বিশেষ প্রতিবেদকঃ রাজধানীর গুলশান বনানী ডিপ্লোমেটিক জোন কুটনীতিক পাড়া, গুলশান, বনানী, হেয়ার কাটিং সেলুন, বিউটি পার্লার, স্পা সেন্টারসহ রয়েছে অসংখ্য অভিজাত ভিআইপি মানের পাঁচ তারকা হোটেলসহ ক্ষুদ্র ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন থেকে বৈধ লাইসেন্স নিয়ে রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশান-বনানীতে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা ব্যবসা পরিচালনা করে।
সম্প্রতি গুলশান বনানীর মতো অভিজাত এলাকায় ভূঁইফোড় ও হলুদ সাংবাদিকের দৌরত্ব্য অতিষ্ঠি স্থানীয় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। কিছু সাংবাদিক নামধারী ভূঁইফোড় কার্ডধারী অসৎ ব্যাক্তিদের দৌরাত্ম্যে প্রতারণার শিকার হচ্ছে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। অথচ গুলশান বনানীতে সাংবাদিকতার নাম ভাঙিয়ে আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে ভুয়া সাংবাদিকদের দৌরাত্ম্য। তথাকথিত আইপিটিভি (ইউটিউব), অনলাইন নিউজপোর্টাল ও যত্রতত্র ফেসবুক লাইভ, প্রেস লেখা স্টিকার, আইডি কার্ড ঝুলিয়ে অবাধে চলাচল করছে ওইসব সাংবাদিক নামধারী ব্যক্তি।
অথচ তাদের কোনো অনুমোদন নেই, নেই কোন শিক্ষাগত যোগ্যতা, পেশা পরির্বতন করেই হয়ে যান সাংবাদিক, মাছের পোনা বিক্রেতা, কাঠমিস্ত্রি, মুদি দোকানদার, হলুদ মরিচ বিক্রেতা, সুদের কারবারি, ব্যাটারি বিক্রেতা, ডাক্তারের সহকারী থেকে রাতারাতি সাংবাদিক হয়ে দাবিয়ে বেড়াচ্ছেন গুলশান বনানীর অলিতে গলিতে। কোন নিউজ লিখতে না পারলেও তারা বড় সাংবাদিক, গলায় ক্যামেরা ঝুলিয়ে মোটরসাইকেল নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন কথিত এই সাংবাদিকরা। এমনকি বাংলাতে কোন কলাম বা আর্টিকেল লেখাতো দূরের কথা সাংবাদিকতার বুনিয়াদী প্রশিক্ষণ ও প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাও তাদের মধ্য নেই। অনিবন্ধিত অনলাইন নির্ভর কিছু প্রতিষ্ঠানের আইডি কার্ড দেখিয়ে স্থানীয় কিছু ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের প্রতারণার ফাঁদে ফেলে যাচ্ছে দিনের পর দিন।
নাম প্রকাশে অনুচ্ছুক গুলশানের স্থানীয় কিছু ব্যবসায়ীদের কাছে এই বিষয়ে জানতে চাইলে কয়েকজন বলেন, মাঝে মধ্য আমাদের ব্যবসায়িক নাম্বারে ফোন দিয়ে এমন কিছু পত্রিকার সাংবাদিক পরিচয় দেয় যাহা আমরা বাপের জম্মেও শুনি নাই। পত্রিকার সাংবাদিক দাবী করে চাঁদা আদায় করতে চায়। বিভিন্ন নামে অনলাইনে পত্রিকা খুলে চাঁদা দাবি করছে এসব সাংবাদিক। এছাড়া অনেকেই নির্দিষ্ট কোনো পত্রিকা কাজ করে না, তবুও তারা নিজেদের দাবী করে সাংবাদিক। এসব ভূঁইফোড় সাংবাদিক নামধারীদের জন্য সাংবাদিকতার মতো মহান পেশার আজ হুমকির মুখে। তাই এসব ভূঁইফোড় পত্রিকা ও নামধারী সাংবাদিকদের দ্রুত আইনের আওতা না আনা গেলে সাংবাদিকতার মতো মহান পেশার মানুষ গুলো অপমানিত হবে বলে জানান গুলশান বনানীর স্থানীয় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, কিছু অসাধু অপসাংবাদিক ব্যক্তির সহযোগিতায় অর্থের বিনিময়ে সাংবাদিকতার মত মহান পেশাকে কুলশিত করে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। বেশ কয়েকজনকে আইনের আওতা আনা গেলেও তবুও থামছে না এসব এসব ভূঁইফোড় সাংবদিকের দৌরত্ব। সবচেয়ে দূর্ভাগ্যজনক বিষয় হলো এরা প্রায়ই ভুল ও মিথ্যা তথ্য দিয়ে সংবাদ পরিবেশন করতেও পিছপা হচ্ছে না। এতে ব্যবসায়িক ভাবমূর্তি ক্ষূন্ন হচ্ছে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের। সাংবাদিক নয়, এমন ব্যক্তিদেরও নামকাওয়াস্তে কার্ড করে দিচ্ছে কিছু টাকার বিনিময়ে। পরভর্তিতে ভূঁইফোড় কার্ড নিয়ে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে অবৈধভাবে চাঁদা আদায় করছে এই অসৎ চক্রটি।
জাতীয় প্রেসক্লাবের এক সাংবাদিক নেতা বলেন, ভুঁইফোড় অনিবন্ধিত পত্রিকার কোনো লোক সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে কোনো ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে চাঁদা দাবী করলে ৯৯৯ ফোন দিয়ে ধরিয়ে দেন। ঐসব ব্যক্তিদের অনৈতিক কর্মকান্ডে সবাইকে সাবধানতা অবলম্বনের পরামর্শ দেন তিনি।