নিজস্ব প্রতিবেদকঃ শাহরাস্তি উপজেলার দহশ্রী মিয়াজি বাড়ী জামে মসজিদের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটি আসলে ব্যক্তিগত প্রতিহিংসার একটি সামাজিক রু বলে মনে করেন স্থানীয়রা। প্রত্যক্ষদর্শী একজন মুসল্লী বলেন গ্রামের আলোচিত জাকির হোসেন মিন্টু নামের ব্যক্তি হঠাৎ করেই অনেক অর্থের মালিক বনে যান এবং এই অর্থ নিয়ে বাড়িতে এসে তিনি সামাজিক প্রতিপত্তির অর্জনের লক্ষ্যে সবরকম কর্মকাণ্ড চালাচ্ছেন।
মসজিদের দুই লক্ষ টাকা অনুদান গ্রহণের জন্য গঠিত কমিটি থেকে তার পিতা আমির হোসেন বাদ পড়া থেকে শুরু করে, মসজিদের পিলারের জন্য জাকির হোসেন মিন্টুর চল্লিশ হাজার টাকা দাবী করা কাজ পার্শ্ববর্তী বাড়ীর ইকবাল ১৫০০ টাকায় করে দেওয়া এবং নির্বাচন কেন্দ্রীক তাদের সমর্থিত প্রার্থি হেরে যাওয়া সহ ব্যক্তিগত সব প্রতিহিংসাকে সামাজিক রুপ দিয়ে সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেন জাকির হোসেন মিন্টু সহ তার পরিবার।
দহশ্রী মিয়াজি বাড়ি জামে মসজিদের পূর্বের স্থায়ী কমিটির দায়ীত্বশীল ব্যক্তিগণ বিভিন্ন অপবাদে অতিষ্ট হয়ে মসজিদের সকল কর্মকান্ড থেকে অব্যাহতি চেয়ে নেন।
তারপরেই নাটকীয়ভাবে অস্থায়ী কমিটি হিসেবে২০২১ এর শুরুর দিক থেকে জাকির হোসেন মিন্টু এবং তার পিতা আমির হোসেন ও চাচা আলি হোসেন নিজেরাই নিজেদের মতো করে দায়িত্ব পালন শুরু করেন।
তাদের দায়িত্ব পালনের প্রায় ১১ মাস সময়ে তারা অন্ধের মতো ক্ষমতার অপপ্রয়োগ ঘটায় মসজিদ এবং সামাজিক কাজে। ঈমামদের উপরে খবরদারি করা, ইচ্ছামতো ঈমাম নিয়োগ করা, মসজিদে অশালীন আচরণসহ ক্ষমতার বলে যা করা যায়, তাই করেছে তারা।
সর্বশেষ ২০২২ সালের রমজান মাসে ব্যক্তিগত শত্রুতার জের ধরে পাশের বাড়ির মুসল্লিদের অন্য সমাজের নির্লজ্জ মানুষ বলে অপমান করে বের করে দেন জাকির হোসেন মিন্টু এবং তার পরিবার। এবং এই রমজান মাসেই দুইজন ঈমাম সমানভাবে তারাবি পড়ালেও তাদের ব্যক্তিগত পছন্দ বিবেচনায় একজনকে ৩,০০০ টাকা এবং অন্যজনকে ৭,০০০ টাকা দিয়ে বিদায় করেন। এতে করে যেই ঈমাম কম পেয়েছেন তিনি মনোক্ষুন্ন হয়ে দুঃখ প্রকাশ করায় ইকবাল হোসেন সহ সচেতন কয়েকজন এ ব্যাপারে প্রতিবাদ করেন। কিন্তু তারা কাউকেই পাত্তা দেননি কখনো।
এসব এলোমেলো পরিচালনা এবং চাপিয়ে দেওয়া ব্যক্তিগত প্রতিহিংসা লক্ষ্য করে সবাই একটা স্থায়ী কমিটির গুরুত্ব উপলব্ধি করেন।
