অনলাইন ডেস্ক : পারিবারিক আদালতের রায়কে খারিজ করে দিয়ে ভারতের গুজরাট হাইকোর্ট বলেছেন, কোনো নারীকে স্বামীর সঙ্গে থাকতে বাধ্য করা যাবে না। এমনকি আদালতের নির্দেশ থাকলেও নয়। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মুসলিম আইনে বহুবিবাহ স্বীকৃত। তবে ইসলামে কখনোই বহুবিবাহকে উৎসাহ দেওয়া হয় না। এই যুক্তিতে স্বামীর সঙ্গে থাকতে প্রথম স্ত্রী অস্বীকার করতে পারেন বলে গুজরাট হাইকোর্ট রায় দিয়েছে।
বিচারপতি তার রায়ে বলেছেন, ভারতে যে মুসলিম আইন চালু আছে, তাতে বহুবিবাহ স্বীকার করা হয়েছে, কিন্তু কখনোই তাকে উৎসাহ দেওয়া হয়নি। স্ত্রীকে তার সঙ্গে থাকতে বাধ্য করতে পারে না স্বামী। স্বামীর সেই অধিকার নেই।দিল্লি হাইকোর্টের সাম্প্রতিক একটি রায়কে উদ্ধৃত করে গুজরাট হাইকোর্টও জানিয়েছে, অভিন্ন দেওয়ানি বিধি কখনোই নিছক আশার বিষয় হয়ে সংবিধানে থাকতে পারে না।
বিচারপতি জে বি পার্দিওয়ালা ও বিচারপতি নীহার মেহতা রায়ে বলেছেন, দাম্পত্যের অধিকার শুধু স্বামীরই থাকবে এটা হতে পারে না। পারিবারিক আদালত কোনো স্ত্রীকে স্বামীর সঙ্গে বসবাসে বাধ্য করতে পারে না।
বিচারপতিরা জানিয়েছেন, বনাসকান্থা জেলার পারিবারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে এক নারী আবেদন জানিয়েছিলেন। পারিবারিক আদালত দিয়েছিল, ওই নারীকে স্বামীর কাছে ফিরে যেতে হবে এবং স্ত্রীর দায়িত্ব পালন করতে হবে।
২০১০ সালের ২৫ মে ওই দম্পতির বিয়ে হয়েছিল। পেশায় নার্স ওই নারী স্থানীয় হাসপাতালে কাজ করতেন। কিন্তু তার স্বামী তাকে অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার জন্য বাধ্য করছিলেন এবং সেখানে কাজ করার জন্য চাপাচাপি করছিলেন। এরপরই ছেলেকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি ছাড়েন ওই নারী। তিনি আবেদনে জানিয়েছিলেন, তিনি কখনোই অস্ট্রেলিয়া যেতে চাননি।
হাইকোর্ট আইন উদ্ধৃত করে জানিয়েছেন, কোনো ব্যক্তি কোনো নারীকে জোর করে তার সঙ্গে থাকতে বাধ্য করতে পারে না। এভাবে সে দাম্পত্যের অধিকারও প্রতিষ্ঠিত করতে পারে না। এই নারীকেও তার ইচ্ছের বিরুদ্ধে তার স্বামী জোর করতে পারবে না।
স্বামীর বক্তব্য ছিল, তার স্ত্রী বেআইনিভাবে বাড়ি ছেড়ে চলে গেছে। তাকে বুঝিয়ে বাড়ি ফেরানোর চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। তারপরই তিনি পারিবারিক আদালতে আবেদন করে জানান, স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনার অধিকার তার আছে। তবে তার যুক্তি খারিজ করে দিয়েছে হাইকোর্ট।
আপনার মতামত লিখুন :