• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৩ Jun ২০২৫, ০৭:১৭ অপরাহ্ন

বালুদস্যুতা ও ভূমিদস্যুতা চরম পর্যায়ে রুপ নিয়েছে—উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান


প্রকাশের সময় : মে ১৯, ২০২৫, ১১:১৪ অপরাহ্ন / ১২০
বালুদস্যুতা ও ভূমিদস্যুতা চরম পর্যায়ে রুপ নিয়েছে—উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান

মোজাম্মেল হক, চারঘাট, রাজশাহীঃ বালু দস্যুতা ও ভূমি দস্যুতা চরম পর্যায়ে রুপ নিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু এবং পানি সম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। সোমবার (১৯ মে) বেলা সাড়ে ১১টায় রাজশাহীর চারঘাট উপজেলায় বড়াল নদীর উৎসমুখ ও স্লুইসগেট পরিদর্শনে গিয়ে এ কথা বলেন তিনি।

পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, ইটভাটার জন্য মাটি কাটে, নির্মাণ কাজের জন্য বালু তোলে, পাহাড় কাটে আর কৃষি জমির উপরি ভাগ কেটে নিয়ে চলে যায়। কৃষক রাতে ঘুমিয়ে পড়ে সকালে উঠে দেখে জমির মাটি নাই। এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) জন্য ১০ দফা নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। দিনে এবং রাতে যে কোনো সময় অবৈধ ভাবে মাটি ও বালি উত্তোলনের ঘটনা ঘটলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

বড়াল নদের বিষয়ে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, সমন্বিত পদক্ষেপের মাধ্যমে বড়ালসহ দেশের সকল নদী বাঁচাতে হবে। বড়াল নদ বাঁচাতে নদী পুনঃখনন এবং চারঘাটের স্লুুইসগেট অপসারণ করা হবে। নদীর বর্তমান প্রেক্ষাপটে স্লুুইসগেটের আর প্রয়োজন নেই। পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বুঝতে হবে মানুষের কথা তাকে শুনতে হবে। কারণ প্রকল্প তার ব্যক্তিগত স্বার্থে করা না। যে প্রকল্পই করুক জনগণের স্বার্থে হবে, কাজেই সাধারণ জনগণ যেভাবে চাইবে সেভাবে কাজ হবে।

তিনি আরো বলেন, আমরা যতদিন দায়িত্বে আছি ততদিনের মধ্যেই বড়ালের স্লুইসগেট অপসারণ করা হবে। এ জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে পরিকল্পনা চাওয়া হয়েছে। পরবর্তী সরকার আসলে নদী খননসহ আরও বিস্তৃত ভাবে বড়াল নিয়ে কাজ করতে পারবে।

ফারাক্কা চুক্তির বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, ফারাক্কা চুক্তির মেয়াদ আরও দেড় বছর আছে। চুক্তি অনুযায়ী দুই দেশের টেকনিক্যাল কমিটি প্রতিনিয়ত মাঠ পর্যায়ের তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করছে। যেহেতু এটা আমাদের ন্যায্য হিস্যা। কাজেই যখন সময় আসবে সংগ্রহীত তথ্য উপাত্ত অনুযায়ী চুক্তির বিষয়ে কাজ করা হবে।

এর আগে সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটের দিকে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু এবং পানি সম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান চারঘাট পৌঁছালে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন ও বড়াল রক্ষা আন্দোলনের সদস্যগণ তাকে শুভেচ্ছা জানান। এরপর তিনি পায়ে হেঁটে বড়ালের উৎসমুখ পদ্মা নদীর পাড়ে গিয়ে বড়ালের বর্তমান অবস্থা পরিদর্শন করেন। এরপর তিনি বড়ালের উপর নির্মিত স্লুুইসগেট পরিদর্শন করেন।

এ সময় তিনি পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের সাথে বড়ালের পানি প্রবাহ নিশ্চিতে করণীয় ঠিক করতে আলোচনায় অংশ নেন। পাশাপাশি স্থানীয় বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের মতামতও গ্রহণ করেন এবং দ্রুত সময়ে স্লুুইসগেট অপসারণের আশ্বাস দেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোঃ মহিনুল হাসান, রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুর রহমান অঙ্কুর, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপার) কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জান্নাতুল ফেরদৌস, সহকারী কমিশনার (ভূমি) আরিফ হোসেন, বড়াল রক্ষা আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপার) চারঘাটের সাধারণ সম্পাদক সনি আজাদ প্রমুখ।