ঈদুল ফিতরের জামা’ত শেষ হলে অস্থায়ী কমিটি মসজদের যাবতীয় হিসাব তুলে ধরেন এবং তারপরে ইকবাল হোসেন অস্থায়ী কমিটির এতকিছুর পরেও তাদের কাজের জন্য ধন্যবাদ দিয়ে একটি স্থায়ী কমিটির গুরুত্ব তুলে ধরেন। তার কথা শেষ হলে একই বাড়ীর মো: মিনহাজুল ইসলাম ১৯৬২ সালের ওয়াকফ আইন অনুযায়ী ওয়াকফকৃত সম্পত্তির একজন মুতাওয়াল্লির গুরুত্ব তুলে ধরেন। বাংলাদেশ ওয়াকফ স্টেটের নিয়ম অনুযায়ী মুতাওয়াল্লি আহবায়ক কমিটি ডাক দেওয়ার মাধ্যমে মূল কমিটি গঠন করার আহবান জানালে প্রতিবারের মতো জাকির হোসেন মিন্টু এবং তার পরিবার আপত্তি প্রকাশ করেন এবং এ বিষয়ে কথা বাড়াতে নিষেধ করেন সকলের সম্মুখেই। পরে ইকবাল হোসেন আবার দাড়িয়ে এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলে জাকির হোসেন মিন্টু, তার ছোট ভাই এবং তার পিতার সাথে একবাল হোসেনের বাক বিতর্কের জের ধরে তাদের পুরো পরিবারসহ আরো কয়েকজন ইকবাল হোসেন কে মসজিদের ভেতরেই মারতে আসেন। উপস্থিত মুসল্লিরা পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা করলেও আক্তার হোসেন (মিন্টুর চাচাতো ভাই) সহ আরো কয়জন মিলে ইকবাল হোসেনের পিতা নুরুল ইসলাম কে মারধোর শুরু করেন। একপক্ষের এমন আক্রমণে মিয়াজি বাড়ির মুসল্লিগণ সবাই হতভম্ভ হয়ে যান। পরে ঈমাম সাহেবের সহযোগিতাত জাহাংগীর হোসেন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
পরবর্তীতে ঈদের দিনের বিভৎস ঘটনার ব্যাপারে জাহাঙ্গীর হোসেন ওয়ার্ড মেম্বারকে অবহিত করেন এবং আপাতত চলমান সমস্যা সমাধান না হওয়া পর্যন্ত মেম্বারকে জনগণের প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার অনুরোধ করলে মেম্বার খোরশেদ আলম সকলের উপস্থিতিতে মীমাংসা করার প্রস্তাব দেন এবং যেইসকল পরিবার সমাজের চলমান বিশৃঙ্খলার জন্য দায়ী তাদেরকে আপাতত মসজিদে এসকল বিষয়ে কথা না বলার প্রস্তাব দেন। এবং উক্ত বিষয়ে জাহাঙ্গীর হোসেন কথা বলতে গেলে আমীর হোসেনের পরিবারের কথা আসলেই আমির হোসেনের মেঝো ছেলে মামুন হোসেন জাহাঙ্গীর হোসেনের সাথে অশালীন ভাষায় কথা বলা শুরু করেন। জাহাঙ্গীর হোসেন সন্তানতুল্য মামুন হোসেনকে বসতে বললে তিনি অগ্রাহ্য করেন এবং মসজিদের একজন মুসল্লি মামুন হোসেনকে থামতে বললে তার ভাই জামিল হোসেন এবং চাচাতো ভাইরা সবাই দাড়িয়ে যান এবং দৌড়ে আসেন। তারপর দুই বাড়ীর মধ্যে মারামারির সৃষ্টি হয়। এই ঘটনায় জাকির হোসেন মিন্টুর পরিবারের কেউই আহত হয়নি কিন্তু তাদের বাড়ীর ২/১ জন আহত হয়। এবং জাকির হোসেন মিন্টু এই ঘটনাকে নাটকীয় রুপ দেওয়ার জন্য কয়েকজনকে হাসপাতালে পাঠান মৃতের মতো শয্যাশায়ী করে ০৪ জনের ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে দেন। স্থানীয় ইউপি সদস্য ঘটনাটি শুনে তাৎক্ষণিক ওখানে গিয়ে মীমাংসা করতে গেলে উনি সেখানে লাঞ্ছিত হন। পরে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওখানে যান এবং সবাইকে শান্ত থাকতে বলেন ঘটনাটি নিয়ে এখনও সবার মাঝে চাপা ক্ষোভ কাজ করছেও উত্তেজনা বিরাজ করছে।
আপনার মতামত লিখুন :