মনিরুজ্জামান অপূর্ব,ঢাকা;ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, জাতীয় চার নেতা ও বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার মূল উদ্দেশ্যই ছিলো বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে খুন করা। বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতে তার নীতি ও আদর্শ প্রতিষ্ঠায় যাতে কেউ নেতৃত্ব দিতে না পারে সে জন্য স্ত্রী –সন্তানসহ নিকটাত্মীয় এমনকি জেল খানায় জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয়। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর কণ্যা শেখ হাসিনার জন্য তাদের উদ্দেশ্য সফল হয়নি। তিনি ও তার বোন শেখ রেহানা ঘটনাচক্রে দেশের বাইরে থাকায় তারা বেঁচে যাওয়ায় পাকিস্তানী ষড়যন্ত্রকারিদের সেই স্বপ্ন পূরণ হয়নি। পচাত্তরে পর ৬ বছরের শরনার্থী জীবন ও ৮১ সালে দেশে ফেরার পর ১৫ বছর মরণপণ যুদ্ধ করে ২১ বছরের জঞ্জাল অপসারণ করে শেখ হাসিনার হাত ধরেই বঙ্গবন্ধু ঘোষিত অর্থনৈতিক মুক্তির সংগ্রামে বাংলাদেশ আজ বিশ্বের বিষ্ময়।
মন্ত্রী আজ সোমবার ঢাকায় জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ডাক ও টেলিযোগাযোগ অধিদপ্তর আয়োজিত ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
টেলিযোগাযোগ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক জনাব মো: কামরুজ্জামান-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব জনাব মো: আফজাল হোসেন, বিটিআরসির চেয়ারম্যান জনাব শ্যাম সুন্দর সিকদার, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের যুগ্ন-সচিব জনাব মুহাম্মদ আবদুল হান্নান, বিটিসিএল-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো: রফিকুল মতিন, টেলিটক-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব মো: সাহাব উদ্দিন বক্তৃতা করেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় বিপ্লবকে শোষণ-বঞ্চনা,ক্ষুধা ও দারিদ্রমূক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার ঘোষণা উল্লেখ করে বলেন, বঙ্গবন্ধু পূঁজিবাদ, সাম্রাজ্যবাদ ও শোষকদের বিরুদ্ধে আঘাত করেছিলেন। শোষিত ও বঞ্চিতদের পক্ষে বঙ্গবন্ধু রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পদক্ষেপ নিয়ে ছিলেন বলেই তাকে দেশী বিদেশী চক্রান্তে হত্যা করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় রাষ্ট্রপরিচালনার চার মূলনীতির মধ্যে জাতীয়তাবাদ নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি করা হয়েছে, সমাজতন্ত্র উচ্চারিত হয়নি এবং ধর্মনিরপেক্ষতাকে বারবার আঘাত করা হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রথম গণনাটক ‘একনদী রক্তের’নাট্যকার জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেন, হাজার বছরব্যাপি ইরানি-তুরানি , আর্য-অনার্য, বৃটিশ –পাকিস্তানীরা বাঙালির এই উর্বর ভূখণ্ডটি শাসন করেছে, শোষণ করেছে সম্পদ লুট করেছে। বঙ্গবন্ধুই হাজার বছরের পরাধীন জাতিকে মুক্ত করেছেন, পৃথিবীতে বাংলা ভাষা ভিত্তিক বাঙালির একমাত্র রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে সঠিকভাবে স্মরণ করতে হলে তাকে নিয়ে বিস্তারিত পড়া –শোনা করতে হবে।তা না হলে বঙ্গবন্ধুকে সঠিক মূল্যায়ন সহজ হবে না বলে তিনি উল্লেখ করেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা জনাব মোস্তাফা জব্বার ১৯৪৮ সাল থেকে আজকের দিন পর্যন্ত বাংলাদেশের উত্তরণের বিভিন্ন পেক্ষাপট তুলে ধরেন। তিনি বলেন, দেশের অগ্রগতিতে বঙ্গবন্ধুর উত্তরসূরি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ৯৬ থেকে ২০০১ ও গত ১২ বছরে অভাবনীয় উচ্চতায় বাংলাদেশকে উন্নীত করেছেন। বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় বিশ্বের রোল মডেল। বঙ্গবন্ধু শোষিত, বঞ্চিত, অসহায় দরিদ্র মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন। তারই সুযোগ্য উত্তরসূরী জননেত্রী শেখ হাসিনা গ্রাম ও শহরের মধ্যে বৈষম্য দূর করতে কাজ করছেন। বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুসারিদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে বেগবান করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাওয়ার আহ্বান জানান মন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধুকে না হারালে বাংলাদেশ অনেক আগেই সোনার বাংলায় পরিণত হতো। তারা ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের কুশীলবদের খুঁজে বের করে তাদের বিচারের আওতায় আনার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
আপনার মতামত লিখুন :