• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২৫, ১১:৪৮ অপরাহ্ন

১৪ ডিসেম্বর’৭১ শহীদ হয়েছিলেন পাবনার সন্তান ডা.ফজলে রাব্বী


প্রকাশের সময় : ডিসেম্বর ১৪, ২০২৪, ১:৫৮ অপরাহ্ন / ২৫
১৪ ডিসেম্বর’৭১ শহীদ হয়েছিলেন পাবনার সন্তান ডা.ফজলে রাব্বী

শামীম আহমেদ, পাবনাঃ নিজ জেলা পাবনায় অবহেলিত শহীদ বুদ্ধিজীবী ডা.ফজলে রাব্বী। বাঙালি জাতি যখন শ্রদ্ধাবনত চিত্তে ১৯৭১ সালের শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণ করছে। তখন জন্মভূমি পাবনায় তেমন আনুষ্ঠানিক ভাবে স্মরণ করা হয় না শহীদ ডা.ফজলে রাব্বীকে। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে ডা. ফজলে রাব্বীর মহান মুক্তিযুদ্ধে আসামান্য অবদানের কথা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেছে পুরো জাতি। বিজয়ের ৫৩ বছরেও জাতির এ বীর সন্তানের স্মৃতি ধরে রাখতে পাবনায় নেওয়া হয়নি কোনো উদ্যোগ। হারিয়ে যেতে বসেছে শহীদ বুদ্ধিজীবী ডা.ফজলে রাব্বীর স্মৃতি। শহীদ ডা.মোহাম্মদ ফজলে রাব্বী ১৯৩২ সালের ২১ সেপ্টেম্বর পাবনা সদরের ছাতিয়ানি এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭১ সালের ১৪ ই ডিসেম্বর বাংলাদেশকে মেধা শূন্য করার জন্য যাদের কে হত্যা করে তাদের একজন পাবনার ডা.ফজলে রাব্বী। তিনি ১৯৪৮ সালে পাবনা জেলা স্কুল থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে মেট্রিকুলেশন পাশ করে ঢাকায় চলে যান। তিনি ১৯৫৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গোল্ড মেডেল পেয়ে এমবিবিএস পাশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রেজিস্ট্রার হিসেবে যোগ দেন। পরে ইংল্যান্ড গিয়ে ১৯৬২ সালে এমআরসিপি ডিগ্রি অর্জন করে সেখানে তিনি চিকিৎসা পেশা শুরু করেন। তবে তা বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। ডা.ফজলে রাব্বী ছিলেন দেশপ্রেমিক মানুষ। দেশে ফিরে ১৯৬৩ সালে তিনি দেশে ফিরে ঢাকা মেডিকেল কলেজে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে সেদিন যে সাহসী বুদ্ধিজীবীরা মাথা নত না করে প্রাণ দিয়ে এ দেশের স্বাধীনতার সূর্য ছিনিয়ে এনেছেন তাদেরই একজন পাবনার কৃতি সন্তান শহীদ ডা.ফজলে রাব্বী। পাবনা জেলার নতুন প্রজন্মের অনেকের কাছে অপরিচিত ডা. ফজলে রাব্বী। পাবনার সচেতন মহল তার স্মৃতি ধরে রাখার কয়েক দফা দাবি জানান। এখনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে মহান মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়ে হলে ডা. ফজলে রাব্বী মুক্তিযোদ্ধাদের সাহস যুগিয়েছেন, আশ্রয় দিয়েছেন,তাদের খাদ্য ও চিকিৎসা সেবা দিয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ডাঃ ফজলে রাব্বীর ভূমিকা পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর কাছে পৌঁছতে দেরি হয়নি। এ দেশীয় দোসরদের নিয়ে তারা ডা. ফজলে রাব্বীকে ১৪ ডিসেম্বর রাতে ধরে নিয়ে যায়, নির্মম নির্যাতন করে এবং অন্যান্য বুদ্ধিজীবীদের সঙ্গে রায়ের বাজার বধ্যভূমিতে হত্যা করে। মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ডা. ফজলে রাব্বীর এ অবদান জাতি ভুলবে না। তবে এ বীর সন্তানকে তার নিজ জন্মভূমির মানুষ যেন ভুলতে বসেছে। ২০০৮ সালে ‘শহীদ বুদ্ধিজীবী ডা. ফজলে রাব্বী স্মৃতি পরিষদ’ গঠন করা হয়। পাবনা মেডিকেল কলেজটি ডা. ফজলে রাব্বীর নামে করার দাবিতে ২০০৮ সাল থেকে সভা, সমাবেশ, মানববন্ধন করা হয় । পাবনাবাসীর গণস্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে। সরকারের কাছে বার বার দাবি জানানো হলেও অদৃশ্য জটিলতায় তা অপূর্ণ রয়ে গেছে। ডা.ফজলে রাব্বীর পরিবারের কয়েকজন সদস্য পাবনায় বসবাস করেন। শহীদ বুদ্ধিজীবী ডা. ফজলে রাব্বীর জন্মভূমিতে তার স্মৃতিকে ধরে রাখার জন্য অবিলম্বে উদ্যোগ নেওয়ার দাবি অনেকের।