
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ গত ১৮ জানুয়ারি বদলি আদেশে ঢাকায় বর্তমান দায়িত্ব হস্তান্তর করে নতুন কর্মস্থলে যোগ দিতে বলা হয় পাঁচ চিকিৎসককে। এরপর চার মাস কেটে গেলেও নতুন কর্মস্থলে যোগ না দিয়ে উল্টো বর্তমান কর্মস্থলে বহাল থাকার আবেদন জানিয়েছেন তারা। তাদের পক্ষে একই আবেদন জানিয়েছে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষও। জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পাঁচ চিকিৎসককে বদলি করা হয় গোপালগঞ্জ শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব চক্ষু হাসপাতাল ও ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে।
জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সূত্রে জানা যায়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আদেশ অমান্য করে এখনো তারা আগের দায়িত্ব পালন করছেন। জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট থেকে বদলির আদেশপ্রাপ্ত পাঁচ চিকিৎসক হলেন, মেডিক্যাল অফিসার ডা. মো. মহিব উল্লাহ, সহকারী সার্জন ডা. ফারজানা শারমীন শিমু, ডা. খন্দকার খাদিজা ফারহানা ফেরদৌস, ডা. ফারহানা রহমান ও ডা. জান্নাতুল ফেরদৌস।
বর্তমান বছরের ১৮ জানুয়ারি এই পাঁচ চিকিৎসকের বদলির আদেশে বলা হয়- (১) বদলি করা পদ গুলোতে কোনো কর্মকর্তা মুভ ইন না করা অবস্থায় থাকলে তিনি পরবর্তী পদায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগে ন্যস্ত হবেন। (২) এই প্রজ্ঞাপন জারির দুই কর্মদিবসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা তাদের দায়িত্ব হস্তান্তর করবেন, অন্যথায় তিন দিনের মাথায় সরাসরি অবমুক্ত হয়েছেন বলে গণ্য করা হবে। অথচ গত চার মাসেও তারা নতুন কর্মস্থলে যোগ না দেওয়া প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) শামিউল ইসলাম বলেন, ঢাকায় একবার পোস্টিং পেলে কেউ ঢাকা ছেড়ে অন্য জেলায় যেতে চান না। অধিকাংশ চিকিৎসক, নার্সসহ অন্যান্য স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা ঢাকায় অবস্থান করতে আগ্রহী থাকেন। সে কারণে বদলির পর অনেকেই না যাওয়ার জন্য বিভিন্নভাবে চেষ্টা তদবির করেন। বদলিকৃত অনেককে বাইরে পাঠাতে অনেক সময় আমাদের চাপ প্রয়োগও করা লাগে।
উল্লেখিত পাঁচ চিকিৎসকের বদলি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই পাঁচ জন তাদের বদলি আদেশ বাতিল করার জন্য অধিদপ্তরে আবেদন জানিয়েছেন। যে প্রতিষ্ঠানে তারা কাজ করছেন, সেই চক্ষু বিজ্ঞান থেকেও আমাদের কাছে একই আবেদন জানানো হয়েছে। কেন এই পাঁচ জনকে বদলি করা হয়েছে, সেই বিষয়ে লিখিত ভাবে আমাদের মতামত মহাপরিচালকের কাছে জানিয়েছি। এখন মহাপরিচালক সিদ্ধান্ত দেবেন তাদের বদলি বহাল থাকবে কি না।
এই বিষয়ে মহাপরিচালকের মতামত জানার জন্য একাধিকবার কল করলেও তিনি ফোনকল রিসিভ করেননি।
অপরদিকে, গোপালগঞ্জ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব চক্ষু হাসপাতাল ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা গেছে, তাদের চাহিদা জানিয়ে তারা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কাছে পাঁচ জন চিকিৎসক চেয়েছেন। অধিদপ্তরও সেই অনুযায়ী তাদের লোকবল দেন। কিন্তু যে পাঁচ জনকে বদলি করা হয়েছে, তারা সেই হাসপাতালে কাজে যোগ দেননি। পরে আবারও জনবলের জন্য আবেদন জানালে অধিদপ্তর নতুন করে চার জন চিকিৎসককে বদলি করে। তারা ইতোমধ্যে গোপালগঞ্জ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব চক্ষু হাসপাতাল ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে কাজে যোগ দিয়েছেন।
গোপালগঞ্জ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব চক্ষু হাসপাতাল ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা গেছে, নতুন চার জন চিকিৎসক কাজে যোগ দেওয়ার পরও এখনও সেই হাসপাতালে ৪৩টি চিকিৎসক পদ খালি আছে। এই মুহূর্তে সেখানে ৪২ জন চিকিৎসক কর্মরত আছেন।
আপনার মতামত লিখুন :