• ঢাকা
  • শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ১২:১৮ অপরাহ্ন

স্ত্রীকে ডিভোর্স দিয়ে ২ মণ জিলাপি বিতরণ করলেন গোলাম মোস্তফা


প্রকাশের সময় : ডিসেম্বর ১৫, ২০২১, ৩:২৭ অপরাহ্ন / ২০২
স্ত্রীকে ডিভোর্স দিয়ে ২ মণ জিলাপি বিতরণ করলেন গোলাম মোস্তফা

গাইবান্ধা প্রতিনিধি : গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে ১২ বছরের বিবাহিত জীবনের ইতি টেনে স্ত্রীকে ডিভোর্স দিয়েছেন স্বামী গোলাম মোস্তফা। এ ঘটনায় খুশি হয়ে আত্মীয় স্বজন ও বন্ধুদের মাঝে দুই মণ জিলাপি বিতরণ করেছেন ৪০ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি। এতে এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। স্থানীয়দের কেউ কেউ বলছেন, সদ্য বিচ্ছেদ হওয়া এই দম্পতির দুজনেরই এটা দ্বিতীয় বিয়ে। বনিবনা না হলে বিচ্ছেদ হতে পারে। তবে এতে একপক্ষের এমন উচ্ছ্বাস প্রকাশ সমাজে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

রবিবার বিকালে ঘটনাটি ঘটেছে পলাশবাড়ী উপজেলার বরিশাল ইউনিয়নের ভবানীপুর বাসুদেবপুর গ্রামে। স্বামী-স্ত্রী উভয়ের সম্মতি ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তির উপস্থিতিতে এই ডিভোর্স প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন স্থানীয় নিকাহ রেজিস্ট্রার কাজী মো. শাহ আলম সরকার।

এদিকে, ঘটনাটি জানাজানির পর থেকেই এলাকাজুড়েই চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। পেশায় ধান-চাল ব্যবসায়ী গোলাম মোস্তফা বাসুদেবপুর গ্রামের নজির হোসেনের ছেলে। গোলাম মোস্তফা ২০০৯ সালে ওই নারীকে বিয়ে করেন। তাদের সংসারে ১০ বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, মোস্তফা এবং ওই নারী দুজনই একই এলাকার বাসিন্দা। প্রায় এক যুগ আগে অনাড়ম্বর ভাবেই তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর প্রথম কিছুদিন তাদের সংসার ভালো চললেও সন্তান জন্মের পরপরই তাদের মধ্যে শুরু হয় কলহ। প্রায়শই তাদের সংসারে ঝগড়া-বিবাদ লেগে থাকতো। এ নিয়ে একে অপরের ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন গোলাম মোস্তফা ও তার স্ত্রী। অবশেষে তারা ডিভোর্সের সিদ্ধান্ত নেন। সম্প্রতি স্থানীয় ব্যক্তিদের উপস্থিতিতেই ডিভোর্স সম্পন্ন হয়। পরে গোলাম মোস্তফা আত্মীয় স্বজন ও বন্ধুদের মাঝে জিলাপি বিতরণ করেন।

এ বিষয়ে তিনি বলেন, বিয়ের ১২ বছরে নানা বিষয়ে ঝগড়া লাগতো। শেষ পর্যন্ত উভয়ের সিদ্ধান্তে ডিভোর্স সম্পন্ন হয়েছে। তাই গ্রামের মানুষদের মাঝে দুই মণ জিলাপি বিতরণ করেছি। বাড়িতে ডেকে বন্ধু ও আত্মীয়-স্বজনদের মিষ্টি মুখ করিয়েছি। তিনি আরও বলেন, আমাদের ১০ বছরের মেয়ে বর্তমানে তার মায়ের কাছে থাকবে। সে চাইলে আমার কাছেও থাকতে পারবে। তবে মায়ের কাছে থাকলেও তার দেখাশোনা করবো।

গোলাম মোস্তফার সঙ্গে সংসার করার ইচ্ছা ছিল না তার স্ত্রীরও। তিনি জানান, ডিভোর্স হওয়ায় তিনি অখুশি নন। এখন তিনি মেয়েকে নিয়ে বাবার বাড়িতে থাকবেন। ডিভোর্স দিলেও গোলাম মোস্তফা শান্তিতে থাক এটাই কামনা করেন তার স্ত্রী।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, এরকম একটা ঘটনা আমাদের এলাকায় ঘটেছে। বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনাও হয়েছে। সংসার ভাঙা নিশ্চয়ই আনন্দদায়ক কিছু না। হয়তো সাময়িক স্বস্তি পাওয়ার জন্য কিংবা মনের ক্ষোভ থেকে তিনি এটা করেছেন। তবে এ ঘটনা তাদের শিশুটির মনে যে কতটা দাগ কেটেছে তা গোলাম মোস্তফার ভাবা উচিৎ ছিল। এ ধরনের ঘটনা সমাজে বিয়ে ও সংসার নিয়ে নেতিবাচক ধারণা দেবে; যা কাম্য নয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে বরিশাল ইউনিয়নের নিকাহ রেজিস্ট্রার কাজী মো. শাহ আলম সরকার বলেন, ‘উভয়ের আলোচনা ও সম্মতিতে রেজিস্ট্রির মাধ্যমে তাদের ডিভোর্স সম্পন্ন হয়েছে। এ সময় উভয় পরিবারের লোকজন ছাড়াও এলাকার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।’