন কিছু যাওয়ার থাকতো না। আমার শেষ আশা টুকু যদি প্রধানমন্ত্রী পুরোন করতে তাহলে বঙ্গবন্ধুর কন্যার প্রতি চির কৃতজ্ঞ থাকবো।