
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, বিয়েবাড়ির মতো করে শামিয়ানা ও প্যান্ডেল সাজিয়ে বিরিয়ানি পরিবেশন করা হচ্ছে। দূরদূরান্ত থেকে দলবেঁধে মানুষ এসে চেয়ার-টেবিলে বসে বিরিয়ানি খাচ্ছে। প্যান্ডেলের পাশে চুলোয় ডেগ বসিয়ে একের পর এক বিরিয়ানি রান্না হচ্ছে। এর পাশেই ‘আসলাম বিরিয়ানি হাউস’ নামের দোকানে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। মূলত সেখান থেকে ফুল প্লেট বিরিয়ানি ৩০০ টাকা, হাফ প্লেট বিরিয়ানি ২০০ টাকা এবং কোয়াটার প্লেট বিরিয়ানি ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এর সঙ্গে সালাদ দেওয়া হচ্ছে। দূরদূরান্ত থেকে বিরিয়ানি খেতে আসা লোকজন বেশ আয়েশ করে প্যান্ডেলে বসে বিরিয়ানি খাচ্ছে।
শহরের সৈয়দপুর এলাকা থেকে বিরিয়ানি খেতে এসেছেন জিহাদ হোসেন। তিনি বলেন, বিরিয়ানির খাবারের স্বাদ অনেক ভালো। প্রতি প্লেটে ১৫-১৬টি মাংসের টুকরো দেওয়া হয়। খাবারের পরিমাণও অনেকে বেশি। এক প্লেট খাবার খেলে একজন মানুষের পেট ভরে যাবে।
প্যান্ডেলের ভেতরে চেয়ার ফাঁকা না পেয়ে পাশের একটি অটোরিকশায় বসে বিরিয়ানি খাচ্ছেন ইয়াজ আহমেদ। তিনি বলেন, ২০০ টাকার মধ্যে খুব ভালো বিরিয়ানি খেতে পারছি। তা ছাড়া স্বাদের দিক থেকে খুব ভালো। সে কারণে সুদূর মেঘনা থেকে এই বন্দরে বিরিয়ানি খেতে এসেছি। বিরিয়ানির দোকান ও পাশের প্যান্ডেলে বসার সুযোগ না পেয়ে অটোরিকশায় বসে বিরিয়ানি খাচ্ছি।
বিরিয়ানি তৈরির বাবুর্চি মো. সামসুদ্দিন বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠানের মালিক ও প্রধান বাবুর্চি আসলাম ভাইয়ের হাতে জোস রয়েছে। তার হাতে তৈরি খাবার বেশ সুস্বাদু হয়। আর বিরিয়ানি তৈরিতে স্বাভাবিক সব মসলা ব্যবহার করা হয়। এখানে ব্যতিক্রম কিছু নেই। সকাল ৬টা থেকে রান্নার কাজ শুরু হয়ে বিকেল পর্যন্ত রান্নার কাজ চলে।
আসলাম বিরিয়ানি হাউস এর মালিক ও বাবুর্চি আসলাম মিয়া বলেন, আমার দোকানে খাবারের স্বাদ ও মান ভালো হওয়ায় সবসময় ক্রেতাদের ভিড় থাকে। ক্রেতাদের চাপ বেশি থাকায় দোকানের পাশে শামিয়ানা ও প্যান্ডেল টানিয়ে চেয়ার-টেবিলে খাবার পরিবেশন করা হয়। কেউ সরাসরি এসে বসে খায় আবার কেউ পার্সেল নিয়ে যায়।
তিনি আরো বলেন, প্রতিদিন ৫-৭ ডেগ বিরিয়ানি রান্না করে বিক্রি করা হয়। ছোট ডেগের মধ্যে ৩৫ কেজি গরুর মাংস ও ২২ কেজি বিরিয়ানির চাল এবং বড় ডেগে ৪০ কেজি গরুর মাংস ও ২৩ কেজি চাল দিয়ে রান্না করা হয়। প্রতিদিন ৪-৫ মণ গরুর মাংসের প্রয়োজন হয়। তিনজন বাবুর্চি ও ৯ জন স্টাফ প্রতিদিন সকাল ৬টায় গরুর মাংস কাটা থেকে শুরু করে বিরিয়ানি রান্নার সব কার্যক্রম ক্রেতাদের সামনে সম্পন্ন করে। মানসম্মত সব উপদান দিয়ে সুস্বাদু বিরিয়ানি দিয়ে তৈরি করা হয়। যে কারণে ক্রেতাদের ভিড় বেশি থাকে।
তিনি আরও বলেন, প্রতিদিন গড়ে ১ লাখ ৬০ হাজার থেকে ১ লাখ ৯০ হাজার টাকার বিরিয়ানি বেচা বিক্রি হয়। ১৯৯৮ সাল থেকে বিরিয়ানির ব্যবসা শুরু করেছি। ওই সময় মাত্র তিন কেজি চালের বিরিয়ানি প্রতিদিন বিক্রি করা হতো। আর এখন সেই পরিমাণ অনেক বেড়ে গেছে। সীমিত লাভে বিরিয়ানি বিক্রি করায় ক্রেতাদের ভিড় সব সময় থাকে।
আপনার মতামত লিখুন :