মনিরুজ্জামান অপূর্ব,ঢাকা: ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, বাংলা ভাষা, বাঙালি এবং বাংলা সংস্কৃতি হচ্ছে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার মূল ভিত্তি। এই বিষয়ে বঙ্গবন্ধু তার নিজের নীতি, আদর্শ ও দর্শন থেকে কখনো বিচ্যূত হননি।এমনকি তিনি তার রাজনৈতিক গুরু হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীকেও বাংলাকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষার আন্দোলনের পক্ষে সম্মত করাতে সক্ষম হয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু কেবল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেননি তিনি সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় একটি পরিপূর্ণ পরিকল্পনা সূচনা করেছিলেন বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।
মন্ত্রী আজ সোমবার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা ও ১৫ই আগস্টের সকল শহিদদের স্মরণে বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদ (বিপিপি), টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেড শাখার উদ্যোগে আয়োজিত ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদ (বিপিপি), টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেড শাখার সভাপতি প্রকৌশলী রনক আহসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক এবং আইইবির প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার মো. আবদুস সবুর, বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদ সভাপতি অধ্যাপক ড. ইঞ্জিনিয়ার মো. হাবিবুর রহমান, বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদ সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মো. নূরুজ্জামান, টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেড ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মো. সাহাব উদ্দিন, এবং আইইবি সম্মানী সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মো. শাহাদাৎ হোসেন (শীবলু) পিইঞ্জ.।
মন্ত্রী বঙ্গবন্ধু দেশি-বিদেশি অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় যুদ্ধ শুরু করেছিলেন দ্বিতীয় বিপ্লবের মাধ্যমে উল্লেখ করে বলেন, ১৫ আগস্ট দেশী বিদেশী শোষক, ধনিক গোষ্ঠী, সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ও স্বাধীনতা যুদ্ধে পরাজিত শক্তির ষড়যন্ত্রেরই ফসল। বঙ্গবন্ধুর কণ্যা শেখ হাসিনার জন্য তাদের উদ্দেশ্য সফল সমাপ্তিতে পৌছায়নি। পঁচাত্তরের পর ৬ বছরের শরণার্থী জীবন শেষে ৮১ সালে দেশে ফেরার পর ১৫ বছর মরণপণ যুদ্ধ করে ২১ বছরের জঞ্জাল অপসারণ করে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনৈতিক সংগঠন পুণর্গঠন করে শেখ হাসিনার নেতৃত্ত্বেই বঙ্গবন্ধু ঘোষিত অর্থনৈতিক মুক্তির সংগ্রামে বাংলাদেশ আজ ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার পথে এগিয়ে যাচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রথম গণনাটক ‘একনদী রক্তের’নাট্যকার জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেন, হাজার বছরব্যাপী বৃটিশ –পাকিস্তানীরাসহ বিদেশীরা বাঙালির এই উর্বর ভূখণ্ডটি শাসন করেছে, শোষণ করেছে সম্পদ লুট করেছে। বঙ্গবন্ধুই হাজার বছরের পরাধীন জাতিকে মুক্ত করেছেন, পৃথিবীতে বাংলা ভাষা ভিত্তিক বাঙালির একমাত্র রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে সঠিকভাবে স্মরণ করতে হলে তাকে নিয়ে বিস্তারিত পড়া –শোনা করতে হবে, তার দ্বিতীয় বিপ্লব পড়তে হবে ।তা না হলে বঙ্গবন্ধুকে সঠিক মূল্যায়ন সহজ হবে না বলে তিনি উল্লেখ করেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেন, বঙ্গবন্ধু পরিকল্পিত সংগ্রামের মাধ্যমে স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠা করেছেন। বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন বিচ্ছিন্নতাবাদ নয় একটি স্বাধীনতার জন্য জনযুদ্ধ করতে হবে। তিনি বিচ্ছিন্নতাবাদি আন্দোলন করলে ৫২ কিংবা ৬৬ সালে তা করতে পারতেন। বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতির এমন একজন নেতা ছিলেন যার দৃষ্টান্ত পৃথিবীতে বিরল বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, যুদ্ধের সময় পাকিস্তানের কারাগারে আটক থাকার পরও এদেশের মানুষ নেতার নামে যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছে, দেশেটি স্বাধীন করেছে। আমার মাসহ এদেশের অনেক মা বঙ্গন্ধুর জন্য নয় মাস রোজা রেখেছেন। যুদ্ধের পর বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার ঘটনা ছিলো পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে হত্যা করা বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।
ইঞ্জিনিয়ার মো. আবদসু সবুর বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দীর্ঘ সংগ্রামের ফলে আমরা পেয়েছি একটি স্বাধীনতার সার্বভৌম দেশ। বঙ্গবন্ধু স্বাধীনউত্তর কালে মাত্র সাড়ে তিন বছরে যুদ্ধবিদ্ধস্থ দেশকে পূণর্গঠনের জন্য প্রকৌশলীদের সাথে নিয়ে কাজ করেছেন। দেশকে পূর্ণগঠন করে অবকাঠামো উন্নয়নের ভিত্তি রচনা করেছেন সকলক্ষেত্রে। কিন্তু ১৯৭৫ এর ১৫ অাগস্টে বঙ্গবন্ধুসহ পরিবারের সকলকে হত্যা করার মাধ্যমে দেশের অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করে জিয়া- মোস্তাকের নেতৃত্বে দেশকে পাকিস্তানের ভাবধারায় নিয়ে যায়। পরবর্তিতে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় দেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করেছেন, যা সারা বিশ্বে শুধু বাংলাদেশ মডেল হিসেবে পরিচিতি লাভ করেনি বরং শেখ হাসিনা মডেল হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। বঙ্গবন্ধু যদি বেঁচে থাকতেন তাহলে ২০৪১ সালে নয় ২০২০ এর মধ্যেই আমরা উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশের সকল সুযোগে সুবিধা ভোগ করতাম।
আপনার মতামত লিখুন :