• ঢাকা
  • সোমবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০৫ অপরাহ্ন

বর্তমান চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম বিআরটিসিতে এনেছেন আমূল পরিবর্তন


প্রকাশের সময় : অক্টোবর ২, ২০২৪, ৩:১৭ অপরাহ্ন / ৬৫
বর্তমান চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম বিআরটিসিতে এনেছেন আমূল পরিবর্তন

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাঃ বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশনের (বিআরটিসি) আমূল পরিবর্তনে ভূমিকা রেখে চলেছেন বর্তমান চেয়ারম্যান মোঃ তাজুল ইসলাম। তার দূরদর্শিতা ও কর্মদক্ষতায় অচল, অবহেলিত, দুর্নীতিগ্রস্ত বিআরটিসিকে বদলে ফেলেছেন তিনি। প্রতিষ্ঠানের ব্যয় সংকোচন, আয় বৃদ্ধিসহ আধুনিকতার সঙ্গে তাল মিলিয়ে, অবকাঠামো নির্মাণ, তথ্য প্রযুক্তির উন্নয়ন এবং প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে কর্মীদের দক্ষ করে গড়ে তুলেছেন।

দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছেন মোঃ তাজুল ইসলাম। সম্প্রতি মোঃ তাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত চেয়ে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোঃ মাহবুবুর রহমান খান।

এ বিষয়টিকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করে বিআরটিসির চেয়ারম্যান মোঃ তাজুল ইসলাম বলেন, তাকে মিথ্যা ভাবে ফাঁসানোর জন্যই এ সব করা হচ্ছে।

ওই লিগ্যাল নোটিশে মাহবুবুর রহমান খান উল্লেখ করেন, গত বছরের ৬ জুন বিআরটিসির কনট্রাকটর (গ্রেড-ডি) ও কাউন্টারম্যান পদে ১৪১ জন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে যখন ছাত্র-জনতার আন্দোলনে দেশ অস্থিতিশীল, তখন ১৬ জুলাই উক্ত নিয়োগ প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করা হয়। এরপর চলতি বছরের ১৮ জুলাই উক্ত পদে ২০০ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। উক্ত প্রক্রিয়ায় দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ থাকায় উক্ত প্রক্রিয়াটি বন্ধ থাকে।

বিষয়টিকে ষড়যন্ত্রমূলক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত দাবি করে তাজুল ইসলাম আরো বলেন, একটি মহল উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে আমার বিরুদ্ধে ভুয়া অভিযোগ তুলে আমাকে হেনস্থার চেষ্টা করছে। আগে যেখানে বিআরটিসি শ্রমিকদের ৬ কোটি টাকা বেতন পরিশোধ করতে পারত না সেখানে আমি যোগদানের পর ১২ কোটি টাকা পরিশোধ করছি। এরপরও বিআরটিসি লাভজনক অবস্থানে রয়েছে।

তিনি আরো বলেন, তবে ষড়যন্ত্রকারীরা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছেন। তারা আমাকে অনেক দিন ধরেই ফাঁসানোর হুমকি দিচ্ছেন। বিষয়টি সচিব ও উপদেষ্টাকে অবহিত করবেন বলে জানান তিনি।

নিয়োগে অভিযোগ প্রসঙ্গে বিআরটিসির চেয়ারম্যান মোঃ তাজুল ইসলাম বলেন, দেড় বছর আগে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির বিপরীতে প্রায় ৩৭ হাজার লোক আবেদন করেন। একেবারে নিচের দিকের ১৮ গ্রেডের পদে নিয়োগ ছিল। আবেদনকারী বেশি হওয়ায় প্রথমে প্রিলিমিনারি পরে লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হয়। লিখিত পরীক্ষার পর ১ হাজার ১০০ জনকে ভাইভা পরীক্ষার জন্য ডাকা হয়। নিয়োগ বোর্ডে মন্ত্রণালয়ের সদস্যসহ ৬ সদস্যের কমিটি চুলচেরা বিশ্লেষণ করে নিয়োগ দেয়, সেই নিয়োগের ভেতর বিন্দু পরিমাণ অসততার চিহ্ন নাই।

