নিজস্ব প্রতিবেদক,লালমনিরহাটঃ লালমনিরহাটের বুড়িমারী স্থলবন্দরের লোড-আনলোডের কাজে নিয়োজিত শ্রমিকদের মজুরি প্রদানে অনিয়ম ও দূর্নীতির কারণে কাজ বন্ধ করে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ সমাবেশ করে শ্রমিকরা। এতে প্রায় ৪ ঘন্টা অচল হয়ে পরে স্থলবন্দরের সকল কার্যক্রম।

শনিবার (৪ জানুয়ারি) বুড়িমারী স্থলবন্দরের শ্রমিক অফিসের সামনে সকাল থেকে এ আন্দোলন শুরু হয়ে ৪ ঘন্টাব্যাপী এই অবরোধে শ্রমিকরা অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘদিনেও নিয়মানুযায়ী মজুরি না পাওয়া এবং একাধিকবার আলোচনা করে সমাধান না পেয়ে তাদের ন্যায্য দাবি আদায়ের লক্ষ্যে এই আন্দোলনের পথ বেছে নিয়েছেন। তাৎক্ষণিক কর্তৃপক্ষের নিকট ৭ দফা দাবিও তুলে ধরে আন্দোলনরত শ্রমিকরা।

ন্যায্য পাওনা আদায়ের লক্ষ্যে ৭ দফা দাবি নিয়ে সকাল থেকে ধর্মঘট ও সড়ক অবরোধের কারণে স্থবির হয়ে পরে স্থলবন্দরের কার্যক্রম।বিষয়টি আলোচনা করে সমাধান করা হবে এমন আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত রেখে পূণরায় কাজে ফিরে শ্রমিকরা। তবে ন্যায্য দাবি পূরণ না হলে পূণরায় বৃহৎ আন্দোলন করা হবে বলে হুশিয়ারি দেন শ্রমিকরা।

এতে বুড়িমারি স্থলবন্দর মহাসড়কে প্রায় ৪ ঘন্টা চড়ম ভোগান্তির সৃষ্টি হয় । শ্রমিকরা জানান, নিয়ম অনুযায়ী মজুরী প্রদান না করার পাশাপাশি ২০১০ থেকে ডাম্পার গাড়ির লোড আনলোড ও ছুটির দিনে বাংলা গাড়ি লোড-আনলোডে টাকার হিসাব পদ্ধতি কিভাবে করা হয়েছে তা শ্রমিকরা জানেন না।এছাড়া পেলুডার মালিককে দেওয়া ২০০ টাকার পর টাকার হদিস মিলেনি দীর্ঘদিনেও। আন্দোলনে অংশ নেওয়া শ্রমিক সাইফুল আলম জানান, পণ্য লোড-আনলোডে প্রতি টনে ১ টাকা করে সংগঠনের শ্রমিকদের চিকিৎসা বাবদ রাখা হলেও এ পর্যন্ত কোন শ্রমিক এই সুবিধা গ্রহণ করতে পারেনি।

শ্রমিক আনোয়ার হোসেন বলেন, প্রতি তিনবছর পরপর সংগঠনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার নিয়ম থাকলেও ২০০৯ সালের পরে আর কোনো নির্বাচন হয়নি। ফলে দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে দূর্ণীতি করে কেউ কেউ আঙ্গুল ফুলে কলা গাছে পরিণত হয়েছে। শ্রমিক রফিকুল ইসলাম বলেন, কোন সর্দারের বয়স বেশি হলে বা কেউ মৃত্যুবরণ করলে তার পরিবর্তে সর্দারে সন্তানকেই সর্দার নিয়োগ দেওয়া হয় যা নিয়ম বহির্ভূত । আন্দোলনরত সকলের দাবি দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতি বিবেচনা করে নতুন বছরে প্রতি টনের দাম বৃদ্ধি করে শ্রমিকদের নতুন মজুরী প্রদানের জন্য।

শ্রমিক নেতারা দূর্নীতি করেনা দাবি করে বুড়িমারী স্থলবন্দর শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি সফর উদ্দিন জানান, ২০১০ সাল থেকে ডাম্পার গাড়ি থেকে প্রাপ্ত টাকার হিসাব চেয়েছেন শ্রমিকরা।বর্তমানে ডাম্পার গাড়ির সংখ্যা কমে গেছে। তাছাড়া শ্রমিকদের নিকট টাকা না নিয়ে জমানো টাকা দিয়ে সংগঠনের নামে ১৩শতক জমি ক্রয় করা হয়েছে।আরো জমি ক্রয় করা হবে।কয়েকজম শ্রমিক আছে যারা স্থায়ী নয় তারা সংগঠনের স্থায়ী সম্পদ করায় পক্ষে নয়।শ্রমিকদের দাবি অনুয়ায়ী মজুরী বৃদ্ধিসহ প্রয়োজনীয় বিষয়ে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধান করা হবে।

এদিকে সিএনএফ এজেন্ট ও বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান তাহাজুল ইসলাম মিঠু বলেন, কয়েক হাজার শ্রমিক কাজ বন্ধ রেখে তাদের ন্যায্য দাবি আদায়ের জন্য আন্দোলন শুরু করছিলো। আমি ব্যাক্তিগতভাবে শ্রমিকদের সাথে কথা বলেছি।সন্ধ্যায় শ্রমিকদের বিভিন্ন গ্রুপের নেতা ও অন্যান্যদের সাথে কথা বলে সৃষ্ট সমস্যা সমাধানের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে মর্মে সমাধানের আশ্বাসে শ্রমিকরা পূণরায় নিজ নিজ কাজে ফিরেছেন।এখন বন্দরের কার্যক্রম স্বাভাবিক আছে বলে তিনি জানান।