• ঢাকা
  • সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ০৪:২৮ অপরাহ্ন

টাঙ্গাইলে গ্রাহকের সাড়ে ৩ কোটি টাকা নিয়ে উধাও এনজিও


প্রকাশের সময় : ফেব্রুয়ারী ১৭, ২০২৩, ৮:১৫ অপরাহ্ন / ৭০
টাঙ্গাইলে গ্রাহকের সাড়ে ৩ কোটি টাকা নিয়ে উধাও এনজিও

মোঃ রাসেল সরকার,টাঙ্গাইল থেকে ফিরেঃ কেউ বাড়ি বিক্রির টাকা, আবার কেউ প্রবাসী মৃত সন্তানের টাকা, দিন মজুরদের জমানো টাকাসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ একটু লাভের আশায় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় (এনজিও) টাকা রেখেছিলেন। কয়েক বছর লাভ পেলেও বছর দুয়েক আগে থেকে সেই লাভ দেওয়া বন্ধ করে কর্তৃপক্ষ। এমনকি গত ছয় মাস যাবত গ্রাহকদের প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়েছেন নির্বাহী পরিচালকসহ সংশ্লিষ্টরা। ফলে অনেক গ্রাহক এখন নিঃস্ব হয়ে গেছেন।

টাঙ্গাইল সদর উপজেলার গালা গ্রামের সোসাইটি ফর হিউম্যান ইউনিটি অ্যান্ড রিসোর্সেস ইউটিলাইজেশন (শুরু) নামের এনজিও কর্তৃপক্ষ এমন কাণ্ড ঘটিয়েছে। টাকা ফেরত পেতে জনপ্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্টদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন গ্রাহকরা। এনজিওর মালিক পলাতক থাকায় হতাশায় ভুগছেন গ্রাহকরা।

শুক্রবার সকালে টাকা ফেরত পেতে ওই এনজিও কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন গ্রাহকরা। মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য রাখেন ওই এনজিওর সদস্য তারেক হাসান, আলী আহম্মদ, জয়নু বেগম, অঞ্জনা বেগম প্রমুখ।

গ্রাহকরা জানান, ১২ বছর আগে গালা গ্রামের মাজেদুর রহমান, আবু সাইদ, আব্দুর রাজ্জাকসহ কয়েক জনে মিলে ‘শুরু’ নামের এনজিওটি প্রতিষ্ঠা প্রতিষ্ঠা করেন। সেখানে বাড়ি বিক্রির টাকা, গ্রামের মধ্যবিত্ত থেকে শুরু করে নিরীহ কৃষক ও দিনমজুরাও টাকা রাখেন। এমননি অনেক প্রবাসীরাও টাকা রেখেছেন। তিন শতাধিক গ্রাহকের প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা নিয়ে এনজিও নির্বাহী পরিচালক মাজেদুর রহমান উধাও হয়েছেন।

৮৫ বছরের বৃদ্ধ আলী আহম্মদ বলেন, আমার চার মেয়ে ও এক ছেলে। ১০ বছর আগে সৌদি আরবে থাকা অবস্থায় আমার ছেলে মারা যায়। সেখান থেকে পাওয়া দুই লাখ টাকা ‘শুরু’ এনজিওতে রেখেছিলাম। সেই দুই লাখ টাকা নিয়েও মালিক পালিয়েছে। আমি প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করি।

শারীরিক প্রতিবন্ধী শাহজাহান মিয়া বলেন, আমি স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারি না। তাই বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ভিক্ষা করে জীবনযাপন করি। সেই টাকা থেকে জমিয়ে এক লাখ টাকা ১২ বছর আগে জমা করেছিলাম। সেখান থেকে আমি কোনো লাভ নেয়নি। সেই টাকা নিয়েও মালিক পালিয়েছে। কোথায় গেলে, কার কাছে গেলে আমার টাকা ফেরত পাব আমি তাও জানি না।

৬০ বছরের বৃদ্ধা জয়নু বেগম বলেন, আমার বাড়ি বিক্রি করা চার লাখ টাকা এই এনজিওতে রেখেছিলাম। আমার টাকা নিয়ে মালিক পালিয়ে যাওয়ায় আমি এখন নিঃস্ব। হতাশায় ভুগছি।

অপর গ্রাহক তারেক হাসান, বাবলী তালুকদার, অঞ্জনা বেগম, মঞ্জু বেগম ও রহমান আলী বলেন, এই ‘শুরু’ এনজিওতে আমাদের গ্রামের তিন শতাধিক গ্রাহকের সাড়ে তিন কোটি টাকা জমা ছিল। সেই টাকা নিয়ে মালিক পালিয়েছেন। আমাদের টাকা ফেরত চাই।

এ বিষয়ে শুরু এনজিওর নির্বাহী পরিচালক মাজেদুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. শাহ আলম বলেন, কয়েক প্রতারক চক্র মিলে এনজিওটি করেছিল। আমরা তাদের কোনো অনুমতি দেইনি। তবে আমরা ওই কমিটি বাতিলের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে সুপারিশ করতে পারব।