• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১:০৫ অপরাহ্ন

প্রেমের প্রস্তাবে সাড়া না দেয়ায় কিশোরীকে ধর্ষন পূর্বক হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করলো পিবিআই গাজীপুর


প্রকাশের সময় : জুলাই ১৪, ২০২১, ৬:২৫ অপরাহ্ন / ২১৩
প্রেমের প্রস্তাবে সাড়া না দেয়ায় কিশোরীকে ধর্ষন পূর্বক হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করলো পিবিআই গাজীপুর

মনিরুজ্জামান অপূর্ব/বেলাল দেওয়ান,ঢাকা : গাজীপুর মহানগর কাশিমপুর থানাধীন বারেন্ডা এলাকার বহুল আলোচিত কিশোরী সুমাইয়া খাতুন (১২) হত্যা মামলার রহস্য ০৮ মাস ১৩ দিন পর উদঘাটিত হয়।

মামলা ঘটনার জড়িত আসামী ১। মোঃ সাঈদ ইসলাম (১৯), পিতা-রেজাউল ইসলাম, মাতা-মোছাঃ শাহিদা বেগম, নানা-মৃত নবির উদ্দিন, সাং-চিলাহাটী মাষ্টার পাড়া, থানা-ডোমার, জেলা-নিলফামারী এ/পি-কবিরের বাড়ীর ভাড়াটিয়া, সাং- গাজীপুরা সাতাইশ নয়াবাড়ী, থানা- টঙ্গী পশ্চিম, জিএমপিকে টঙ্গী পশ্চিম থানাধীন গাজীপুরা এলাকা হতে ইং ১২/০৭/২০২১ তারিখ ভোর ০৫.১৫ ঘটিকায় এবং আসামী ২। মোঃ রনি মিয়া (২১), পিতা-মোঃ শফিকুল ইসলাম, মাতা-মোছাঃ নাসরিন বেগম, সাং-তিস্তা চৌরাটারী, থানা-লালমনিরহাট, জেলা-লালমনিরহাট, এ/পি- মামা মৃত আশরাফুল, সাং-রেলস্টেশনের পাশে মোহরীপাড়া, থানা-গাইবান্ধা সদর, জেলা-গাইবান্ধাকে গাইবান্ধা সদর থানাধীন রেল ষ্টেশনের পাশর্^ হতে ইং ১৩/০৭/২০২১ তারিখ রাত ০১.৩০ ঘটিকার সময় অভিযান পরিচালনা করে গ্রেফতার করা হয়েছে।

অত্র মামলার ভিকটিম সুমাইয়া খাতুন (১২), পিতা-সোহেল রানা, মাতা-মোসাঃ রুনা বেগম, সাং-বাউলিয়া, থানা-বাঘাপাড়া, জেলা-যশোর, এ/পি সাং-বারেন্ডা পশ্চিমপাড়া (নুরুল ইসলামের বাড়ীর ভাড়াটিয়া) থানা-কাশিমপুর, গাজীপুর মহানগর ইং ৩১/১০/২০২০ তারিখ সকাল অনুমান ০৭.৩০ ঘটিকা হতে বেলা অনুমান ১২.০০ ঘটিকার মধ্যে যে কোন সময় ভিকটিম তার বসত রুমের সিলিং ফ্যানের সাথে গলায় ওড়না দিয়ে ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেছে। এ ঘটনায় কাশিমপুর থানায় অপমৃত্যু মামলা নং-৩৯/২০, তারিখ-৩১/১০/২০২০ ইং রুজু হয় এবং সুরতহাল শেষে লাশ মর্গে প্রেরন করা হয়। পরবর্তীতে ময়না তদন্ত রিপোর্টে ভিকটিম সুমাইয়া খাতুনকে শ^াসরোধে হত্যা করা হয়েছে মর্মে প্রতিবেদন পাওয়ার পর অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে কাশিমপুর থানার মামলা নং ০৪ তারিখ ০৩/০৭/২০২১ ইং, ধারা- ৩০২/৩৪ পেনাল কোড একটি নিয়মিত হত্যা মামলা রুজু হয়।

কাশিমপুর থানা অপমৃত্যু মামলাটি দীর্ঘ ০৮ মাস ১১ দিন এবং পরবর্তীতে হত্যা মামলা দায়ের হলে ইং ১১/০৭/২০২১ তারিখ পর্যন্ত তদন্ত করে। কাশিমপুর থানায় তদন্তাধীন থাকাকালে পিবিআই হেডকোয়ার্টার্স ঢাকার নির্দেশে পিবিআই গাজীপুর জেলা মামলাটি অধিগ্রহন করে।

ডিআইজি পিবিআই জনাব বনজ কুমার মজুমদার, বিপিএম (বার), পিপিএম এর সঠিক তত্ত্বাবধান ও দিক নির্দেশনায় পিবিআই গাজীপুর ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার, জনাব মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান এর সার্বিক সহযোগিতায় মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক জনাব মোঃ কাওছার উদ্দিন গত ১১/০৭/২০২১ তারিখ হতে মামলাটি তদন্ত শুরু করেন।

আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, আসামী রনি ও ভিকটিম সুমাইয়া খাতুন একই বাসার পাশাপাশি রুমে ভাড়া থাকত। আসামী রনির বন্ধু মিলন, হাসান ও সাঈদ আসামী রনিদের পাশের বাড়ীতে ভাড়া থাকত এবং সে সুবাধে আসামী রনিদের বাসায় মিলন, হাসান ও সাঈদ তিন বেলা টাকার বিনিময়ে খাওয়া দাওয়া করত। আসামী রনির বন্ধু মিলনের সাথে ভিকটিম সুমাইয়ার প্রেমের সর্ম্পক ছিল। আসামী রনি ভিকটিমদের পাশের রুমে ভাড়া থাকার প্রেক্ষিতে ভিকটিমকে বিভিন্ন সময় প্রেমের প্রস্তাব দিত এবং উত্ত্যক্ত করার চেষ্টা করত। রনির বন্ধু সাঈদও ভিকটিমকে পছন্দ করত। এর পরিপ্রেক্ষিতে ভিকটিমের মা উল্লেখিত বাসা ছেড়ে অন্যত্র চলে যাওয়ার মনঃস্থির করে এবং নভেম্বর/২০ মাসে বাসাটি ছেড়ে দেয়। আসামী রনি বিষয়টি বুঝতে পেরে ২০২০ সালের অক্টোবর মাসের ৩১ তারিখ সময় সকাল ০৯.০০ ঘটিকার পর সকলে যখন কর্মস্থলে যায় তখন আসামী রনির বন্ধু সাঈদ রনির বাসায় সকালের খাবার খেতে আসালে আসামী রনি ও সাঈদ সলাপরামর্শ করে ভিকটিমের সাথে দৈহিক মেলামেশা করার সিন্ধান্ত নেয়। আসামী রনি খেলার ছলে ভিকটিমকে কোলে করে ভিকটিমের বসতঘরের বিছানায় শুইয়ে তার পড়নের কাপড় খোলার চেষ্টা করলে ভিকটিম বাঁধা দেয়। তখন আসামী সাঈদ ভিকটিমের পা ধরে রাখে ও আসামী রনি ভিকটিমের দুই হাত বেঁধে ভিকটিমের মুখে বালিশ চাপা দেয়। প্রথমে আসামী রনি ভিকটিমকে ধর্ষন করে ও আসামী সাঈদ তার মোবাইলে আসামী রনির ধর্ষণের ঘটনা ভিডিও করে। অতঃপর আসামী সাঈদ ভিকটিমকে ধর্ষণ করে। ধর্ষনের ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার ভয়ে আসামীদ্বয় ভিকটিমকে শ^াসরোধ করে হত্যা করে।

”মামলার ঘটনার পর পিবিআই গাজীপুর জেলা অত্র ঘটনায় ছায়া তদন্ত শুরু করে। পরবর্তীতে থানায় হত্যা মামলা রুজু হওয়ার পর স্ব-উদ্যোগে পিবিআই গাজীপুর জেলা মামলার তদন্তভার গ্রহন করে অভিযান পরিচালনা করে ঘটনায় জড়িত ০২ জন আসামীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। আসামী মোঃ রনি মিয়া (২১) ও আসামী মোঃ সাঈদ ইসলাম (১৯)’দ্বয় ভিকটিম সুমাইয়াকে প্রেম নিবেদন করে সাড়া না পেয়ে গত ইং ৩১/১০/২০২০ তারিখ সকাল ০৯.০০ ঘটিকার পর ভিকটিমের বসত ঘরে উভয় আসামী ভিকটিমকে ধর্ষন করে। ধর্ষনের ঘটনাটি ভিকটিম সবাইকে বলে দিতে পারে এই ভয়ে আসামীদ্বয় ভিকটিমকে শ^াসরোধ করে হত্যা করে। আসামীদ্বয়কে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হলে তারা নিজেদেরকে ঘটনার সাথে জড়িয়ে ঘটনার বর্ণনা দিয়ে সেচ্ছায় বিজ্ঞ আদালতে ফৌঃকাঃবিঃ এর ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেঃ” পিবিআই গাজীপুর জেলার পুলিশ সুপার, জনাব মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান।

আসামী ১। মোঃ সাঈদ ইসলাম (১৯)’কে ইং ১২/০৭/২০২১ তারিখ ও আসামী ২। মোঃ রনি মিয়া (২১)’কে ইং ১৩/০৭/২০২১ তারিখ বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করলে তারা নিজেদেরকে ঘটনার সাথে জড়িয়ে ঘটনার বর্ণনা দিয়ে সেচ্ছায় বিজ্ঞ আদালতে ফৌঃকাঃবিঃ এর ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।র