নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাঃ রাজধানীর শাহবাগের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (ঢামেকে) দালাল বিরোধী অভিযান চালিয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-৩।
র্যাব বলছে, দালাল চক্রটি ঢামেকের আশপাশে থাকা ভাসমান ভবঘুরে দের রক্ত নিয়ে উচ্চ দামে রোগীদের কাছে বিক্রি করে আসছে। অভিযানে ৫৮ জন দালাল চক্রের সদস্যকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয় র্যাবের ভ্রাম্যমান আদালত।
সোমবার( ৪ মার্চ) সকালে র্যাব-৩ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদের নেতৃত্ব এ অভিযান পরিচালিত হয়। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত অভিযান চলমান রয়েছে।
অভিযান চলমান অবস্থায় অধিনায়ক আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে দালাল চক্রের ক্ষপ্পড়ে পড়ে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর স্বজনরা নানা বিড়ম্বনার শিকার হয়েছে। দালাল চক্রের কথামত বাধ্য হয়ে তারা তাদের রোগীদের বিভিন্ন প্রাইভেট হাসাপাতাল বা ক্লিনিকে ভর্তি করিয়ে তাদের সর্বস্ব খুইয়েছেন। র্যাবের ডিজি ও স্ব্যাস্থমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক আমরা অনেকদিন ধরেই এটি নিয়ে কাজ করছিলাম।
তিনি বলেন, দালাল চক্রের সদস্যরা হাসপাতালে আসা রোগীদের জিম্মি করে একটি সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন। আমরা গত এক মাস ধরে সাদা পোশাকে এখানে কাজ করেছি। আমরা যাদেরকে আজকে ধরেছি তাদের ভিডিও ফুটেজ এবং কল রেকর্ড আমাদের কাছে রয়েছে। আজকের অভিযানে জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) আমাদের তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছে।
তিনি আরও বলেন, হাসপাতালে আসা রোগীদের প্রতি ধাপে ধাপে টাকা দিতে হয়। তারা দীর্ঘদিন ধরে এখনে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে তাদের জিম্মি করে তাদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা দিতে বাধ্য করেছে।
আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা একজন ব্লাড ব্যাংক কেন্দ্রীক দালালকে ধরেছি। তার কাছ থেকে আমরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ভয়ংকর কিছু তথ্য পেয়েছি। তারা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আশেপাশের যারা ভবঘুরে থাকে, তাদের রাতের অন্ধকারে এখানে নিয়ে এসে কোনো রকম পরীক্ষা নিরিক্ষা ছাড়াই রক্ত নিয়ে নেয় এবং সেগুলো মাছ বহন করার কার্টুনে সংরক্ষণ করে পরবর্তীতে উচ্চ দামে সেগুলো হাসপাতালে আসা রোগীর স্বজনদের কাছে বিক্রি করে।
অধিনায়ক আরও জানান, আজকের অভিযান একটি চলমান প্রক্রিয়া। এটা আজকেই শেষ নয়। এটি ধারাবাহিক ভাবে প্রতিটি সরকারি হাসপাতাল গুলোতে চলতে থাকবে। দালালদের দৌরাত্ম নির্মূলে যা যা করনীয় র্যাব তাই করবে। আমাদের সঙ্গে ম্যাজিস্ট্রেট রয়েছেন, আইন মোতাবেক আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
এসব দালাল চক্রের সংঙ্গে হাসপাতালের কেউ জড়িত কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে র্যাব-৩ অধিনায়ক বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত হাসপাতালের কিছু চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারীর নাম এবং তথ্য প্রমান পেয়েছি। সেগুলো আমরা হাসপাতাল প্রশাসন কে অবহিত করেছি। আশা করছি তাদের আইন মোতাবেক তারা ব্যবস্থা নিবেন।
এখন পর্যন্ত মোট কতজন দালাল চক্রের সদস্যদের সম্পর্কে আপনাদের কাছে তথ্য আছে এমন প্রশ্নের জবাবে অধিনায়ক বলেন, এখন পর্যন্ত দেড়শো থেকে দুইশ জনের তথ্য আমাদের কাছে আছে। আমরা ধারাবাহিক অভিযানে তাদের গ্রেফতার করব।