
নিজস্ব প্রতিবেদক, মাগুরাঃ পাটের জীবনকাল বেশি হওয়া , লম্বা ,পেঁচিয়ে যাওয়া ও ফলন কম হওয়ার কারণে মাগুরা জেলার শ্রীপুর উপজেলার পাট চাষীরা সরকারি বিএডিসি কর্তৃক দেওয়া পাট বীজ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন ।
পাট চাষের জমিতে চাষ করছেন না সরকারের দেওয়া বিএডিসির বীজ। চাষিরা ঝুঁকে পড়েছেন ভারতীয় এল সির মাধ্যমে আসা সেবায়ন জে,আর,ও ৫২৪ ,চক্র মার্কা জে আর ও ৫২৪, ও শঙ্খ মার্কা পাটের বীজের দিকে ।
এ মৌসুমে উপজেলায সর্বমোট ৯ হাজার একশত পঞ্চাশ হেক্টর জমিতে পাট চাষ করা হয়েছে ।
উপজেলার পাট চাষীরা সরকারিভাবে উপজেলা থেকে দুইটি মাধ্যমে পাটের বিজ ও রাসায়নিক সার পেয়ে থাকেন। প্রথমত উপজেলা কৃষি অফিস , দ্বিতীয় উপজেলা পাট অধিদপ্তরের অধীনে পাট অফিস থেকে। এ মৌসুমে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে এক কেজির ১৫শো ৩০ প্যাকেট ও পাট অফিস থেকে ২৪শ প্যাকেজ বীজ চাষীদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে ।
এ ব্যাপারে উপজেলার কমলাপুর গ্রামের কৃষক জামাল মোল্লা ও ঘাসিয়ারা গ্রামের বক্কার মোল্লার সাথে কথা হলে তারা জানায় , সরকারী বিএডিসির পাট বীজ জমিতে বপন করলে পাট দ্রুত বেড়ে অনেক লম্বা হয়ে যায় এবং লাল হয়ে যায় যা অত্যন্ত নরম এবং পাটের সাথে পাট পেচিয়ে যায় । আমরা সাধারণত যে সময় পাট কাটি সে সময় পাট কাটলে এর ফলন কম হয় । এবং পাট কাটতে অনেক ঝামেলা হয়, যে কারণে আমরা জমিতে এ পাট বিজ বপন করিনা । যারা উপজেলা থেকে এ বীজ আনে তারা শুধুমাত্র রাসায়নিক সার পাওয়ার জন্য ।
এ ব্যাপারে আরো একজন সচেতন কৃষক গোলাম আলী র সাথে আলাপ হলে তিনি জানান, প্রতিবছর বিএডিসির কৃষি মন্ত্রণালয় ও পাট অধিদপ্তর থেকে চাষীদের জন্য কোটি কোটি টাকার যে পাটবিজ বিতরণ করা হয় তা চাষীদের কোন কাজেই আসছে না ব্যাপারটি ভেবে দেখার সময় এসেছে ।
এ বিষয়ে কাদিরপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আইয়ুব খান বলেন সরকারি যে পাটের বীজ দেওয়া হয়,
এই বীজ কৃষকদের দেওয়ার জন্য মাইকিং করা হলেই,
অল্প কৃষক বীজ নিতে আসেন। বাকি বীজ গুলোর পকেট গোডাউনে পরে আছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ সালমা জাহান নিপা জানান , বিএ ডিসি কর্তৃক দেওয়া এ পাট বীজের জীবনকাল বেশি । অন্যান্য পাটের জীবনকাল সাধারণত ৯০ থেকে ৯৫ দিন হয়ে থাকে । আমরা বিএডিসি থেকে সরকারি যে বিজ দিয়ে থাকি সেটি জীবনকাল ১২০ থেকে ১২৫ দিন হয়ে থাকে । যে কারণে হয়তোবা চাষিরা এ বীজ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন ।
উপজেলা পাট কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাদ্দাম হোসেন জানান , এ বিজের প্রতি চাষীদের অনীহার কারণ যে এটি বপন করলে অন্যান্য পাটের তুলনায় আশ শক্ত হতে বেশি দিন সময় লাগে , চাষিরা তাদের জমিতে অন্য ফসল ফলানোর জন্য তাড়াতাড়ি পাটকেটে ফেলে, যে কারণে এ সমস্যা দেখা দেয় । যদি সময় মতো পাট কাটা যায় তাহলে অন্য পাটের তুলনায় এর ফলন বেশি হবে, এ ব্যাপারে চাষীদের নিয়ে আমারা কর্মশালা করার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি, আমরা চাষীদের বোঝানোর চেষ্টা করছি , কিন্তু কোন ফল পাওয়া যায়নি ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে ,সরকারি বিএডিসি থেকে যে পাটবিজ পাট চাষীদের মধ্যে বিতরণ করা হয়, তা চাষীরা বপন করেনা, ঘরেই রেখে দেন ।আর প্রণোদনা হিসেবে যে সার পাওয়া যায় তা দিয়ে অন্য জমিতে ব্যবহার করা হয় ।
আপনার মতামত লিখুন :