• ঢাকা
  • রবিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:৩৯ পূর্বাহ্ন

মাদারীপুরে মামলা থেকে রেহাই পেতে সংবাদ সম্মেলন


প্রকাশের সময় : মার্চ ১১, ২০২৩, ১১:৪০ অপরাহ্ন / ৬৬
মাদারীপুরে মামলা থেকে রেহাই পেতে সংবাদ সম্মেলন

নিজস্ব প্রতিবেদক, মাদারীপুরঃ মাদারীপুরে হত্যা মামলাকে অন্যদিকে প্রবাহিত করার লক্ষ্যে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলা থেকে রেহাই পেতে ও সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের শাস্তির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন এলাকাবাসী।

শনিবার সকালে মাদারীপুর সাংবাদিক কল্যান সমিতি অফিসে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলার আসামিরা এবং এলাকাবাসী মিলে এ সংবাদ সম্মেলন করেন।

এ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ৪৪নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক আবদুল সালাম বেপারী।

তিনি বলেন, ১৯৯৩ সালের মে মাসে দিকে কালিকাপুর ইউনিয়নের হোসেনাবাদ গ্রামের আবদুল রাজ্জাক বেপারীকে প্রকল্পিত ভাবে খুন করেন মোঃ এজাজ আকন ও লোকজনেরা। এর কয়েকদিন পরে কালিকাপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হন।এর পর থেকেই সে বেপরোয়া হয়ে ওঠেন।চেয়ারম্যান হওয়ার পরে তার লোকজনেরা লুটপাট, চাঁদাবাজি এবং মানুষের ভাতের পাতিলে প্রসাব করার মত জঘন্য কাজগুলো করে চলতো। এ নিয়ে প্রতিবাদ শুরু করেন আওয়ামী লীগ নেতা সাহেব আলী মাতুব্বর। কিন্তু কোনমতেই তার সাথে আতাত করতে না পেরে হিংস হয়ে ওঠেন চেয়ারম্যান ও লোকজনেরা।পরে পাঁচখোলা এলাকার মাসুদ মোল্লার লোকজনের সাথে সম্পর্ক তৈরি করেন সাহেব আলীকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে। পরে ২০১৯ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি সকাল নয়টার দিকে আনন্দ বাজারের পাশে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করেন।

পরবর্তীতে ১ মার্চ সাহেব আলী মাতুব্বরকে হত্যায় পরিবারের লোকজন হত্যা মামলা দায়ের করেন। বর্তমানে মামলাটি আদালতে বিচারাধীন অবস্থায় রয়েছে পরবর্তীতে সাহেব আলীর হত্যা মামলার বাদির পরিবারকে মামলা তোলার জন্য চাপ প্রয়োগ করে ব্যর্থ হন। সাহেব আলী খুনের ৬নং আসামী ছিলেন আউয়াল মাতুব্বর। পরে আউয়াল মাতুব্বর ১৬৪ ধারা ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট তারা জবববন্দি প্রধান করেন তারা এজাজ আকনের হুকুমে সাহেব আলী মাতুব্বরকে খুন করেছে। ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে এই জবানবন্দী দেওয়ায় কারনে ক্ষোভ সৃষ্টি হয় এজাজ আকন ও তার লোকজনের মাঝে।তারপরে গত ২ ফেব্রুয়ারির দিকে আউয়াল মাতুব্বরকে চায়ের দোকান থেকে ফোনে ডেকে নিয়ে আনন্দ বাজারের রাস্তার পাশে কুপিয়ে রেখে চলে যায়। স্হানীয় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করলে সেখানে আউয়াল মাতুব্বরের চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

তিনি আরও বলেন, আওয়াল মাতুব্বরকে রাজ্জাক ঘরামীর মাধ্যমে ফোন করে ডেকে নিয়ে এই হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে।তারা এখন নিহতের স্ত্রী, মেয়ে ও ভাই, ভাতিজাগনকে আউয়াল মাতুব্বরকে কে বা কারা ফোন করে ডেকে নিয়ে হত্যা করেছে সেই মোবাইল ফোন কললিস্ট যাচাই ও জিজ্ঞাসাবাদ না করে।তারা মামলা করেছে ২০১৯ সালে আলোচিত সাহেব আলী মাতুব্বর হত্যা মামলার বাদির ছেলে মেয়ে ভাই, ভাতিজা, স্বাক্ষীগন, আত্মীয়-স্বজন ও তাদের দলবলের নামসহ ৫১ জনের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলা করে তাদের নিজেদের দোষ অন্যদিকে প্রবাহিত করার জন্য একাজ করছে। তারা মূলত সাহেব আলী হত্যা মামলার বিচারকে বাধাগ্রস্ত করতে আমাদের নামে মিথ্যা মামলা করেছে।

আমরা আউয়াল মাতুব্বরের হত্যা মামলার আসামী ৫১ একেবারে নিদোর্ষ।এই মিথ্যা ও ষড়যন্ত্র মূলক মামলা থেকে রেহাই পেতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে দাবি জানাচ্ছি। সেই সাথে এ ঘটনায় জড়িত প্রকৃত দোষীদের শাস্তির দাবি।

নিহত আউয়াল মাতুব্বরের স্ত্রী ফিরোজা বেগম বলেন, রাজ্জাক ঘরামীর মাধ্যমে ফোন করে ডেকে নিয়ে আমার স্বামীকে হত্যা করা হয়েছে।সরকার ও প্রশাসনের কাছে আমার একটা দাবি মোবাইল ফোনের কল লিস্ট দেখলে পাওয়া যেতে পারে।

নিহত সাহেব আলী মাতুব্বরের মেয়ে আসিয়া বেগম বলেন, আউয়াল মাতুব্বর আমার বাাব হত্যার ৬নং আসামী ছিলো সে পুলিশ ও প্রশাসনের কাছে জবানবন্দি দিয়েছে এজাজ আকনের হুকুমে তাকে হত্যা করেছে সে কারনে এজাজ আকন ও তার লোকজনেরা মিলে আউয়াল মাতুব্বরকে হত্যা করছে। তারা নিজেরা হত্যা করে এখন আমাদেরকে আসামী করছে। আমরা এর সঠিক বিচার চাই। আর সঠিক তদন্ত করে প্রকৃত আসামীদের আইনের আওতায় আনা জোর দাবি।

সংবাদ সম্মেলনে সাবেক চেয়ারম্যান আহসান মাতুব্বর বলেন, তারা বিগত একটি হত্যা করেছি সেই হত্যাকে চাপিয়ে রাখার জন্য এই হত্যা করেছে।এখন তারা আগের হত্যার বাদির পরিবার পরিজন আত্মীয়-স্বজন ও দলবললের লোকজনকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করতেছে।সঠিক তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের আইনের আওতায় আনার আহ্বান জানাচ্ছি সরকার ও পুলিশ প্রশাসনের কাছে।

সংবাদ সম্মেলনে আবদুস সালাম বেপারী,সাবেক চেয়ারম্যান আহসান মাতুব্বর, মামুন মাতুব্বর, আসিয়া,গোলাম আজম,আলেয়া বেগম ময়ূরী বেগমসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ এবং এলাকাবাসী উপস্থিত ছিলেন।