মনিরুজ্জামান অপূর্ব,ঢাকা:ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, যুদ্ধের ধ্বংসস্তুপের উপর দাঁড়িয়েও বঙ্গবন্ধু ডিজিটাল বাংলাদেশের বীজ বপন করে গেছেন। জাতির পিতা বেতবুনিয়ায় ১৯৭৫ সালের ১৪ জুন ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা, ১৯৭৩ সালে আইটিইউ ও ইউপিইউ –এর সদস্যপদ অর্জন, টিএন্ডটি বোর্ড গঠন এবং খুলনায় ক্যাবল শিল্প প্রতিষ্ঠা করে ডিজিটাল বাংলাদেশের বীজ অংকুরিত করে গেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছরে মোবাইল ফোন ও কম্পিউটার প্রযুক্তি সাধারণের নাগালে পৌঁছে দিয়ে বঙ্গবন্ধুর অংকুরিত বীজটি চারা গাছে এবং ২০০৯ থেকে ২০২১ পর্যন্ত তা বিরাট মহিরূহে রূপান্তর করেছেন। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশকে তিনি চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের নেতৃত্ব প্রদানের যোগ্যতায় উপনীত করেছেন বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।
মন্ত্রী গতকাল ৩০ আগস্ট রাতে ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে গভর্নমেন্ট আইসিটি অফিসার্স ফোরাম আয়োজিত ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ তথ্য জানান।
গভর্নমেন্ট আইসিটি অফিসার্স ফোরাম সভাপতি মিজ শারমিন আফরোজ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কবির বিন আনোয়ার, বাংলাদেশ শিল্প কলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী এবং সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো. রতন বক্তৃতা করেন।
দক্ষ মানব সম্পদ ছাড়া প্রত্যাশিত সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয় বঙ্গবন্ধু সেই চিন্তা থেকেই বাঙালির অধিকার প্রতিষ্ঠায় শাসনভার গ্রহণের মাত্র ছয় মাসের মধ্যে কুদরত-ই-খুদা কমিশনের মাধ্যমে জাতীয় শিক্ষানীতি ঢেলে সাজানোর উদ্যোগটিও নিয়েছিলেন বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন। কম্পিউটারে বাংলা ভাষার জনক জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেন , বঙ্গবন্ধুর যুগান্তকারী পদক্ষেপ হচ্ছে, তিনি দেশের সব প্রাথমিক বিদ্যলয়গুলোকে সরকারিকরণ করেন। জাতীয় সংসদে ১৯৭৩ সালের বিশ্ববিদ্যালয় আইন পাসের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে স্বায়ত্তশাসন প্রদান করেন বঙ্গবন্ধু।তিনি বলেন, মাত্র সাড়ে তিনি বছরে আমার কাছে এ ধরণের এ পর্যন্ত প্রাপ্ত হিসেবে একশত পঞ্চান্নটিরও বেশি বিশেষ উদ্যোগ তিনি গ্রহণ করেন। আর আজকের বাংলাদেশ এই ভিত্তির ওপর ভর করেই অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে তারই সুযোগ্য উত্তরসূরী জননেত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে বলে তিনি উল্লেখ করেন। বঙ্গবন্ধু বাঙালির অধিকারের প্রশ্নে কখনো আপস করেননি উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যার সাথে বিভিন্ন শক্তি বিভিন্ন ভাবে জড়িত ছিলো।বঙ্গবন্ধু কেবল বাংলাদেশ রাষ্ট্রটি প্রতিষ্ঠাই করেননি উল্লেখ করে বীর মুক্তিযোদ্ধা জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেন বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় বিপ্লব ছিলো অর্থনৈতিক মুক্তির সোপান। একুশ শতকের শিক্ষা, যোগাযোগ প্রযুক্তিসহ শোষণ, বঞ্চনা,বৈষম্যহীন – ক্ষুধা-দারিদ্রমুক্ত সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় তিনি লক্ষ্য নির্ধারণ করে গেছেন। ১৫ আগস্ট স্বাধীনতা যুদ্ধে পরাজিত শক্তির ষড়যন্ত্রেরই ফসল উল্লেখ করে কম্পিউটার প্রযুক্তি বিকাশের অগ্রদূত জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেন পঁচাত্তরে পর ৬ বছরের শরনার্থী জীবন ও ৮১ সালে দেশে ফেরার পর ১৫ বছর মরণপণ যুদ্ধ করে ২১ বছরের জঞ্জাল অপসারণ করে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনৈতিক সংগঠন পুনর্গঠন করে শেখ হাসিনার নেতৃত্ত্বেই বঙ্গবন্ধু ঘোষিত অর্থনৈতিক মুক্তির সংগ্রামে বাংলাদেশ আজ ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার পথে এগিয়ে যাচ্ছে।
মন্ত্রী ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশে তার ৩৫ বছরের দীর্ঘ পথ চলার অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন,সরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আইসিটি কর্মকর্তাদের ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মানে অপরিসীম ভূমিকা রয়েছে। তিনি বলেন, সরকারী কর্মকান্ড ডিজিটাল হলে জনগণও সহজে ডিজিটাল হবে। তিনি ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় প্রতিটি আইসিটি কর্মকর্তাকে স্ব-স্ব ক্ষেত্রে অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালেনে যে কোন সহযোগিতা প্রদানে আশ্বাস ব্যক্ত করেন।
বক্তারা বঙ্গবন্ধুর বর্ণাঢ্য জীবনের নানা দিক তুলে ধরে বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ অনুসরণের মাধ্যমে সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য অর্জন করার মাধ্যমে তার লালিত স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় আমাদের কাজ করতে হবে ।
আপনার মতামত লিখুন :