তিনি আরো বলেন, সম্প্রতি ১৮২ জন এবং আরেক বিজ্ঞপ্তিতে ৩৫ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। তাদের বেশিরভাগই সাম্প্রতিক আন্দোলনে জড়িত ছিলেন। এ নিয়োগে ৩৯ জন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক যোগদান করেছে। বেকারত্ব হ্রাস করার জন্য যেখানে আমরা নিয়োগকে উৎসাহিত করব সেখানে উকিল নোটিশে লেখা রয়েছে, পুরানোদের বেতনের কথা লেখা রয়েছে, আমি তাদের বেতন পরিশোধ করেছি। কিন্তু আগে তারা বেতন পেতেন না, খাবার পেতেন না, সিপিএফ পেতেন না, গ্রাচ্যুয়িটি পেতেন না। আগে তাদের ৬ কোটি টাকা বেতন দিতে পারেনি, কিন্তু এখন তাদের ১২ কোটি টাকা বেতন পরিশোধের পরও বিআরটিসি লাভে।

তিনি বলেন, যিনি উকিল নোটিশ পাঠিয়েছেন তিনি দীর্ঘদিন আগেই অবসরে গেছেন, তখন তিনি কোনো টাকা পাননি, কিন্তু আমার সময়ে তিনি টাকা পেয়েছেন। অবসরে গেলেও তিনি এখনো চান এখানে একটা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি হোক। তিনি চেষ্টা করছেন কিন্তু পারেননি এবং পারবেনও না। এখানে প্রায় পাঁচ হাজার কর্মচারী, কিন্তু বেশিরভাগই এর সঙ্গে জড়িত না। যারা এতে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। ষড়যন্ত্রকারীরা অনেক দিন ধরেই আমাকে ফাঁসানোর হুমকি দিচ্ছিলেন, তারাই আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছেন। যারা এই দুষ্টচক্রে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে। এ বিষয়গুলো আমি সচিব মহোদয়ের সঙ্গে শেয়ার করেছি। সচিব মহোদয় বিষয়টি উপদেষ্টা মহোদয়ের সঙ্গে শেয়ার করবেন।

বিআরটিসি সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের পূর্বে বিআরটিসির অবস্থা ছিলো ভঙ্গুর, জরাজীর্ণ, অবহেলিত এবং লোকসানে জর্জরিত, দুর্নীতিগ্রস্থ একটি প্রতিষ্ঠান। মোঃ তাজুল ইসলাম চেয়ারম্যান হিসেবে যোগদানের পরই অর্ধশত বছরের লোকসানে চলতে থাকা বিআরটিসিকে পুনরুদ্ধারে সাহসী ও যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। ১১১টি সমস্যা চিহ্নিত করে এবং সমস্যা সমাধানে কাজ শুরু করেন। বিআরটিসিকে আলোর মুখ দেখাতে তার গৃহীত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলোর মধ্যে স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিভিন্ন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়োগ প্রদান ছিল অন্যতম।

তিনি দূরদর্শিতার সঙ্গে শক্ত হাতে কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। নতুন গাড়ি দিয়ে বিআরটিসি পূর্বে যেখানে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রায় ৬ কোটি টাকা বেতন-ভাতা নির্দিষ্ট সময়ে পরিশোধ করতে পারেনি, সেখানে তাজুল ইসলাম নিয়োগ পাওয়ার পর পুরনো গাড়িগুলোকে নিজস্ব কারখানায় সংস্কার করে পুণ:ব্যবহার উপযোগী করেছে। এবং সুষ্ঠু ও সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে প্রায় ১২ কোটি টাকা বেতন-ভাতা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রদান করা সম্ভব হচ্ছে।