মো: রাসেল সরকারঃ ১৯৭১ সালে অনেক মা বোনের ইজ্জত ও লাখ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে লাল সবুজের পতাকা ও স্বাধীনতা পেয়েছি আমরা, কিন্তু বেঈমান ও কিছু দুষ্টু লোকের কারণে মানব কল্যাণে কাজ করা কঠিন হয়ে পড়েছে বলে অনেকেরই অভিমত। সারা দেশে কয়েক হাজার সংবাদ মাধ্যমের মধ্যে টেলিভিশন, জাতীয় পত্রিকা, সাপ্তাহিক, পাক্ষিক, মাসিক ও অনলাইন নিউজ পোর্টালসহ বিভিন্ন সংবাদপত্র রয়েছে, সেখানে লক্ষাধিক সংবাদ কর্মী এবং স্টাফ কাজ করেন, এবং আইনজীবী, পুলিশ, সাংবাদিক ও জনপ্রতিনিধিসহ সকল পেশায় কিছু বেঈমান ও দুষ্টু প্রকৃতির লোক রয়েছে। তারা মানুষের সাথে প্রতারণা করার কারণে প্রকৃত ভালো মানুষের বদনাম হয়, এসব খারাপ ব্যক্তিরা আটক হলেও আইনের ফাঁক-ফোকর দিয়ে বেঁচে যাচ্ছে। যারা দেশ ও জাতির কল্যাণময় কাজের চিন্তা করেন তারাই বেশি ক্ষয়-ক্ষতির শিকার হচ্ছেন। ( সর্ব স্থানে বৃদ্ধি পাচ্ছে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, খুন ও ধর্ষণসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ড)।

সারা দেশের তুলনায় ঢাকায় তুলনা মূলক সাংবাদিকের সংখ্যা অনেক বেশি। সাংবাদিক সংগঠনের ক্লাবের সদস্য না, এর বাহিরেও রয়েছে শতাধিক সাংবাদিক। এসব সাংবাদিকদের মধ্যে অনেকেই টিভি চ্যানেলে কর্মরত, অনেকেই জাতীয় দৈনিক পত্রিকা ও অনলাইন পত্রিকায় কর্মরত, প্রেস ক্লাবের সদস্য হতে আগ্রহী থাকলেও বিভিন্ন কারণে তারা সদস্য হতে পারেন নি, অনেকেই আলাদা ভাবে সাংবাদিকদের নিয়ে সাংবাদিক সংগঠন করেছেন, কিন্তু তাদের মধ্যে বেশির ভাগ সাংবাদিকের ঐক্যবদ্ধ না থাকার কারণে পিছিয়ে পড়েছেন তারা।

বিভিন্ন মিডিয়ার প্রতিনিধিগণ অবহেলিত সাংবাদিক, এক একটি সংগঠনে প্রায় শত শত সদস্য রয়েছেন কিন্ত যে কোনো এলাকায় সংবাদ সংগ্রহ করার কাজে গেলে সংবাদ কর্মীদেরকে অনেকেই প্রশ্ন করেন যে, আপনারা কোন ক্লাবের সদস্য? অনেক সময় সাংবাদিকদের সাথে সাধারণ পাবলিক ও কিছু রাজনৈতিক নেতার হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে থাকে। অনেকেই মন্তব্য করেন যে, সাংবাদিকরা ঐক্যবদ্ধ না হলে আগামীতে বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে, যে কোনো সময় হামলা, মামলার শিকার হতে পারেন তারা।

