• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০২:২১ পূর্বাহ্ন

পিরোজপুরের নেছারাবাদে গৃহহীন আশ্রয়হীন মানুষের ভাগ্য বদলে যাওয়ার গল্প : প্রধানমন্ত্রীর ঘর পেয়ে বলদে গেছে ওদের জীবন


প্রকাশের সময় : ফেব্রুয়ারী ৭, ২০২৩, ৫:৫৩ অপরাহ্ন / ৭৭
পিরোজপুরের নেছারাবাদে গৃহহীন আশ্রয়হীন মানুষের ভাগ্য বদলে যাওয়ার গল্প : প্রধানমন্ত্রীর ঘর পেয়ে বলদে গেছে ওদের জীবন

নিজস্ব প্রতিবেদক,পিরোজপুরঃ গৃহহীন, ভূমিহীন সহায় সম্বলহীন মানুষের মাথা গোঁজার ঠাঁই টুকো ছিল না। এমনকি এদের কেউ বসবাস করতেন অন্যের জায়গায়, নদীর তীরে খাসজমিতে কিংবা অন্যের বাড়িতে। কেউ ব্রীজের নীচে খুপড়ি ঘরে। যে মানুষ গুলোর পরিচয় দেয়ার মতো ছিলোনা কোন হোল্ডিং নম্বর। সে মানুষ গুলো প্রধানমন্ত্রীর ঘর পেয়ে বলদে গেছে তাদের জীবন।

পিরোজপুরে নেছারাবাদ উপজেলায় সম্প্রতি তিন ধাপে দেয়া হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর উপহার আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর। উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে ৪৯৭টি ঘর নির্মাণ করে গৃহহীন ও ভূমিহীনদের মধ্যে হস্তান্তর করা হয়েছে। এবং চতুর্থ ধাপে নতুন করে বরাদ্দ পাওয়া আরও ১০০টি ঘরের নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে।বিশেষ করে শারীরিক প্রতিবন্ধী, ভিক্ষুক, বুদ্ধি প্রতিবন্ধীরা প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উপহারের এই ঘর পেয়ে তাদের মুুুখে হাসি ফুটে উঠেছে। বর্তমানে তারা এখন পরিবার পরিজন নিয়ে সেই ঘরে ভালোভাবে বসবাস করছে এবং পাশাপাশি তারা হাঁস, মুরগি, গরু, ছাগল লালন পালন করে , কেউ কুটির শিল্পের কাজ করে, কিছু লোক ঝাড়ু তৈরি করে ও ঝাড়ুর খীল তৈরি করে। আবার কিছু লোক নার্সারীতে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। ঘরের চারপাশে শাক-সবজি চাষ করে নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে কিছু কিছু সবজি বিক্রি করে ভালো উপার্জনও করছেন।

তাদের জন্য ব্যাবস্থা করা হয়েছে বিশুদ্ধ পানির সুব্যবস্থা দেয়া হয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগ। আজ ওই গৃৃৃৃহহীন, ভূমিহীন, ছিন্নমূল, মানুষের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পেয়ে তাদের চোখে মুখে দেখা যাচ্ছে হাসির ঝলক। বদলে গেছে ওদের জীবনধারা। নেছারাবাদ উপজেলার নার্সারী সমৃদ্ধ দৃষ্টি নন্দন এলাকার মাগুরা এলাকায় মূল সড়কের পাশে ৭০টি বাড়ি নির্মাণ করা হয়েছে। সেখানে বেসরকারি উদ্যোগে একটি প্রাক প্রাথমিক বিদ্যালয় গড়ে তোলার পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে । ফলে আশ্রয়ণ প্রকল্পে বসবাস করা ছেলে মেয়েদের লেখা পড়ার ব্যাবস্থাও হয়ে যাবে তাড়াতাড়ি ।

ঘরের উপকারভোগীরা জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের অসহায় মানুষ গুলোকে একটা মাথা গোঁজার ঠাঁই করে দিয়েছেন। তার জন্য আল্লার কাছে দোয়া করি।

রহিম জানান, আমি একটা চায়ের দোকান দিয়েছি স্ত্রী সন্তান নিয়ে ভালো আছি। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন ঘর পেয়ে আমারা মহা খুশি। এখন আমাদের শেষ জায়গা টুকু যেন এখানেই করা হয়। অর্থাৎ সকলের জন্য একটা কবরস্থানের ব্যাবস্থা করে দেয়া হোক।

ঐ আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা সব থেকে ছোট দম্পতি আলামীন ও তার স্ত্রী জানান, প্রধাানমন্ত্রী আমাদের ঘর দিয়েছে, মাথা গোজার ঠাঁই করে দিয়েছে আমরা দুজন এখন খুব ভালো আছি। আমি বাড়ির আঙ্গিনায় সবজি উপাদান করেছি শীমগাছ, লাউগাছ, বেগুন গাছ রোপন করেছি।আমার বাবা একটা দোকান করে দিয়েছে এখন দোকানে যদি কিছু মালপত্র তুলতে পারতাম তাহলে আর রাস্তায় রাস্তায় আলামীনকে ঘুরে ঘুরে বাদাম বিক্রি করা লাগতো না।

প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মানষ কুমার দাস বলেন,পিরোজপুরে নেছারাবাদ উপজেলায় সম্প্রতি তিন ধাপে দেয়া হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর উপহার আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর । উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে ৪৯৭টি ঘর নির্মাণ করে গৃহহীন ও ভূমিহীনদের মধ্যে হস্তান্তর করা হয়েছে। এবং চতুর্থ ধাপে নতুন করে বরাদ্দ পাওয়া আরও ১০০টি ঘরের নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে।

নেছারাবাদ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে ভূমিহীন, গৃহহীন পরিবারকে ৫৯৭টি ঘর প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে দেয়া হয়েছে।এর মধ্যে ৪৯৭টি হস্তান্তর করা হয়েছে এবং ১০০টি ঘরের কাজ শেষ পর্যায়ে। এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে সমাজে আর্থিকভাবে সুবিধা বঞ্চিত মানুষ রয়েছে এই প্রকল্পের আওতায় সুবিধা পায় এবং আমারা চেষ্টা করেছি। যারা সুবিধা বঞ্চিত গৃহহীন ভূমিহীন বিশেষ করে শারীরিক প্রতিবন্ধী তাদেরকে এই প্রকল্পের আওতায় আনতে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মূল লক্ষ্য হচ্ছে মডেল বাংলাদেশ। অর্থাৎ সমাজের সকল স্তরের মানুষকে নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে তাহলেই আমরা ২০৩১সালের মধ্যে বাংলাদেশ একটি উন্নত রাষ্ট্রে পরিনত হবো। উপকারভোগীরা যে শুধু ঘর পেয়েছে তা নয় দলীল সহ দুই শতাংশ জমি পেয়েছে এবং এই ঘর পাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে তাদের সামজিক ও আর্থিক ভাবে একটা পরিবর্তন আসছে।কর্ম সংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে এবং তারা নিজেদের উদ্যোগে বিভিন্ন শিল্পী কর্ম তৈরি করেন।এবং ঘরের চারপাশে শাক সবজির বাগান তৈরি করে নিজেদের চাহিদা পুরন করে বিক্রি করছেন।