• ঢাকা
  • শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ০৩:৫৪ অপরাহ্ন

আমি টাকা আত্মসাৎ করেছি, পারলে কেউ কিছু করুক!


প্রকাশের সময় : জানুয়ারী ১০, ২০২৩, ১০:১২ অপরাহ্ন / ৯৬
আমি টাকা আত্মসাৎ করেছি, পারলে কেউ কিছু করুক!

এম রাসেল সরকারঃ টাকা আত্মসাৎ করেছি, পারলে কেউ কিছু করুক এই উক্তি বরগুনার আমতলী উপজেলা খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবিরের। শ্রমিকদের মজুরির ২৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্ন শুনে খেপে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন।

শ্রমিকদের অভিযোগ, খাদ্যগুদামে পাঁচ বছরে অন্তত ১০ হাজার মেট্রিক টন ধান-চাল গুদামজাত করা হয়েছে। গুদামজাত করতে সরকার টনপ্রতি ১০০ টাকা বরাদ্দ দেয়। কিন্তু ওই টাকা খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হুমায়ুর কবির ও শ্রমিক সর্দার আত্মসাৎ করেছেন।

তাঁরা বলছেন, চালকলের মালিকদের কাছ থেকে টনপ্রতি ৩০০ টাকা আদায় করে তা থেকে শ্রমিকদের ১৫০ টাকা দিয়ে বাকিটা খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও শ্রমিক সর্দার আত্মসাৎ করেছেন। এতে পাঁচ বছরে অন্তত ২৫ লাখ টাকা তাঁরা আত্মসাৎ করেছেন।

এদিকে টাকা চেয়েও না পেয়ে শ্রমিকেরা গত ১৯ ডিসেম্বর আমতলী পৌরসভার মেয়র মতিয়ার রহমানের কাছে অভিযোগ দেন। মেয়র খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে শ্রমিকদের টাকা পরিশোধের নির্দেশ দেন। কিন্তু এখনো শ্রমিকেরা টাকা পাননি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন মিলার বলেন, ‘খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গুদামজাত করতে আমাদের কাছ থেকে টনপ্রতি শ্রমিকের মজুরি বাবদ ৩০০ টাকা নিচ্ছেন। এ টাকা নেওয়ার কথা না। গুদামজাতের খরচ বাবদ সরকার টনপ্রতি ১০০ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে।’

খাদ্যগুদামের শ্রমিক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, পাঁচ বছরে খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির ও সর্দার নিজাম উদ্দিন চাল গুদামজাতের সরকারি বরাদ্দ টনপ্রতি ১০০ টাকা তো শ্রমিকদের দেনইনি আরও মিলারদের কাছ থেকে টনপ্রতি ৩০০ টাকা নিচ্ছেন।

খাদ্যগুদামের আরেক শ্রমিক খোকন হাওলাদার বলেন, গুদামজাতের জন্য সরকারি বরাদ্দের টাকা তো দেনই না, উল্টো চালকলের মালিকদের কাছ থেকে টনপ্রতি নেওয়া টাকার অর্ধেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও শ্রমিক সর্দার আত্মসাৎ করেছেন।

তবে টাকা আত্মসাতের বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির খেপে গিয়ে বলেন, ‘টাকা আত্মসাৎ করেছি, পারলে কেউ কিছু করুক।’

উপজেলা খাদ্যগুদামের শ্রমিক সর্দার নিজাম উদ্দিন টাকা আত্মসাতের বিষয়টি স্বীকার না করলেও বলেন, ‘এ বিষয়ের কিছুটা সমাধান হয়েছে।’

আমতলী পৌরসভার মেয়র মতিয়ার রহমান বলেন, ‘শ্রমিকদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অভিযোগ ওঠা ব্যক্তিদের ডাকা হয়। ঘটনার সত্যতা পেয়েছি।’

বরগুনা জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ বাবুল হোসেন বলেন, ‘অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।