• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:৩৬ পূর্বাহ্ন

কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দিল সুজানগর উপজেলা প্রশাসন


প্রকাশের সময় : জানুয়ারী ২৬, ২০২৩, ১:১৭ পূর্বাহ্ন / ৬০
কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দিল সুজানগর উপজেলা প্রশাসন

নিজস্ব প্রতিবেদক,পাবনাঃ এসএসসি পরীক্ষায় সর্বোচ্চ ১২৮৯ নম্বর পেয়ে রাজশাহী বোর্ডে প্রথম স্থান অর্জনকারী পাবনার সুজানগর উপজেলার দুলাই হাই স্কুলের কৃতি শিক্ষার্থী মোঃ আশরাফুল আবেদীন আলিফ, উপজেলার মধ্য দ্বিতীয় স্থান অর্জনকারী মোঃ শাফায়েত খান লিখন ও উপজেলার মধ্য তৃতীয় স্থান অর্জনকারী মনিষা কৈরালা ঘোষকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়েছে। বুধবার দুলাই হাইস্কুলে এ সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়। সুজানগর উপজেলা প্রশাসন ও দুলাই হাই স্কুল অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন যৌথভাবে এ সংবর্ধনার আয়োজন করে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার(ইউএনও) মোঃ তরিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে সংবর্ধনা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন পাবনা-২ আসনের সংসদ সদস্য আহমেদ ফিরোজ কবির। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান শাহীনুজ্জামান শাহীন, পৌর মেয়র রেজাউল করিম রেজা, থানার ওসি আব্দুল হান্নান, ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম শাহজাহান। অত্র বিদ্যালয়ের শিক্ষক আব্দুল মালেক (বিএসসি)এর পরিচালনায় অন্যদের মাঝে বক্তব্য রাখেন দুলাই উচ্চ বিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ব্যাংক কর্মকর্তা হামিদুর রহমান,আনিসুজ্জামান লিটন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মজিদ, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ গোলাম রসুল, উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার মনোয়ার হোসেন ও কৃতি শিক্ষার্থীর মধ্য বক্তব্য দেন আশরাফুল আবেদীন আলিফ, শাফায়েত খান লিখন ও মনিষা কৈরালা ঘোষ। স্বাগত বক্তব্য দেন প্রধান শিক্ষক(ভারপ্রাপ্ত) মোঃ কামাল হোসেন লিটন। উপস্থিত ছিলেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা নাজমুল হুদা, সরকারি ডাঃ জহুরুল কামাল কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল লতিফ, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সাইদুর রহমান সাইদ, যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক সরদার আব্দুর রউফ,সুজানগর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এম এ আলিম রিপন, পৌর আ.লীগের সভাপতি ফেরদৌস আলম ফিরোজ, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির এলাকা পরিচালক হাবিবুর রহমান বাদশা, ওই বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক-শিক্ষার্থী সহ স্থানীয় বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিবর্গ । জীবনে কেবল ভাল রেজাল্ট করাই বড় কথা নয় উল্লেখ করে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পাবনা-২ আসনের সংসদ সদস্য আহমেদ ফিরোজ কবির বলেন,পড়া-লেখার মূল উদ্দেশ্য প্রকৃত মানুষ হয়ে উঠা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছি। এ দেশকে গড়ে তোলার দায়িত্ব আমাদের। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা যে স্বপ্ন নিয়ে দেশ স্বাধীন করেছেন কৃতি সন্তান হিসেবে তোমাদেরকে সে স্বপ্ন বাস্তবায়নে এগিয়ে আসতে হবে। উপজেলার প্রত্যন্ত অ লের একটি বিদ্যালয়ে পড়ালেখা করেও তোমরা যারা এ কৃতিত্ব অর্জন করেছো অবশ্যই তোমরা মেধাবি। তবে এটাই সব কিছু নয়। শিক্ষার প্রকৃত উদ্দেশ্য হলো মানুষকে ভালাবাসা। মানুষকে জানা। গরীব, অসহায় মানুষের পাশে থাকা। উচ্চ শিক্ষাসম্পন্ন করে তোমরা যে যেখানে থাকবে সেখান থেকেই মানুষের কল্যাণে কাজ করতে হবে। গরীব ও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহীনুজ্জামান বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস জানা জরুরি উল্লেখ করে বলেন, আমাদের মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের জানতে হবে। সম্মান করতে হবে তাদের। ভালবাসতে হবে দেশ ও দেশের মানুষকে। তোমরা তোমাদের মেধাকে কাজে লাগিয়ে দেশ ও মানুষের কল্যাণে অবদান রাখবে। এবং ত্যাগের মানসিকতা নিয়ে কাজ করতে হবে । জীবনে মা-বাবা ও শিক্ষকদের ঋণ শোধ করতে পারবে না। তাই তাদের অবদান আজীবন মনে রাখা প্রয়োজন বলেও উল্লেখ করেন তিনি। সভাপতির বক্তব্যে উপজেলা নির্বাহী অফিসার(ইউএনও) মোঃ তরিকুল ইসলাম কৃতি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, দেশ যদি উন্নত হয়, সমৃদ্ধ হয় তাহলে তোমাদের সাফল্য, মা-বাবার কষ্ট সফল হবে। তোমরা ভালো রেজাল্ট করে মা-বাবার মুখ যেমন উজ্জ্বল করেছ, তেমনি দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার ক্ষেত্রেও তোমাদের সচেষ্ট থাকতে হবে। তোমাদের জ্ঞান শুধু পাঠ্য বইয়ে সীমাবদ্ধ না রেখে বিভিন্ন ধরনের বই পড়তে হবে। ডিজিটালাইজেশনের কারণে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের ক্ষেত্রে মোবাইলের ব্যবহার বাড়ছে। আমরা ডিজিটাল ডিভাইস অবশ্যই ব্যবহার করব। কিন্তু এর মধ্যে হারিয়ে যাবো না। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার বাইরেও খেলাধুলা এবং অন্যান্য সহপাঠক্রমিক কার্যক্রমে তোমাদের অংশগ্রহণ করতে হবে। জীবনে ব্যর্থতা আসতে পারে। সব কাজে সফলতা আসবে এমন নয়। এজন্য দমে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই। সবার মাঝে অমিত সম্ভাবনা রয়েছে। নিজেদের সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। মনে রাখতে হবে, জীবনের যে কোনো পর্যায়ে সাফল্য আসতে পারে। আমরা অন্যের কাছে অনুপ্রেরণা হবো, যাতে অন্যরা আমাদের দেখে শিখতে পারে উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, আজকের এই সংবর্ধনা তোমাদেরকে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা যোগাবে। আমরা তোমাদেরকে অনেক উঁচুতে দেখতে চাই। পরে অতিথিবৃন্দ কৃতি ওই তিন শিক্ষার্থীদের হাতে ক্রেস্ট, নগদ অর্থ ও উপহার তুলে দেন। এছাড়া রাজশাহী বোর্ডে প্রথম স্থান অর্জনকারীকে আবুল কাশেম ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে প্রতি মাসে পাঁচ হাজার টাকা করে শিক্ষা বৃত্তি প্রদানের ঘোষণা দেন উপজেলা চেয়ারম্যান। প্রসঙ্গত, সংবর্ধিত ওই তিন কৃতি শিক্ষার্থী গত ২০২২ সালের এসএসসি পরীক্ষায় ১৩০০ নম্বরের মধ্য ১২৮৯ নম্বর পেয়ে মোঃ আশরাফুল আবেদীন আলিফ রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের মধ্য প্রথম স্থান, ১২৬৭ নম্বর পেয়ে শাফায়েত খান লিখন উপজেলার মধ্য দ্বিতীয় এবং মনিষা কৈরালা ঘোষ ১২৬৩ নম্বর পেয়ে উপজেলার মধ্য তৃতীয় স্থান অর্জন করে। তাঁরা তিনজনই বিজ্ঞান শাখার শিক্ষার্থী এবং তিনজনই উপজেলার দুলাই হাইস্কুল থেকে পরীক্ষায় অংশগ্রহন করে।