বিশেষ করে সাংবাদিকতা একটি মহান পেশা, সাংবাদিক শব্দ সহজ হলেও এই পেশায় সবচেয়ে বেশি ঝুঁকি রয়েছে, আর এই পেশায় দেশ ও জাতির সম্পর্কে সকল বিষয়ে জানতে সাংবাদিকতার আদর্শ লিপি পড়তে হয়, সরকারি নিয়মনীতি মানতে হয়। কলম সৈনিক অর্থাৎ সাংবাদিক দেশ ও জাতির বিবেক। ঝুঁকিপূর্ণ জেনেও সাংবাদিকরা দেশ ও জাতির কল্যাণে তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালন করছেন। একটি ভুল হলে সাংবাদিকদের উপর হামলা, মামলা করা হয়, এমনকি হত্যার শিকার হন অনেকেই। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে সবাইকে বলা হয় সাংবাদিকদের সহযোগিতা করবেন, কিন্তু তার উল্টোটা দেখা যায়। পুলিশ কি কখনো সাংবাদিকদের বন্ধু হতে পেরেছেন ? কেউ কি খবর নিয়েছেন যে, সাংবাদিকরা কেমন আছেন? সাংবাদিকরাই আজকাল বেশি কষ্টে আছেন, তারা অনেকেই বেতন ভাতা না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। জনগণের কল্যাণে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পেশাগত দায়িত্ব পালন করেও এর বিনিময়ে কি পাচ্ছেন সাংবাদিকরা? নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন অনেক সাংবাদিক। বিভিন্ন হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলার শিকার হচ্ছেন অনেকেই।

কৃতজ্ঞতা জানাই তাদেরকে যারা মানুষের কল্যাণে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন। পুলিশ, সাংবাদিক, আইনজীবি ও জনপ্রতিধিগণ, এই চারটি শব্দের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ কলম সৈনিক অর্থাৎ সাংবাদিক।

অভিমত: সাংবাদিক হতে চাইলেই হওয়া যায় না, একটি অনলাইনের কার্ড গলায় ঝুঁলিয়েই অনেকে পরিচয় দেন যে, আমি সাংবাদিক! উস্তাদের অভাব নেই, ভুল ধরার মানুষ অনেক আছেন, কিন্তু কাজে তারা ঠন ঠনা। সাংবাদিকতা করতে সাংবাদিকতার আদর্শ লিপিসহ বেশি বেশি বই পড়তে হবে, তারপর সংবাদ সংগ্রহ করে সেই সংবাদ পরিবেশন করা অনেক কঠিন কাজ, মুখে বড় বড় কথা, কাজের বেলায় নেই এক কোনা। তাই আমি বলবো আপনার সবাই সাংবাদিকতার আদর্শ লিপি বই পড়া জরুরি, এই বইটিতে বেশির ভাগ শব্দ আছে যা সাংবাদিকদের জানা দরকার।

যেমন: সংবাদের উৎসহের মত সংবাদের উপাদান কি? মানুষ এবং প্রকৃতি, মানুষের আশা-আকাঙ্খা, আনন্দ, বেদনা, সুখ-দুঃখ, সমস্যা ও সম্ভাবনাই সংবাদের মূল প্রতিপাদ্য। এর সাথে সম্পৃক্ত সকল বিষয়ই সংবাদের উপাদান। যেমন: কুকুর যদি মানুষকে কামড়ায় তা কোনো সংবাদ নয়, আর মানুষ যদি কুকুরের মতো কিছু করে বা অপ্রত্যাশিত কিছু করে তা সংবাদ হয়। নিয়মের ব্যতিক্রম ঘটনা, অন্যায় অবিচার, যা মানুষের অধিকারকে হরণ করে, এ রকম অনেক বিষয়কে সংবাদ বলা যেতে পারে। সবার তথ্য জানার অধিকার আছে, কিন্তু কারো সাথে বিবাদ বা শক্রতা করে সাংবাদিকতায় সাফল্য আসতে পারে না। সাংবাদিকরা সবাই ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করতে হবে, এতে স্বাধীন ভাবে সাংবাদিকতা করা সম্ভব বলে মনে করেন সচেতন মহল।

আমার কোনো ভুল হলে ক্ষমা করবেন, আমি ব্যক্তিগত ভাবে বলছি যে, সাংবাদিক ভাই বন্ধুগণ আপনাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। আমাদের পরিবার, সমাজ, দেশ ও জাতির ভালো দিক গুলো চিন্তা করে সবাইকে সাবধান, সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। অপরাধীর পক্ষ না নিয়ে সময়মত অপরাধীদের ধরিয়ে দিন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে। এতে সবার জন্য মঙ্গল, আর যারা অপরাধী নয়, তাদেরকে যেন কেউ হয়রানি না করেন।

(লেখক: মো: রাসেল সরকার, সাংগঠনিক সম্পাদক
জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা কেন্দ্রীয় কমিটি।
ইমেইল: Sheikhmdraselbd@gmail.com)