নিজস্ব প্রতিবেদক, লক্ষ্মীপুরঃ লক্ষ্মীপুরের ১৮নং কুশাখালী ইউনিয়নে জহির গং এর হাত থেকে নিষ্কৃতি পেতে চান শান্তি এলাকাবাসী।
অনুসন্ধান জানা যায়, জহির গং বর্তমান সময়ে কুশাখালীর ৬ নং ওয়ার্ডস্হ পশ্চিম কুশাখালীতে আধিপত্য বিস্তার করে একটি সক্রিয় কিশোর গ্যাং তৈরির মাধ্যমে চুরি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, জুয়া, নেশাগ্রস্থ বিভিন্ন সামগ্রীর একমাত্র অধিনায়ক সে। বিভিন্ন মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে দীর্ঘদিন ধরে লক্ষ্মীপুর জেলা কারাগারসহ বিভিন্ন জেলা কারাগারে বদলী হওয়ায় দাগী, সন্ত্রাসী, চোরা চালান কারবারীসহ অপরাধ চক্রের সঙ্গে বিশাল এক সখ্যতা গড়ে ওঠে। আর এই সুবাধে জেল হতে মুক্তি পেয়ে নিজ এলাকায় ফিরে এসে এমন কোন অপরাধ নেই যা জহির করছেনা
পুলিশ প্রশাসনের চোখে ধুলো দিয়ে দিনের পর দিন এসব অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসী।
জহির পশ্চিম কুশাখালীর মৃত মোস্তফা মিয়ার ছেলে।আগে ব্রিক ফিল্ডের মাঝি থাকলেও বিভিন্ন ব্রিক কোম্পানির সঙ্গে প্রতারনা করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে পলায়ন করায় বেশ কয়েকটি চেক ডিজনার মামলাও হয়েছে তার বিরুদ্ধে। প্রতারণার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়ে দীর্ঘ মেয়াদী সাজা খেটেছে বলে ও জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
জেল থেকে বেরিয়ে এসে সাইনবোর্ড হিসেবে ব্যবহার করছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগকে।কিছুদিন শ্রমিক লীগের ব্যানারে কোনদিন যুবলীগের ব্যানারে কখনও সে আওয়ামী লীগের ব্যানারে থেকে পদ পদবীতে আছে বলে পরিচয় দিয়ে তার কার্যসিদ্ধি হাসিল করছে। এলাকায় রয়েছে তার একটি শক্ত কিশোর গ্যাং যাদের দিয়ে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে ভয়ভীতি প্রদর্শন করায় উক্ত কিশোর গ্যাং আবার ছাত্র লীগের পরিচয় দিয়ে অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। এদের বিরুদ্ধে স্হানীয় পুলিশ ফাঁড়িতে অভিযোগ করলেও তেমন লাভ হয়না। কারন কোন না কোন নেতাকে দিয়ে হ্যালোর মাধ্যমে অপরাধ ঢেকে ফেলে। এরপর অভিযোগ কারীর উপর চলে স্টিম রোলার। মান সম্মান বাঁচাতে ও জীবনের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়না বলেও জানান এলাকাবাসী।
এদিকে জহিরগং এর এলাকাটি কিছুটা নিরবিচ্ছিন্ন। ফাঁকা বিলান এলাকায় তার বসবাস হওয়ায় কোন অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ প্রশাসন ঢোকার আগেই সোর্সের মাধ্যমে খবর পৌঁছে যায় তার কাছে। জহির মাঝির নিকটতম সোর্স তার আপন বোন পাখি বেগম ও ভাগিনা রাজিব ওরফে জুয়ারী রাজিব। এদের রয়েছে একটা চায়ের দোকান। এই দোকানটি জুয়ারিদের আড্ডাখানা।
বেশ কয়েকবার পুলিশ অভিযান চালিয়ে জুয়ার টাকা, মোবাইল আটক করেছে দাসের হাট ফাঁড়ির পুলিশ। এ দোকানটিতে বর্তমানে মাদক সামগ্রী বিক্রি করছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।চোরাইকৃত দামী দামী মোবাইল সেট এখান থেকে কিনে নেয় দুর দুরান্ত হতে আগত লোকজন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যাক্তি জানান, কিশোর গ্যাং এর সদস্য মশিউর রহমানের ছেলে মামুন, আকছার মিয়ার ছেলে শাওনের কাছ থেকে বেশ কয়েকবার চোরাইকৃত মোবাইল উদ্ধার করেছে পুলিশ।
এদিকে বিশ্বস্ত একটি সুত্র নিশ্চিত করেছে জহির প্রকাশ জহির মাঝির হাতে থাকা মুঠোফোন যার নাম্বার ০১৮১৮৫৫৩৭৫২ এবং ০১৭১০১১৬৯৮৭ দিয়ে বিভিন্ন লোককে ভুয়া সাংবাদিক ও পুলিশ পরিচয়ে কখনও বা জ্বীনের বাদশা পরিচয়ে বিকাশের মাধ্যমে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এই নাম্বার দুটো ট্রাকিং করলে তার অপরাধ প্রবনতা বেড়িয়ে আসবে বলে মনে করছেন অনেকে। প্রশাসনের নিরপেক্ষ তদন্তে বেরিয়ে আসবে জহির মাঝির অপরাধের বহু ঘটনা।
অত্র ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছালেহউদ্দিন মানিক বলেন, জহির মাঝি একজন পেশাদার চিটিংবাজ। সে আমাকেও ব্লাকমেইল করেছে। তৈয়ব চৌধুরী চেয়ারম্যান বাড়ীর সামনে মাইজদী-ভবানীগন্জ মহাসড়কের কিছু অংশ মেরামত করবে বলে আমার কাছ থেকে নগদ ১০,০০০ (দশ হাজার টাকা) নেয়।পরবর্তীতে গিয়ে দেখি ওখানে কাজ না করে সেই টাকা মেরে দিয়েছে। চেয়ারম্যান আরও বলেন, জহির মাঝির বিরুদ্ধে এলাকা থেকে অনেক অভিযোগ আসে কিন্তু তাকে খবর দিলে সে আাসে না বরং বিভিন্ন মারফতে হুমকি দিয়ে থাকে।
তার হাত থেকে নিষ্কৃতি পেতে লক্ষ্মীপুরের পুলিশ সুপার বরাবর নালিশী অভিযোগ করবেন বলে স্হানীয় এলাকাবাসী আমাকে জানিয়েছেন।