মো:রফিকুল ইসলাম,নড়াইলঃ বাংলাদেশে এই প্রথম তৃতীয় লিঙ্গের একজ গাড়িচালক ড্রাইভার নড়াইলের বুলবুলি।নড়াইল সদর উপজেলার হবখালী ইউনিয়নের কোমখালী গ্রামের মৃত,বীরমুক্তিযোদ্ধা আবজাল মোল্লার সন্তান,তৃতীয় লিঙ্গের বুলবুলি।তৃতীয় লিঙ্গের বুলবুলি ছোট বেলা থেকেই লেখাপড়াই খুবই ভালো,পাশাপাশি গানের গলাটাও চমৎকার।বুলবুলি তৃতীয় লিঙ্গের হওয়ায়,গ্রামে নানা সময় মানুষের উপহাসের পাত্র হয়েছে,শুনতে হয়েছে নানা রকম অঙ্গিভঙ্গির কথা বার্তা।এমন কথা বার্তায় দুঃ কষ্ট নিয়ে নিজের জন্মভূমি নড়াইল জেলার মায়া ছেড়ে পাড়ি জমান সুদুর ঢাকা শহরে,ঢাকা শহরে ভবোঘুরের মত ঘুরতে ঘুরতে মাথা গোজার মত একটু ঠাই পান বুলবুলি।এর পরে সুরু হয় বুলবুলির নতুন জিবন,সুরু হয় অন্নান্য হিজরাদের মত মানুষের কাছথেকে হাত পেতে ভিক্ষাবৃত্তি করা,এমন করে টাকা নেয়া বা চাওয়া ভালো লাগছে না বুলবুলির।স্বপ্ন দেখেন ভালো কিছু করার,সুরু হয় চিন্তাভাবনা এমন সময় এক সরকারি অফিসারের সাহাজ্য পান বুলবুলি।সেই অফিসারের সহযোগিতায় বুলবুলি ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ নেন এবং সফল একজন গাড়িচালক হিসাবে গড়ে ওঠেন,এরই মধ্যে বুলবুলিকে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় এবং টিভিতে তার সাফল্য তুলে ধরেন।এসময় বুলবুলি কান্নাজনীত কণ্ঠে জানান,ভিক্ষাবৃত্তি করা ছাড়া আমাদের কি কাজ আছে,গ্রামে বা শহরে সব যায়গায়ই হাত পেতে টাকা চাইতে হয় এবং সেই ভিক্ষাবৃত্তির টাকা দিতে হয় গুরু-মাদের।গুরু-মা’রা হয়ে ওঠেন আমাদের দিয়ে অট্টালিকার মালিক আর আমরা ভিক্ষুক,আমি আর ভিক্ষাবৃত্তি করবো না,দেশরত্ন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা গরিবের বন্ধু দেশের মা আমাকে দয়া করে আমার যোগ্যতা অনুযায়ী একটা সরকারি চাকরি দেন,গাড়িচালক হিসাবে,তাহলে আমাকে আর ভিক্ষাবৃত্তি করতে হবেনা মানুষের কাছে আর অপমানীত হতে হবে না।বাবা-মা এর নিকট প্রত্যেক সন্তানই সমান,হোক সে ছেলে কিংবা মেয়ে বা তৃতীয় লিঙ্গের।বুলবুলি সেই কথাগুলো মনভরা কষ্ট নিয়ে গানে গানে আমাদেরকে বুঝিয়ে দিলেন।বাবা-মা ও ভাই-বোনদের সুখের জন্য তারা তৃতীয় লিঙ্গের ভাই-বোনেরা নিজেরাই তাদের পরিবার থেকে আলাদা হয়ে বসবাস করতে বাধ্য হন।তারা হতে পারতো আমাদের ঘরেরই একজন,সবই সৃষ্টিকর্তা -আল্লাহুর রহমত।সমাজে যারা তৃতীয় লিঙ্গের বা হিজরা সম্প্রদায় বলে পরিচিত,তারা তাদের সুস্থ জীবন-যাপনের জন্য কর্মসংস্থান চায়। সরকার যদি তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দিতে পারে তাহলে তাদেরকে কখনোই ভিক্ষাবৃত্তি করে জীবন-যাপন করতে হবে না বলে জানান,বুলবুলি।বুলবুলি আরো জানান,আমাকে যদি সরকার ড্রাইভার হিসাবে একটি সরকারি চাকরি দিতেন তাহলে আমাকে আর হাত পেতে ভিক্ষাবৃত্তি করে চলতে হত না।আমার মত হাজারও বুলবুলি রয়েছে তাদেরও ভিক্ষাবৃত্তি করে সংসার চালাতে হয়,গুরু-মার সেবা করে চলতে হয়।
আমরা আর গুরু-মার অট্টালিকা গড়ার কারিগড় হতে চাই না,আমরা চাই একটু সন্মান একটি চাকরি বলেও জানান তিনি।
আপনার মতামত লিখুন :