• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৩:১৯ পূর্বাহ্ন

সুনামগঞ্জের মধ্যনগরে খাস জমি অবৈধ দখলের উচ্ছেদ অভিযান চললেও এখন বন্ধ


প্রকাশের সময় : জানুয়ারী ২৫, ২০২৫, ৬:৪৮ অপরাহ্ন / ১৭
সুনামগঞ্জের মধ্যনগরে খাস জমি অবৈধ দখলের উচ্ছেদ অভিযান চললেও এখন বন্ধ

এম এ মান্নান, মধ্যনগর, সুনামগঞ্জঃ সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলার সদর বাজারে খাস জমি অবৈধ দখল উচ্ছেদের অভিযানটি শুরু হলেও বর্তমানে কতৃপক্ষ নিরবচ্ছিন্ন অবৈধ দখল উচ্ছেদ এখন বন্ধ। দির্ঘদিন পরে অভিযান শুরু করলেও একটি অভিযান করেই থেমে গেছে প্রশাসন। অভিযান বন্ধ করেছেন প্রশাসন অন্য দিকে জনমনে উঠেছে প্রশ্ন। গত ২০২৪ সালের ২৮ নবেম্বর বৃহস্পতিবার দুপুর ১২ টায় জেলা প্রশাসকের নির্দেশনায় দিনব্যাপী উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে ১৫ টি পরিবারকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। এসময় অভিযান পরিচালনা করেন, সুনামগঞ্জ জেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ রোওশন আহমেদ, মধ্যনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উজ্জ্বল রায়,মধ্যনগর উপজেলার অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা সহকারী ভূমি কমিশনার মোঃ ওলিদুজ্জামান, মধ্যনগর থানার ওসি মোঃ সজীব রহমান। জানা যায় মধ্যনগর মৌজায় ২৪১৯ দাগে সরকারের কতৃপক্ষ,মোঃ আবুল হাশেমকে ৬ শতাংশ জায়গা বন্দোবস্ত দেন। এবং তাকে সরকারের কতৃপক্ষ দখল বুঝিয়ে দেন, দখল অনুযায়ী মোঃ আবুল হাশেম ভোগদখল করে আসছেন। দখলদার আবুল হাশেম বলেন, আমরা ১৫ বছর ধরে বৈধতার সহিত নিয়ম অনুযায়ী বন্দোবস্তো পেয়ে সরকারকে খাজনা দিতেছি, আমাদেরকে অন্যায় ভাবে উচ্ছেদ করা হচ্ছে। ভুক্তভোগী বিল্লাল হোসেন বলেন, আমরা সরকারের আইন মেনে, সময় মতো জায়গার খাজনা পরিশোধ করে আসছি,তাই সরকারের কতৃপক্ষের কাছে আমাদের আকুল আবেদন আমাদের জায়গা আমাদেরকে ফিরিয়ে দিবেন।

এমতাবস্থায় জেলা প্রশাসকের আদেশে বসতি স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযানে ভেঙে ঘুরিয়ে দিলেন ১৫ টি পরিবারের দালান ঘর। এবিষয়ে ভূমি কমিশনার মোঃ ওলিদুজ্জান বলেন, অবৈধভাবে যারাই দখলে আছে, পর্যায়ক্রমে অভিযানের মাধ্যমে তাদেরকে উচ্ছেদ করা হবে, এবং সরকারি স্হাপনা নির্মাণ করা হবে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ রওশন আহমেদ বলেন, ভূমি অফিসের সামনে ১৩ শতাংশ জায়গায় ১৫ টি পরিবার অবৈধভাবে ১৪ বছর যাবত বসবাস করে আসছে। অবৈধ দখল মুক্ত করতে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে,এবং অবৈধ দখল উচ্ছেদ অভিযান চলমান থাকবে ।

