এম রাসেল সরকারঃ রাজধানীর খিলগাঁও সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের নকল নবিশ (এক ধরনের দলিল লেখক) মোঃ রাসেল এখন বড় সাইজের কোটিপতি। দুর্নীতি আর অপকর্মের অলরাউন্ডার। বলে বলে চার ছক্কা। ভুমি অফিসের চাকুরী যেন আলাদিনের প্রদীপ। ঘষা দিলেই শুধুৃ ট্যাকাই ট্যাকা।
সরকারি হিসেবে মাসিক আয় সর্বোচ্চ কাজের ভিত্তিতের ২০ থেকে ২৫ হাজার। কোন মাসে পাঁচ হাজারও হয়। এই সীমিত আয়ের রাসেলের ঢাকায় গড়ে তুলেছেন আলিশান বাড়ি, ফ্ল্যাট, গাড়ি, ব্যাংক ব্যালেন্স, শত কোটি টাকার নামে বেনামের সম্পদ। রাসেলের পিতা তেজগাঁও পলিকন টেক ফ্যাক্টরির পিয়ন মো. আলাউদ্দিনের নামে ২০১৯ সালে আফতাব নগর হাউজিং প্রকল্পে প্লট নং এফ/১৮, রোড নং -৪, সেক্টর নং -২, ব্লক -এফ ৬কাঠার প্লটে নির্মাণ করেছেন ৭তলা বিশিষ্ট আলিশান বাড়ী।
স্ত্রী মিসেস লাকির নামে গুলশান লিঙ্ক রোড নাভানা টাওয়ারে রয়েছে একটি ফ্লাট। জানা যায়, বর্তমানে এই ফ্ল্যাটেই বসবাস করেন রাসেল দম্পতি। নিজের চলাফেরা করার জন্য রয়েছে একটি প্রাইভেটকার এবং পরিবার চলাফেরা জন্য রয়েছে একটি কালো রঙের মাইক্রো। রাসেলের ক্ষমতার দাপটে খিলগাঁও অফিসের সাব-রেজিস্টার জিম্মি হয়ে তাহার কথামত কাজ করতে হয়।
অনিয়ম আর দুর্নীতির আখড়ার গডফাদার এই নকল নবিশ রাসেলের সিন্ডিকেটে স্থানীয় কমিশনার সহ অনেককেই আওতাভুক্ত করে যেকোনো সেবা গ্রহীতাকে জিম্মি করে ফেলে নিজেদের নিয়ম মত কাজ করতে বাধ্য করেন।
জানা যায়, স্থানীয় কমিশনার নাকি তাহার মামা। রাসেলের দুর্নীতির বড় নিয়ম গুলোর মধ্যে হয় একটি রেজিস্ট্রি কাজে সরকারের ট্যাক্স ফাঁকি দিয়ে বিভিন্ন রকমের কৌশলে লাখ লাখ টাকা রাজস্ব ফাকি দেয়া। রেজিস্ট্রি অনিয়ম গুলো খাস জমিকে বানানো হয় মালিকানা, নাল জমিকে বানান বসতভিটা, বসত ভিটাকে বানান নাল, সিটি কর্পোরেশনকে বানান পৌরসভা ও ইউনিয়ন, এভাবেই সরকারের ট্যাক্স ফাঁকি দিয়ে দুর্নীতি করে অবৈধভাবে আয় করেন কোটি কোটি টাকা।
এই রাসেল এক সময় তেজগাঁও লালমাট বস্তিতে বসবাস করতেন জানা যায়, ছোটবেলা থেকেই বাবা মায়ের সাথে এই বস্তিতেই থাকতেন এক সময়কার বস্তিবাসী সাথে বসবাসকারী রাসেল এখন শত কোটি টাকার মালিক দেখে অনেকেই বিস্মিত। এখনো রাসেলের পিতা ১৯ নিউ তেজগাঁও, শিল্প এলাকা, ঢাকা পোলিকন টেক ফ্যাক্টরিতে অফিস সহায়ক পদে চাকরি করেন। যার মাসিক বেতন ১০ হাজার টাকা।
প্রশ্ন হল এই দশ হাজার টাকা বেতনের কর্মচারী কি করে অর্ধশত কোটি টাকার একটি বাড়ি নির্মাণ করেন, বাস্তবে এই বাড়িটি দুর্নীতির অভিযোগ থেকে বাঁচার জন্য নিজের পিতার নামে করেন।
অভিযোগ রয়েছে, এর আগেও তেজগাঁও অফিসে থাকাকালী রাসেলের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ গ্রহণ করে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ছিল। এরপরও মার্চ ২০২২ সালে রাসেল সহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে নানা দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। এসব দুর্নীতির বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষ পূর্ব থেকে খামখেয়ালি পোনা করে আসছে, বিশিষ্টজনরা এসব দুর্নীতির প্রশ্রয় হিসেবে কর্তৃপক্ষের গাফলিতির দায় অধিকাংশই রয়েছে বলে দাবি করেন।
এ বিষয়ে মুঠোফোনে রাসেলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।