মোস্তাইন বীন ইদ্রিস চঞ্চল,তৈয়ব আলী পর্বত,খুলনাঃ র্যাব-৬ (সদর কোম্পানি) এর একটি চৌকস আভিযানিক দল গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, একটি সংঘবদ্ধ চক্র দীর্ঘদিন যাবৎ অবৈধ লাভের আশায় নকল টাকা (জাল টাকা) তৈরি করে সেগুলো দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে প্রতারিত করে বিপুল অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে এবং দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক ব্যাবস্থাপনাকে বিপর্যস্ত করছে৷ উক্ত তথ্যের প্রেক্ষিতে ঘটনার সত্যতা যাচাই ও আসামীদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে র্যাব-৬ (সদর কোম্পানি) এর একটি আভিযানিক দল ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং সংঘবদ্ধ চক্রটিকে গ্রেফতারের মাধ্যমে আইনের আওতায় আনতে গোয়েন্দা তৎপরতা অব্যাহত রাখে। এরই ধারাবাহিকতায় ০৯ জানুয়ারি ২০২৩ তারিখ র্যাব-৬ (সদর কোম্পানি) এর একটি অভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, জালনোট তৈরির সংঘবদ্ধ চক্রের কয়েকজন সদস্য খুলনা মহানগরীর আড়ংঘাটা থানা এলাকায় অবস্থানের সংবাদ প্রাপ্তির ভিত্তিতে আভিযানিক দলটি একই তারিখ আনুমানিক ১৩.২০ ঘটিকার সময় শ্বাসরুদ্ধকর অভিযান পরিচালনা করে জাল টাকা তৈরি চক্রের মূলহোতা ১৷ মোঃ সাইফুল জামান(২৯), থানা-রূপসা, জেলা-খুলনা ও চক্রের অন্য এক সদস্য আসামী ২৷ মোঃ জাহিদুল ইসলাম(৫২), থানা-আড়ংঘাটা, জেলা-খুলনাদ্বয়কে গ্রেফতার করে। এ সময় উপস্থিত সাক্ষীদের সামনে আসামীদ্বয়ের হেফাজত হতে ১০ লক্ষ জাল টাকা (এক হাজার টাকার নোট) উদ্ধার করে। গ্রেফতারকৃত আসামীদ্বয়ের দেয়া স্বীকারোক্তিমূলে অদ্য ১০ জানুয়ারি ২০২৩ তারিখ আনুমানিক ০২.৩০ ঘটিকার সময় খুলনা জেলার ফুলতলা থানাধীন দামোদর সাহাপাড়া এলাকায় পরবর্তী অভিযান পরিচালনা করে ভাড়াকরা বসতবাড়ীর ভিতর জাল টাকা তৈরির কারখানার সন্ধান পাওয়া যায়। অভিযান পরিচালনা কালে উক্ত বসতবাড়ী হতে আরো ৪ লক্ষ ৮৩ হাজার জাল টাকা (এক হাজার টাকার নোট) পাওয়া যায় এবং জাল টাকা তৈরির সরমঞ্জামাদি প্রিন্টার ০২টি, লেমিনেটিং মেশিন ০১টি, জাল টাকা তৈরি ডাইস ০৭টি, ফেবিকলের আঠা ০২টি, হেয়ার ড্রায়ার ০১টি, জল ছাপ সম্বলিত কাগজ ৩০০পিস, কালার ফুলের সিল ২০টি, বিভিন্ন কালারের তরল রং ২০ বোতল, জাল টাকা তৈরির সাদা কাগজ ০২ কার্টুন উদ্ধার করা হয়। আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদকালে জানা যায় যে, উল্লেখিত সামগ্রীদ্বারা তারা আরো ২০ কোটি টাকার জাল নোট তৈরির পরিকল্পনা করেছিল। আসামীদের ভাষ্যমতে আরো জানা যায় যে, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে তাদের এজেন্টদের মাধ্যমে এই জাল নোট সমূহ সরবরাহ করা হয়। বিশেষ করে ঢাকায় অনুষ্ঠিত বানিজ্যমেলা সহ বিভিন্ন শীতকালীন মেলা এবং কোরবানির সময় গরুর হাটকে টার্গেট করে এই বিপুল পরিমান জাল টাকা তৈরির লক্ষ্য নির্ধারণ করে। উদ্ধারকৃত মোট ১৪ লক্ষ ৮৩ হাজার জাল টাকা, অন্যান্য আলামত ও গ্রেফতারকৃত আসামীদ্বয়কে থানায় হস্তান্তর করতঃ আসামীদ্বয়ের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করার কাজ প্রক্রিয়াধীন।
আপনার মতামত লিখুন :