• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৫:৩৮ পূর্বাহ্ন

আর নয় চেতনা এবার দরকার সচেতনতা


প্রকাশের সময় : মার্চ ৮, ২০২৩, ৮:২৯ অপরাহ্ন / ১১৬
আর নয় চেতনা এবার দরকার সচেতনতা

পি আর প্ল্যাসিডঃ দেশে এখন সর্বজন স্বীকৃত একটা শব্দ “চেতনা”, যার ব্যাখ্যা করার আর প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না। দেশ স্বাধীন হয়েছে অর্ধশত বছর পেরিয়ে গেলেও আমরা যেখানে এখনো স্বাধীনতার কথাই বলি, বলি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা, যেখানে স্বাধীনতাকে খুঁজি সবার মাঝে, সেখানে আলাদা করে চেতনা আর প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না।

চেতনার কথা বলতে বলতে দেশে এখন এমনই এক অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে যেখানে দেশ স্বাধীন করার পিছনে যাদের অবদান বা ভূমিকা ছিল সেই বীর যোদ্ধাদের কাতারে এসে লাইন দিয়েছে অযোদ্ধা এবং সেই সময় কেবল জন্ম হয়েছে কিংবা জন্মও হয়নি তারাও। সুতরাং এসব কে আমাদের যাচাই বাছাই করে এখনই ঠিক করতে হবে কে বা কারা ছিল আমাদের স্বাধীনতার পক্ষে এবং কে বা কারা ছিল বিপক্ষে। তা না হলে চেতনার কথা মুখে বলে মিথ্যে চেতনাকে প্রতিষ্ঠা করার সুযোগ পাবে তারা শুধু বুলি আওরিয়ে।

এতে করে দেশ আমাদের সামনে এগিয়ে যাবে তো দূরের কথা উল্টো আরো একশ বছরের জন্য পিছিয়ে দিবে দেশ বিরোধী চক্রান্ত। এই কাজ যেন ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে পরাজিত শক্তি আর কোনভাবে স্বাধীন দেশের মাটিতে করতে না পারে এবং মাথাচারা দিতে না পারে এজন্যই আমাদের নতুন প্রজন্মকে সচেতন করতে হবে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে। নতুন প্রজন্মকে সচেতন করে গড়ে তোলার গুরুত্ব বলে শেষ করা যাবে না।

দেশের বর্তমান অবস্থার দিকে নজর দিলে স্পষ্ট বোঝা যায় স্বাধীনতার পক্ষের শক্তিকে কৌশলে যে অদৃশ্য এক অপশক্তি ক্ষতি করছে। আরো বেশি রকম ক্ষতি করার পায়তারা বা চেষ্টা করছে। এবিষয়ে কোন উদাহরণ রেখে কোন বিষয় বলবো?
উদাহরণ দেবার বিষয়ের যে শেষ নেই। তাই বলছি, আমাদের আর চেতনার কথা বলা দরকার নেই। কারণ চেতনার নামে যা হচ্ছে তা অ-চেতনার চেয়েও ভয়াবহ – ভয়ংকর। তাই আমাদের চাই এখন একমাত্র সচেতনতা। না হলে একসময় দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হবে। জাতি হবে হুমকির মুখোমুখি।

কেন বলছি এই কথা তার দু’টি উদাহরণ টানছি। সম্প্রতি স্কুলের পাঠ্য বইতে বিশিষ্ট লেখক শিক্ষাবীদ ডঃ জাফর ইকবালের লেখা নিয়ে দেশে যে হৈ চৈ হয়ে গেল তা কর্তৃপক্ষের অসচেতনতার জন্যই সৃষ্টি হয়েছিল। এমনকি, দুদিন আগে ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া জাতীয় পাট দিবস পালন উপলক্ষে মুদ্রিত এক ছবিতে পাট পাতা বলে চালিয়ে দেওয়া ছবিতে গাঁজার পাতা বসানো, এটাও অসচেতনতারই কথা। এতো গেল ছোট দু’টি বিষয়। এর গভীরে সচেতনতার মোড়কে কল্পিত অসচেতনতা কাজ করছে সে কথা ভাবলে আগমী প্রজন্মের বিষয় নিয়ে শঙ্কিত না হয়ে পারি না।

দেশ আমাদের উন্নত হচ্ছে বলে চিৎকার চেচামেচি করে গলা ফাটানো হচ্ছে। দেশ আমাদের উন্নয়নের মহাসড়কে পৌঁছে গেছে। সিঙ্গাপুর, মালয়শিয়া সহ আরো কিছু দেশকে পিছনে ফেলে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। এসব বলে সরকারের পক্ষ থেকে যে বক্তব্য দেওয়া হচ্ছে তার সত্য প্রমাণ এখন বিভিন্ন দেশের সমীক্ষা, অতপর তাদের মিডিয়াতে প্রকাশিত তথ্যে বা সংবাদেই দেখতে পাচ্ছি।

তাই বলছি, আর নয় চেতনা, এবার দরকার কেবল সচেতনতা।

(লেখকঃ পি আর প্ল্যাসিড সম্পাদক, বিবেকবার্তা, জাপান।)