• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:৪৫ পূর্বাহ্ন

রাজধানীতে অবৈধ ক্লিনিক ব্যবসা জমজমাট-দেখার যেন কেউ নেই


প্রকাশের সময় : মে ১৪, ২০২২, ১১:৫১ পূর্বাহ্ন / ৩৪১
রাজধানীতে অবৈধ ক্লিনিক ব্যবসা জমজমাট-দেখার যেন কেউ নেই

মোঃ রাসেল সরকারঃ স্বাস্থ্যের কাজ করতে গিয়ে বাংলাদেশের অনেক জেলায় ঘুরেছি। কিন্তু ঢাকা রাজধানীতে কিছু অবৈধ ক্লিনিক ব্যবসা জমজমাট দেখে আমি হতবাক হয়ে গিয়েছি।

রাজধানীর মুগদা, যাত্রাবাড়ী,শনিআখরা, জুরাইন, শ্যামপুর, খিলগাঁও, সবুজবাগ, শাজাহানপুর, ধানমন্ডি, মিরপুর, চাঙ্খারপুলসহ রাস্তার দু,পাশে দেয়ালে একটি সুই ফেলানোর জায়গা নেই ডাক্তারদের বিজ্ঞাপনের জন্য। বড়শিতে আধার দিলে মাছ যেমন দৌড়ে আসে। তেমনি ডাক্তারদের বিজ্ঞাপন দেখে রোগী তেমন করে দৌড়ায়। এতো গেল বিজ্ঞাপন এর একটা চিত্র।

যেটা সব চেয়ে ভয়াবহ তা হলো একজন সরকারি হাসপাতালে আয়ার চাকরি করে কেমন করে ডেলীভারী করান তা ভাবতে অবাক লাগছে। ভাবতে অবাক লাগলেও কথাটা একেবারেই সত্যি। দু’বছর আগে একবার সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে গিয়েছিলাম। আমার এক নিকট আত্মীয় ভর্তি ছিল তাকে দেখতে। সেখানে গিয়েও আমি হতবাক হয়ে গিয়ে ছিলাম একটি মেয়ের কথা শুনে।

সে বলছিল আমি এখানে চাকরি করি না। জিজ্ঞেস করলাম তা হলে এখানে কি করছেন? সে বললো আমি এখানে কাজ করছি যাতে আমি নার্সের কাজ শিখতে পারি। পরে একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে কাজ করবো। তার কথা শুনে আতকে উঠেছিলাম। কোন প্রশিক্ষণ ছাড়াই সে ক্লিনিকে কাজ করবে? তখন আমি চিন্তা করলাম ওর হাতে না জানি কত মানুষের মৃত্যু হয়। একটি সরকারি হাসপাতাল এখানে কি করে সে আছে। এগুলি দেখার কি কেউ নেই।

কেউ যদি তাকে এখানে ঢোকার সুযোগ করে না দেয় তা হলে সে কি করে এখানে আছে। কথায় বলে জোর যার মুল্লুক তার। নিশ্চয়ই তার পেছনে একটি শক্তি আছে যার জোরে সে এখানে আছে। এটা আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার জন্য ভয়াবহ একটি ব্যাপার। যাক সে কথা, এবার আসি ঢাকা দক্ষিণ সিটি মুগদা, যাত্রাবাড়ী, শনিআখরা, জুরাইন, শ্যামপুর, সায়দাবাদের কথায়।

মুগদায় বিলকিস বেগমের সাথে কথা বলে জানতে পারলাম সেখানকার এক আয়ার অপকর্মের কথা। সেখানেও একই অবস্থা।
(ছদ্মনাম) রেহানা নামে এক আয়া একটি সরকারি হাসপাতালে কাজ করতো। বর্তমানে সে রাজধানীর একটি সরকারি হাসপাতালের পাশেই এক ক্ষমতাসীন নেতার ইন্দনে ব্যবসার ফাঁদ পেতে বসে।
সেখানে নরমাল ডেলীভারী করে থাকেন। বিনা পয়সায় নয় রোগীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেয় হাজার হাজার টাকা। হাসপাতালে যখন রোগী যায় তখন তাদের বলেন আমার স্থানে আসেন নরমাল ডেলীভারী করি সরকারি হাসপাতালে দরকার কি?

ক্লিনিক ব্যবসার যে কি অবস্থা তা আরো বেশী করে জানতে পারলাম একজন ওষুধ কোম্পানির এজিএম এর সাথে আলাপ করে। কথা প্রসঙ্গে এক পর্যায়ে বললেন বাংলাদেশে এখন বড় ব্যবসা হচ্ছে শিক্ষাখাত এবং স্বাস্থ্য খাত। এই দুটি খাতে কোন নিয়ন্ত্রণ নেই।

তিনি জানালেন,আমি ঢাকায় কাজ করি। অনেক জায়গায় যাই। তাদের অপকর্ম দেখি প্রতিবাদ করার কিছুই থাকে না। কিন্তু কি বলবো ডাক্তারদের কথা এমন কিছু ডাক্তার রয়েছে যারা পারলে জীবন্ত মানুষকে কেটে ছিড়ে হলেও টাকা আদায় করবে এই হচ্ছে তাদের নীতি। এইগুলি দেখে খুব খারাপ লাগে। বাচ্চা নরমাল হয়ে যাচ্ছে জোর করে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে সিজার করে টাকা আদায় করছে।

রাজধানীর মুগদা, যাত্রাবাড়ী,শনিআখরা, জুরাইন, শ্যামপুর, খিলগাঁও, সবুজবাগ, শাজাহানপুর, ধানমন্ডি, মিরপুর, চাঙ্খারপুলসহ এখানে একই বিল্ডিংয়ে দুটি ক্লিনিকও রয়েছে। ১০/১২ হাত দুরে দুরে একটি করে ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার আছে।
এখানে ক্লিনিক ব্যবসা জমজমাট। অপ্রয়োজনীয় পরীক্ষা দিয়ে রোগীদের কাছ থেকে যে ভাবে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে তা দেখার কেউ নেই। চলমান.!