রাসেল সরকারঃ কাঁচাবাজারসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতির ফলে সাধারণ মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই। তারা দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে সংসার চালাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে, স্বল্প আয়ের মানুষের হাসি-কান্না অনেকটাই নির্ভর করে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যের উপর। মূল্য কম থাকলে অথবা নিয়ন্ত্রণে থাকলে পেট ভরে দু’মুঠো খাওয়া যায়। দ্রব্যমূল্যের মূল্য লাগাম ছাড়া হলে অনেক সময়ই না খেয়ে কাটাতে হয় স্বল্প আয়ের মানুষদের। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য মূল্যের লাগমহীন ঊর্ধ্বগতির ফলে দেশে এমন এক অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে যে, সাধারণ মানুষ প্রশ্ন করতেও সাহস পাচ্ছে না। গরিব মানুষের নাভিশ্বাস অবস্থা। বলা চলে দেশে নীরব দুর্ভিক্ষ চলছে।
শুধু খাবার নয় ওষুধের দামও এখন সাধারণের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে। অর্থাৎ যে ওষুধটির দাম আগে ৫ টাকা ছিল এখন তা ৭ থেকে ৮ টাকা। ধনীরা সকালে ও রাতে সাধারণত ভাত খায় না। রুটিসহ অন্যান্য খাবার খায়। কাজেই চালের দাম বৃদ্ধি পেলে তাদের কোনো সমস্যা নেই। সমস্যা হলো গরিব মানুষের। আর বাজার নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়েছে সরকারের ব্যর্থ নীতির কারণেই। নিত্যপণ্যমূল্যের পাগলা ঘোড়ার মতো চলতে শুরু করার কারণেই সমাজে অরাজকতা সৃষ্টি হচ্ছে, সব ক্ষেত্রেই লুটপাট চলছে। এটা বন্ধ করতে হবে। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে মূল্যস্ফীতির চাপে দিশেহারা মানুষ খাদ্য তালিকা থেকে পুষ্টিকর খাবার বাদ দিতে বাধ্য হচ্ছেন। এ অবস্থা চলতে থাকলে দেশের বিপুলসংখ্যক মানুষ পুষ্টিহীনতার শিকার হতে বাধ্য।
বিদ্যমান পরিস্থিতিতে নিত্যপণ্যের ক্ষেত্রে অল্প সময়ের ব্যবধানে আমদানী নির্ভরতা কমানোর কাজটি কঠিন। বৈশ্বিক পরিস্থিতি ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবসহ আরও বিভিন্ন কারণে বিশ্ববাজারে খাদ্যপণ্যের দামে অস্থিরতা বিরাজ করছে। কাজেই জ্বালানিসহ বিভিন্ন পণ্যের ওপর আমদানিনির্ভরতা ধাপে ধাপে কমানোর পদক্ষেপ নিতে হবে। ভবিষ্যতে পণ্যের বিশ্ববাজার পরিস্থিতি যতই স্বাভাবিক হয়ে আসুক না কেন এবং দেশে উৎপাদন যতই বৃদ্ধি পাক না কেন, বাজার তদারকি সংস্থাগুলোর তৎপরতা না থাকলে ভোক্তাদের দুর্বিষহ কষ্টের অবসান হবে না। যেহেতু বাজার তদারকি সংস্থার কোনো কোনা সদস্যের সঙ্গে অসাধু ব্যবসায়ীদের যোগসাজশের বিষয়টি আলোচনায় এসেছে, সেহেতু এক্ষেত্রে দুর্নীতি নির্মূলে সরকারকে এখনই জোরালো পদক্ষেপ নিতে হবে।
লেখক: এম রাসেল সরকার
সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী।
আপনার মতামত লিখুন :