কলি আক্তার,মোড়েলগঞ্জ,বাগেরহাটঃ বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে আশ্রয়ন প্রকল্পে প্রতি ঘনফুট বালু ৬ টাকার স্থলে ২ টাকা দরে দিতে বাধ্য করাসহ বালু দিতে বিলম্ব হওয়ায় ক্ষুব্দ হয়ে এক ড্রেজার মালিকের ৩শ’ পাইপ কেটে ধ্বংস করে দিলেন মোরেলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস.এম তারেক সুলতান। এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ড্রেজার মালিকসহ স্থানীয় জনসাধারনের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার সকালে কালিকাবাড়ি বাজারা ব্যবসায়ীরা ড্রেজার মালিককে ক্ষতিপূরণ দেয়ার দাবি করেন।
ক্ষতিগ্রস্ত ড্রেজার মালিক মো. লোকমান হোসেন জানান, উপজেলার তেলিগাতি ইউনিয়নের মিস্ত্রীডাঙ্গা গ্রামে আশ্রয়ন প্রকল্পের খাদ ভরাটের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস,এম তারেক সুলতান স্থানীয় ড্রেজার মালিকদের ডেকে ৪ লাখ ঘনফুট বালু দিয়ে তেলিগাতী মিস্ত্রীডাঙ্গা আশ্রয়ন প্রকল্পের খাদ ভরাট করে দেয়ার জন্য বলেন। ব্যবসায়ীরা প্রতিঘনফুট বালু উত্তোলন করে দিতে তার কাছে ৬ টাকা করে দাবি করেন। তিনি প্রতি ঘনফুট বালুতে ২ টাকা করে দেয়ার প্রস্তাব করেন। কিন্তু ড্রেজার মালিকগন ২ টাকা দরে বালু দিতে অস্বিকার করেন। এক পর্যায় তাদেরকে চাপ প্রয়োগ করলে তারা ভয়ে ২ টাকা দরেই বালু দিতে রাজি হন। ইতোমধ্যে আশ্রয়ন প্রকল্পের ওই খাদে ২১ হাজার ঘনফুট বালু ভরাট করা হয়েছে এবং বর্তমানে সেখানে বালু ভরাট কাজ চলমান রয়েছে।
ড্রেজার মালিক মোঃ লোকমান আরো বলেন, আমি ওখানে বালু দিতে কেন বিলম্ব করলাম এ কারনে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস, এম তারেক সুলতান আমার প্রতি ক্ষুব্দ হয়ে সোমবার বিকেলে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার মো. আব্দুল্লাহ আল জাবির, থানা পুলিশ ও আনসার সদস্যদের নিয়ে ছোলমবাড়িয়া থেকে কালিকাবাড়ি বাজার সংলগ্ন ডা. খলিলুর রহমান কলেজ মাঠে বালু ভরাটের জন্য ৩ শ পাইপ দিয়ে টানা লাইনের পাইপগুলো কুঠার দিয়ে কেটে ধ্বংস করে ফেলেছেন। ৩ শ পাইপ কেটে ফেলায় আমার প্রায় প্রায় ১৯ লক্ষ টাকার ক্ষতিসাধন করেছে।
এ ঘটনায় ক্ষুব্দ এলাকাবাসী বলেন, জলমহল থেকে বালু তোলা যদি বেআইনি হয় তাহলে আবাসন প্রকল্পে কিভাবে বালু নেওয়া হয়। স্থানীয় জনগন আরও বলেন, অপরাধ করে থাকলে তিনি ওই ব্যবসায়ীকে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে জেল-জরিমানা করতে পারতেন বা তার বিরুদ্ধে মামলা করতে পারতেন। কিন্তু তিনি সেটি না করে প্রতিহিংসাবসত ক্ষমতার অপব্যবহার করে দেশের সম্পদ পাইপগুলো কেটে বিনষ্ট করে দিলেন। তার এ কর্মকান্ড কতটুকু ন্যায়সঙ্গত হয়েছে এ প্রশ্ন এখন জনমনে।
একাধিক ড্রেজার মালিক বলেন, তাদের সঙ্গীয় শাহিদা বেগমের মাধ্যমে বর্তমান ইউএনওকে ওই আবাসন প্রকল্পের খাদে ২১ হাজার ঘনফুট বালু দেয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত তিনি কোন টাকা দেননি। শ্রমীকদের মজুরী ও মেশিন চালানর জন্য তেল ক্রয়ের টাকা তাদেরকে বাড়ি থেকে এনে দিতে হচ্ছে। ইউএনওর কাছে একাধিকবার টাকার তাগাদা দিলে বালু ভরাটের কাজ শেষ হলে চেকের মাধ্যমে টাকা পরিশোধ করা হবে বলে তিনি জানিয়ে দেন ।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস.এম তারেক সুলতানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাদের অভিযোগ সত্য নয়, পরিবেশ আইনে নদী ভাঙ্গন এলাকায় বালু উত্তোলন করা নিষেধ আছে বিধায় আমি বালু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটটা ভেঙ্গে দিতে চাচ্ছি। পরিবেশ আইনে বালু উত্তোলন অবৈধ হলে আশ্রায়ন প্রকল্পে ইতোপুর্বে এবং বর্তমানে যে, বালু দেয়া হয়েছে সেটা কি করে বৈধ হল। এমন প্রশ্নের জবাব দিতে অপারগতা প্রকাশ করে তিনি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
আপনার মতামত লিখুন :