এ.কে আজাদ, লক্ষ্মীপুরঃ প্রায় এক যুগের ও বেশি সময় ধরে দুর্নীতি-অনিয়মের মধ্যে সীমাবদ্ধ রয়েছে ১৮ নং কুশাখালী ইউনিয়ন পরিষদ। প্রচলন রয়েছে পেশীশক্তির,যখন যে দল ক্ষমতার মসনদে থাকে সে দলের লোকই নিয়ন্ত্রণ করে এই পরিষদ। তৎকালীন আওয়ামী সরকারের শাসনামলে চেয়ারম্যান ছিলো অত্র ইউনিয়নের আওয়ামীলীগ সভাপতি নুরুল আমিন। দীর্ঘ সময় ধরে চেয়ারম্যান থাকলেও মিশতে পারেনি জনগণের সঙ্গে, করেছে লুটপাট ও সেচ্ছাচারিতা।সংবাদ মাধ্যমে বহু দুর্নীতি-অনিয়মের তথ্য তুলে ধরা হয় এবং তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন সহ প্রশাসনিক বিভিন্ন দপ্তরে মামলা ও অভিযোগ হয়।
নুরুল আমিন চেয়ারম্যান তার দলীয় প্রভাব বিস্তার করে নিজের কার্যসিদ্ধি হাসিল করতে গিয়ে ইউনিয়নবাসীকে করেছে বন্সিত। হয়নি ইউনিয়নবাসীর ভাগ্যের উন্নয়ন। পরিষদটিকে বানিয়েছে দলীয়করণ ও আত্মীয়করন। দীর্ঘদিন ধরে এহেন কর্মকাণ্ড চলতে থাকলে সাধারণ জনগন আঙ্গুল তোলে তার দিকে। শুরু হয় প্রতিবাদের ঝড়। নৌকার মনোনয়ন পেয়েও চেয়ারম্যান হতে পারেনি সে। শতভাগ জনগন তাকে প্রত্যাখ্যান করে চেয়ারম্যান বানান ছালেহউদ্দিন মানিককে। সে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার ৩ বছর পার হলেও পরিষদে বসতে পারেনি ৩ দিনও।
আওয়ামীলীগের দলীয় প্রভাবের কাছে টিকতে না পেরে জনগনের সেবা দিয়ে আসছে ছালাহউদ্দিন মানিকের নিজ বাড়ীতে বসেই। সেবা কেউ পায় কেউ পায়না। তাকে খুজে পেতে বেহুশ হতে হয় অনেককেই। ইউনিয়ন পরিষদে কোন বরাদ্দ আসলে ওগুলো নিয়ন্ত্রণ করে সাবেক চেয়ারম্যানের নিকটাত্মীয় সহ পেশীশক্তির লোকজন। বরাদ্দ হয়ে যায় ভাগ বাটোয়ারা। নেতা থেকে নেতা, চেয়ারম্যান হতে মেম্বার, মেম্বার হতে পাতি নেতা এরপর আরও কতকি দেখছে জনগন। প্রতিবাদের ভাষা হারিয়ে ফেলে নিরবে সহ্য করতে হয় জনগনকে। জনগনের দাবী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল আমিন আওয়ামীলীগের হলেও বিনপির বড় এজেন্ডা তারই নিকটাত্মীয়।
গত ৫ই আগষ্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আওয়ামী সরকারের পতন হওয়ার পর এসব নেতারা গাঁ ঢাকা দিলেও সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করছে তার নিকটাত্মীয় বিএনপি নেতা। এদিকে ছালেহউদ্দিন মানিক চেয়ারম্যান হয়েও পরিষদ নিয়ে ভাবছেনা কিছু।হাল ছেড়ে দিয়ে গা ভাসিয়ে ঘুরে বেড়ান তিনি।সাধারণ জনগন কোন বরাদ্দ পরিষদে আসলেই গ্রহন করতে হয় পাতি নেতাদের কাছ থেকে। চেয়ারম্যান ছালেহউদ্দিন মানিক নিয়মিত পরিষদে না বসায় দিনের পর দিন হয়রানি হতে হচ্ছে সাধারণ জনগনকে।রাষ্ট্রীয় যে কোন সুবিধা নিতে হচ্ছে বিক্ষিপ্ত উপায়।এলাকার সচেতন মহল বলছেন,আমরা চেয়ারম্যান যাকে বানিয়েছি,তার কতৃত্বই চাই,কোন পাতি নেতা বা চামচিকা পরিষদ নিয়ন্ত্রণ করলে আমরা কোনভাবেই তা মেনে নিবোনা। সম্প্রতি ফেনী-নোয়াখালী পরবর্তী লক্ষ্মীপুরে যে ভয়াবহ বন্যা হয়েছে,সে বন্যায় পানিবন্দী মানুষকে ত্রান দিতে ছুটে আসেন বিভিন্ন সেচ্ছাসেবী সংগঠন।সেই সব সংগঠনের লোকজনকে ভুল ভাল বুঝিয়ে ত্রান নিয়ন্ত্রণ করেছে সেই পুরানো সিন্ডিকেটরাই।যারা পরিষদের বরাদ্দ নিজেদের লোকজনকে বিলিয়ে দিতে মরিয়া হয়ে উঠতো।এমন দুর্যোগ মুহুর্তে আমাদের চেয়ারম্যানের মাধ্যমে সকল ত্রান বিতরন করলে না পাওয়ার আপসোস হতোনা কারও।নামধারী কিছু বিএনপি নেতারা তাদের পছন্দসই ব্যাক্তিদের মুখ চিনি চিনে ত্রান বিতরন করেছে বলে ও ব্যাপক গুন্জন সাধারণ মানুষের মুখে।ইউনিয়নবাসীর দাবী, দালালমুক্ত ইউনিয়ন পরিষদ উপহার পাওয়ার এবং শতভাগ সেবা নিশ্চিত করার।