• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৭:১২ পূর্বাহ্ন

বার বার মৃত্যুর মুখ থেকে বেঁচে যাওয়া একজন কিংবদন্তি রাজনীতিবিদ শেখ ফজলুল করিম সেলিম


প্রকাশের সময় : অগাস্ট ২৮, ২০২১, ১২:২২ পূর্বাহ্ন / ৩৮৪
বার বার মৃত্যুর মুখ থেকে বেঁচে যাওয়া একজন কিংবদন্তি রাজনীতিবিদ শেখ ফজলুল করিম সেলিম

ইলিয়াস হকঃ ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগষ্টের নির্মম ষড়যন্ত্রের হত্যাকান্ডের দিন একই বাসায় বসবাস করতেন ভাই শেখ ফজলুল হক মনি, শেখ মারুফ ও শেখ ফজলুল করিম সেলিম। ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে নারকীয় তাণ্ডব করার একই সময়ে ১৩ নম্বর সড়কস্থ ধানমন্ডির আরেকটি বাড়িতে চলে একই ভাবে নারকীয় তান্ডব । যেখানে বসবাস করতেন জাতির জনকের বোন ও তার সন্তানরা। সেই বাড়িতে সেদিনও ছিলো বঙ্গবন্ধুর আদরের ভাগ্নেরা।

সেদিন ঘাতকরা শেখ ফজলুল হক মনিকে হত্যা করতে সেই বাড়িতে আসে। সামরিক বাহিনীর লোকেরা বাড়ির ভিতর প্রবেশ করার পর বাড়ির সকলে ঘুম থেকে জেগে যায়। একে একে সকলে ছুটে আসেন বড় ভাই শেখ মনির কাছে। সকলেই অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে থাকে। কি হতে যাচ্ছে কেউ বুঝে উঠার আগেই ব্রাশসফায়ারে গুলির আঘাতে ক্ষত বিক্ষত হলো শেখ ফজলুল হক মনি ও তার অন্তঃসত্তা স্ত্রী। পাশেই শেখ ফজলুল করিম সেলিম মাটিতে লুটিয়ে পড়লো। ঘাতকরা হয়তো ভেবেছিল সকলেই শেষ। কিন্তু সৌভাগ্যক্রমে শেখ ফজলুল করিম সেলিম সেদিন প্রানে বেঁচে যান। ১৯৭৫ সালের এই বেদনা নিয়ে শেখ সেলিম ও তার পরিবার শেখ মনির বেঁচে যাওয়া সন্তানদের নিয়ে বাঁচার লড়াইয়ে প্রতিনিয়ত লড়তে থাকে। এরপর ঘটনাবহুল জীবন।

প্রতিনিয়ত বদলে যেতে থাকলো বাংলাদেশের ইতিহাস। বঙ্গবন্ধু বিহীন বাংলাদেশ। শেখ মনি নাই, যুব সমাজের যিনি ছিলেন প্রেরনা উৎস। শেখ সেলিমের সেই দিনগুলো ছিলো প্রতিনিয়ত লড়াই সংগ্রামের ইতিহাস। তিনি গোপনে শেখ মনির যুবসমাজের লোকদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে লাগলেন। এবং একটি সময়ে তিনি সকলকে সংঘবদ্ধ করতে সক্ষম হলেন।

তারপর ৮১ সালের ইতিহাস । শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনা। আওয়ামী লীগ সংগঠিত করা। শেখ হাসিনার পাশে থেকে তাকে শক্তি সাহস দিয়ে দলের হাল শক্ত মজবুত করতে রাত দিন অবিরাম ছুটে চলা একজন মানুষ আওয়ামী লীগের জন্য নিবেদিত কিংবদন্তি রাজনীতিবিদ শেখ সেলিম।

৮০ দশকে গোপালগঞ্জে একটি উপ নির্বাচনের মাধ্যমে তার যাত্রা শুরু গোপালগঞ্জের মানুষের সাথে তার পথচলা। এখানেও তাকে পদে পদে বাধা বিপত্তিতে পড়তে হয়েছে। নিজের জীবনের উপড় হয়েছে প্রতিনিয়ত বিপত্তি বাধা৷ গোপালগঞ্জ জেলার রামদিয়ায় হয়েছে তার উপর গুলি বর্ষন। আল্লাহর অশেষ রহমতে তিনি প্রানে বেঁচে যান৷
চলার পথে তার উপর শিবচরে গুলিবর্ষণ হয়েছে। সেখানেও তিনি প্রানে বেঁচে যান। সর্বশেষ ২১ আগষ্টের ভযাবহ গ্রেনেড হামলার সময় তিনি একই ট্রাকে শেখ হাসিনার পাশেই ছিলেন। শেখ হাসিনাকে আগলে রেখেছিলেন একজন বড় ভাই যেমন তার বোনকে বাচাতে নিজে ঢাল হয়ে। আল্লাহর কৃপায় সেদিনও তারা প্রানে বেঁচে যান।

বার বার মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে যাওয়া এই মানুষটি একজন কিংবদন্তি রাজনীতিবিদ। গোপালগঞ্জ থেকে ৮ বার নির্বাচিত সংসদ সদস্যা। মাটি ও মানুষের নেতা। ১৯৭৫ সালের পর থেকে অবহেলিত গোপালগঞ্জকে বদলে দেওয়া একজন মানুষ। গোপালগঞ্জের রাজনীতি এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দুর্দিনের রাজনীতির একজন কিংবদন্তি মানুষ হয়ে তার ইতিহাস চিরকাল কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবে এটা আমার বিশ্বাস।

(লেখকঃ ইলিয়াস হক দপ্তর সম্পাদক, জেলা আওয়ামী লীগ, গোপালগঞ্জ।)