নিজস্ব প্রতিবেদক, ময়মনসিংহঃ ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে ময়মনসিংহ সদরের গোষ্টা পশ্চিমপাড়া বিল থেকে উদ্ধারকৃত গৃহবধু পুলিশ পত্নী মৌসুমী হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটনসহ আসামী গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
নিহতের হত্যাকারী স্বামী সুজন হাসানকে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশে কর্মরত অবস্থায় গ্রেফতার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার ভোরে নারায়ণগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা শাখা থেকে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। পরে তাকে আদালতে পাঠানো হলে স্বেচ্ছায় সে স্বীকারোক্তি মুলক জবানবন্দি দিয়েছে।
কোতোয়ালী মডেল থানার ওসি শাহ কামাল আকন্দ জানান, পহেলা মার্চ বুধবার দাপুনিয়া ইউনিয়নের গোষ্টা পশ্চিমপাড়া নলকুড়িয়া বিলে ধান ক্ষেতের পাশে অজ্ঞাতনামা মহিলার লাশ পড়ে থাকার সংবাদের ভিত্তিতে থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধারে নিহতের পরিচয় সনাক্ত করে।
নিহতের নাম মৌসুমী আক্তার (২৫)। সে ফুলবাড়িয়া উপজেলা চরকালিবাজাইল গ্রামের আমান উল্লাহর মেয়ে এবং মুক্তাগাছা উপজেলার সৈয়দ গ্রামের এছাহাক আলীর ছেলে পুলিশ কনস্টেবল সুজন হাসানের স্ত্রী।
এ ঘটনায় নিহতের বড় বোন আয়েশা আক্তার ওরফে শাহনাজ বাদী হয়ে এজাহার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সং/০৩) এর ১১(ক)/৩০ ধারায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
ওসি আরো বলেন, মামলাটি তদন্তকালে জানা যায় যে, আসামী সুজন হাসান বর্তমানে পুলিশ কনস্টেবল পদে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ লাইন্সে এ কর্মরত।
নিহতের পারিবারিক সুত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালে সুজন হাসান মৌসুমী আক্তারকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকেই যৌতুক সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে বিভিন্ন সময় বিরোধ চলছিল। এতে করে মৌসুমী বাদি হয়ে ২০১৯ সালে সুজন হাসানের বিরুদ্ধে আদালতে যৌতুক নিরোধ আইনে মামলা করেন। ঐ মামলায় স্বামী পুলিশ কন্সটেবল সুজন হাসান দুই মাস হাজত বাস করেন। পরবর্তীতে তাদের মধ্যে মীমাংসা হলে বাদী মৌসুমী মামলা তুলে নেয়। পরে আবারো যৌতুকের বিষয় নিয়া পুনরায় তাদের মধ্যে বিরোধ শুরু হয়।
এরই ধারাবাহিকতায় স্বামী সুুজন হাসান গত ২৮ ফেব্রুয়ারি রাতে তার শ্বশুরবাড়ি ফুলবাড়িয়ার চরকালিবাজাইলে যায়। ঐ রাতেই স্বামী সুজন তার স্ত্রী মৌসুমীকে নানা কৌশল ও ছলনা করে দাপুনিয়ার গোষ্টা পশ্চিমপাড়া নলকুড়িয়া বিলে ডেকে নিয়ে গলায় ওড়না পেচিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করিয়া হত্যা করে ধান ক্ষেতে লাশ ফেলে পালিয়ে যায়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই নিরুপম নাগ বলেন, বৃহস্পতিবার ভোরে সুজন হাসানকে তার কর্মস্থল নারায়ণগঞ্জ ডিবি থেকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তার হেফাজত থেকে কর্দমাক্ত জ্যাকেট উদ্ধার ও জব্দ করা হয়। বৃহস্পতিবার তাকে আদালতে পাঠানো হলে সুজন হাসান হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার দায় স্বিকার করে স্বেচ্ছায় জবানবন্দি দিয়েছেন।