• ঢাকা
  • শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:০২ পূর্বাহ্ন

মোংলায় চলছে অবৈধ নৌযান, বাড়ছে দুর্ঘটনা


প্রকাশের সময় : অক্টোবর ১৯, ২০২২, ১২:৩১ পূর্বাহ্ন / ৭৪
মোংলায় চলছে অবৈধ নৌযান, বাড়ছে দুর্ঘটনা

মোস্তাইন বীন ইদ্রিস (চঞ্চল),খুলনা: বাগেরহাটের মোংলা বন্দরের পশুর চ্যানেল দিয়ে চলছে অবৈধ নৌযান। সার্ভে সনদ ছাড়াই এসব নৌযান চলছে বাধাহীনভাবে। এতে বাড়ছে দুর্ঘটনা। গত ১৫ নভেম্বর রাতে ডুবে যায় কয়লাবোঝাই বাল্কহেড ফারদিন-১। এ নিয়ে গত ১১ মাসে এই বন্দরের চ্যানেলে ডুবেছে পাঁচটি নৌযান। দুর্ঘটনার শিকার এ সব নৌযানের কোনোটিরই ছিল না নৌ পরিবহন অধিদফতরের সার্ভে সনদ।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাস্টার ও সচিব কমান্ডার শেখ ফখর উদ্দিন জানান, ১৫ নভেম্বর ডুবে যাওয়া ফারদিন-১ নামে বাল্কহেডটির সার্ভে সনদ ছিল না। একই সঙ্গে আমদানি পণ্য পরিবহনের অনুমতিও নেই। বেআইনিভাবে চলাচলের কারণে দুর্ঘটনার শিকার বাল্কহেডটিকে পনেরো দিনের মধ্যে বন্দর চ্যানেল থেকে ওঠাতে মালিককে চিঠি দেওয়া হয়েছে। বন্দরের নিরাপদ নৌ চ্যানেলের স্বার্থে জরুরি ভিত্তিতে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, মোংলা বন্দর চ্যানেলে চলতি বছরে পাঁচটি নৌযান ডুবেছে। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি ৭৫০ মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে ডোবে এম ভি বিবি-১১৪৮। ৩০ মার্চ ৫১০ মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে ডোবে এম ভি ইফসিয়া মাহিন। ৮ অক্টোবর এক হাজার ২০০ মেট্রিক টন পাথর নিয়ে ডোবে এম ভি বিউটি অব লোহাগড়া-২। একই দিন ৮৫২ মেট্রিক টন ড্যাপ সার নিয়ে ডোবে এম ভি দেশ বন্ধু। ১৫ নভেম্বর ৩৭০ মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে ডোবে ফারদিন-১ বাল্ডহেড।

পিরোজপুরের স্বরূপকাঠী এলাকার বাসিন্দা ফজলুল হক খোকন বলেন, ইতোমধ্যে নৌযানটি উত্তোলন করতে কাজ শুরু করা হয়েছে। তিনি বলেন, এক সপ্তাহের মধ্যেই এম ভি ফারদিন-১ উঠানো সম্ভব হবে।

নৌ পরিবহন অধিদফতরের (ডিজি শিপিং) পরিচালক বদরুল হাসান লিটন বলেন, পণ্য পরিবহনের জন্য বিভিন্ন নৌযানের সার্ভে ও রেজিস্ট্রেশন দেওয়া হয়। কিন্তু যেসব নৌযান সার্ভে সনদ না নিয়ে নদীতে চলাচল করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান রয়েছে। তিনি জানান, পুলিশ, কোস্টগার্ড, বন্দর কর্তৃপক্ষ ও বিআইডব্লিউটিএ অবৈধভাবে চলা নৌযানের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে মেরিন কোর্টে মামলা দিতে পারে। আর সার্ভে সনদ না থাকা নৌযানের বিরুদ্ধে ৩৩ ধারায় ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান রয়েছে।

এদিকে, জাহাজের ধাক্কায় কয়লাবাহী বাল্কহেড ডুবির ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ। সহকারী হারবার মাস্টার আমিনুর রহমানকে প্রধান করে এ কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন, মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের সিনিয়র পাইলট রিয়াজুর রহমান ও নির্বাহী প্রকৌশলী (নৌ নির্মাণ) অনুপ চক্রবর্তী।

উল্লেখ্য, ১৫ নভেম্বর রাতে বন্দরে অবস্থানরত এলিনা বি জাহাজ থেকে কয়লা নিয়ে ঢাকায় যাচ্ছিল বাল্কহেড ফারদিন-১। রাত সাড়ে ৯টার দিকে পণ্য খালাস শেষে বন্দর ত্যাগের সময় হ্যান্ডিপার্ক মাদার ভেসেল জাহাজ ফারদিন-১ বাল্কহেডটিকে ধাক্কা দেয়। এরপর ধীরে ধীরে বাল্কহেডটি ডুবে যায়। বাল্কহেড থেকে দুই জনকে জীবিত এবং তিন জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এখনও নিখোঁজ রয়েছেন দুই জন।