• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ০২:৩৪ পূর্বাহ্ন

বাঁশ দিয়ে শহিদ মিনার তৈরি করে সুনামগঞ্জের ধর্মপাশায় শিশুদের শ্রদ্ধা


প্রকাশের সময় : ফেব্রুয়ারী ২১, ২০২৩, ১০:৪৯ অপরাহ্ন / ৪৪
বাঁশ দিয়ে শহিদ মিনার তৈরি করে সুনামগঞ্জের ধর্মপাশায় শিশুদের শ্রদ্ধা

মধ্যনগর ও ধর্মপাশা প্রতিনিধি, সুনামগঞ্জঃ সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার বৌলাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বাঁশ দিয়ে শহীদ মিনার বানিয়ে তাতে ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে।ওই বিদ্যালয় নেই শহিদ মিনার। তাই বিকালে দল বেঁধে বাঁশগাছ কেটে এনে মাটিতে গর্ত করে দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয় শহিদ মিনারের আদল।

মঙ্গলবার উপজেলার বিদ্যালয়ের মাঠে বাঁশ দিয়ে অস্থায়ী শহীদ মিনারটি নির্মাণ করেছে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। চারপাশে কাগজ, রঙিন , ফুল ও পাতা দিয়ে সাজানো হয়। গ্রামের পথে-প্রান্তরে ঘুরে সংগ্রহ করা হয় বিভিন্ন ধরনের ফুল । সেই ফুল দিয়ে ভাষা শহিদদের জন্য বানানো মিনারে জানানো হয় শ্রদ্ধা।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, তাদের ওই বিদ্যালয়ে কোনো শহীদ মিনার নেই। ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে একটি শহীদ মিনারের দাবি জানান তারা।

বৌলাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী জান্নাতুল মায়া অরপা বলেন, আমাদের আমাদের বিদ্যালয়ের কোনো স্কুলে শহিদ মিনার নেই। তাই বাঁশ দিয়ে শহিদ মিনার তৈরি করে ভাষা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছি। জমানো টাকা দিয়ে বেলুন, রঙিন কাগজ কিনছি। এগুলো দিয়ে শহিদ মিনার সাজানো হয়েছে।

একই কথা বলে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী মিথিলা জান্নাত মিতু জানায়, গভীর রাতে শহিদ মিনার বানানো শেষ করি আমরা। স্যারেরা কাজে আমাদের সহযোগিতা করেছেন। আমাদের বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণের দাবি জানাই।

বোলাম সরকারি বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক সৈয়দ নুরুল ইয়াহিয়া শাহিন বলেন, আমি যখন ক্লাসে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ভাষা আন্দোলন ও ভাষা শহীদদের সম্পর্কে বলি তখন তাদের মধ্যে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ জাগ্রত হয়। আমাদের বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার না থাকায় সেই শ্রদ্ধাবোধ থেকে ভাষা শহীদদের স্মরণে শিক্ষার্থীরা বাঁশ ও কাগজ দিয়ে শহীদ মিনার তৈরি করে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে যদি শহীদ মিনার নির্মাণ করা যায় তাহলে আমাদের আগামী প্রজন্ম ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বেড়ে উঠবে।

বৌলাম সরকারি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. হারুন রশিদ বলেন, আমাদের শিশুদের নিজেদের উদ্যোগে বাঁশ দিয়ে শহিদ মিনার বানিয়ে ভাষা শহিদদের শ্রদ্ধা জানানোর বিষয়টি আমাকে মুগ্ধ করেছে। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন করছি। শিশুদের চিত্রাঙ্কন ও কবিতা আবৃত্তি প্রতিযোগিতার আয়োজন রয়েছে আজ।

ধর্মপাশা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শীতেষ চন্দ্র সরকার বলেন, শহীদ মিনার হচ্ছে আমাদের ভাষা শহীদদের স্মৃতিচিহ্ন। যেসকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই, পর্যায়ক্রমে আমরা সেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শহীদ মিনার নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করবো।