ডিসি খতিয়ানের জায়গা ভূমিহীনদের নামে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত দিলেও উচ্ছেদ অভিযান শুরু করেছেন প্রশাসন। সরকার ভূমিহীন মুক্ত করার উদ্দেশ্যে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত দিয়েছে। অথচ প্রভাবশালীরা অতি কৌশলে প্রকৃত ভূমিহীনদের বঞ্চিত করে, প্রভাবশালী ও বিত্তশালীরা জমি দখলে নিয়ে গেছে । পদ্মার আড়ালে থেকে ভূমি দস্যুরা সরকারের আমলাদের সাথে আতাত করে, ভূমিহীনদের নামে কৌশলে বন্দোবস্ত করিয়ে নেন,অতঃপর দখলে নিয়েছেন এলাকার বিত্তবান ধনী প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। সরকারের এসব খাস জায়গা ধনীরা অবৈধভাবে ভোগদখল করিতেছে নির্বিঘ্নে। এবং আইনের কোনধরনের বাধা ছাড়াই, তারা তাদের প্রভাব খাটিয়ে অবৈধভাবে দখল করেছে। সরকার বাহাদুরের নির্দেশনা যে,পতিত জমি অনাবাদি না রাখতে, হতদরিদ্র গরীব প্রকৃত ভূমিহীনদের প্রতি জনের নামে ২ একর ও ১ একর খাস খতিয়ানের পতিত জায়গা চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত দিলেও ভোগদখলে রয়েছে ধনী ব্যক্তিরা। অনুসন্ধানে জানা গেছে, সরজমিনে কোনো প্রকৃত ভূমিহীনই খাস জমি ভোগদখল করতে দেখা যায়না। অবৈধ দখলের বিষয় বারংবার বিভিন্ন খবরের কাগজে খবর প্রকাশ হলেও, নেই কেনো উচ্ছেদের দৃশ্যমান উদ্যোগ। তাছাড়া অনিয়ম দুর্নীতির মাধ্যমে খাস জমি ধনাঠ্য ব্যক্তিরা প্রভাব কাটিয়ে নিয়েছে জবরদখলে। ভূমি দখলের অনিয়ম দুর্নীতির বিষয়টি সরকারের প্রশাসনিক কতৃপক্ষের নকদর্পণে থাকলেও, নিচ্ছেনা কোনো আইনী স্হায়ী ব্যবস্থা। মধ্যনগর বাজারে প্রায়েই দেখা যায় যে, প্রশাসন কিছু দিন পরপরই উচ্ছেদ অভিযান শুরু করেন। অথচ প্রশাসন প্রথম একদিন অভিযান পরিচালনা করলেও,পরেরদিনই দুম্রাজালে আটকা পরে উচ্ছেদ অভিযানটি থেমে যায়। উচ্ছেদ অভিযানের সফলতা না হওয়ার বাধা কোথায় জানতে চায় এলাকার সাধারণ মানুষ। যেখানে ঐতিহ্যেবাহী মধ্যনগর বাজারের উৎপত্তি হয়েছিল যে-ই পুকুরটির মাটি দিয়ে, সে-ই কালের সাক্ষী পুকুরটি অযত্নে অবহেলায় পড়ে থাকায়,প্রায় অর্ধেকেরেও বেশি পুকুরের জায়গা জবরদখলে নিয়ে যায় একটি স্বার্থান্বেষী মহল। সেই গৌরীপুর জমিদার বীরেন্দ্র কিশোর এর দেওয়া ২ একর জায়গা জুড়ে পুকুরটি স্থাপনা হয়েছিল ভরপুর ছিল প্রাকৃতিক সৌন্দর্য । বর্তমানে দখল করেছে অনেক তীরবর্তী অসাধু লোভী মানুষেরা। এছাড়াও ভূমি অফিসের সামনে প্রায় ১ একরের উর্ধ্বে সরকারের জায়গা অনেকেই অবৈধ দখল করেছে । এছাড়া পাবলিক বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে থেকে, থানার সামনে পর্যন্ত প্রায় ২০ একর সরকারের খাস জায়গা প্রভাবশালীরা দখলে নিয়ে গেছে। বাজার ঘেষা উব্দাখালী নদীর পাড়ের সিকস্তি প্রায় শতাধিক লোকজন অবৈধভাবে দখল করেছে। আরও জানা গেছে, গ্রাম অঞ্চলের হাওরে শত শত একর খাস জমি ভোগদখল করছেন ধনী প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। প্রকৃত ভূমিহীনরা আওদ খাস জমির মালিক বা ভোগদখল করতে দেখা যায়না। এমতাবস্থায় দেশের সংস্কারের পাশাপাশি ভূমি সংস্কার একান্ত জরুরী বলে মনে করছেন এলাকার সচেতন মহল। ভূমিহীনদের বন্দোবস্তের জায়গা অথবা ডিসি খতিয়ানের খাস জায়গা ধন্যাঠ্য ব্যক্তিদের জবরদখল অথবা ভোগদখল করতে না দেওয়ার জন্য, আইনি উদ্যোগ নেওয়ার দাবী তুলেছেন এলাকাবাসী।