
কে এম সাইফুর রহমান, গোপালগঞ্জঃ মানবিক চর্চা ছড়িয়ে পড়ুক সকলের মাঝে এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে গোপালগঞ্জ জেলা সদরের কালেক্টর বাজারে পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে শুরু হয়েছে সরকার নির্ধারিত সুলভ মূল্যে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি, মৌসুমী ফল ও গরুর মাংস বিক্রির কার্যক্রম। জেলা প্রশাসনের সার্বিক ব্যবস্থাপনায়, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন মানবিক গোপালগঞ্জ ও মফস্বল মানবাধিকার সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবকদের সহযোগিতায় সমন্বয়ক তানভীর হাসান সৈকত ও আরমান খাঁন জয়ের নিরলস প্রচেষ্টায় ব্যতিক্রমধর্মী এ কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
সরকার নির্ধারিত প্রতি কেজি গরুর মাংসের বাজার মূল্য ৭০০ টাকা। মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বিবেচনায় সদরের কালেক্টর বাজারে ৬৬০ টাকায় মিলছে দেশি ষাঁড়ের মাংস। ক্রেতারা তাদের চাহিদা অনুযায়ী প্রতিজন ১০০ গ্রাম থেকে শুরু করে নিতে পারবেন সর্বোচ্চ ৫ কেজি পর্যন্ত।
সরকার নির্ধারিত মূল্য থেকেও ৪০ টাকা কম যেখানে স্থানীয় বাজারে প্রতি কেজি মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকা থেকে ৮০০ টাকা মূল্যে। ন্যায্য মূল্যে মাংস পেয়ে খুশি ক্রেতারা। বাজারের তুলনায় বেশ কম মূল্যে বিক্রি হচ্ছে মৌসুমী ফল এবং নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি। প্রতিদিন ভোর রাত থেকে গরু জবাই করে বিক্রির জন্য প্রস্তুতি শুরু করা হয়। জেলা সদরের বাসিন্দারা ছাড়াও পার্শ্ববর্তী অন্যান্য উপজেলা থেকেও নানান বয়সের নারী-পুরুষ দিনের প্রথম প্রহর থেকেই ব্যাগ হাতে মাংস কিনতে লাইনে ভিড় করেন।
জেলা সদরের একজন ক্রেতা ব্যবসায়ী সেলিম কাজী , চাকুরীজীবি রেশমা খানম, গৃহিণী আঁখি বেগম, সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজের ইংরেজি বিভাগের সাবেক সহকারী শিক্ষক গোলাম মোস্তফা, গনমাধ্যমকর্মী কে এম সাইফুর রহমান সহ কয়েকজন মাংস ক্রেতার সাথে কথা হলে তারা জানান, পবিত্র মাহে রমজানের দ্বিতীয় দিনে কালেক্টর বাজার থেকে সুলভ মূল্যে এমন নিত্য প্রয়োজনীয় বাজার সহ গরুর মাংস কিনতে পেরে তারা গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসন সহ কালেক্টর বাজারের সকলকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। হালালভাবে জবাই করা দেশী এরে গরুর মাংস কিনতে পেরে তারা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। কালেক্টর বাজার থেকে প্রতিদিন সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী অন্ধ ও প্রতিবন্ধীদের মাঝে ফ্রি মৌসুমী ফল বিতরণ করা হচ্ছে।
এ ধরনের ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নেওয়ার জন্য গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসন, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং সংশ্লিষ্ট সকল স্বেচ্ছাসেবকদের ধন্যবাদ জানান ক্রেতারা।
গোপালগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এম রকিবুল হাসান বলেন, পবিত্র রমজানকে কেন্দ্র করে অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কারণে গরুর মাংস বেশিরভাগ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাহিরে চলে যাওয়ায় সরকার নির্ধারিত সূলভ মূল্যে গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যদি, মৌসুমী ফল এবং মাংস বিক্রির কার্যক্রম কালেক্টর বাজারের মাধ্যমে গ্রহণ করা হয়েছে, যা রমজানের পরেও চলমান থাকবে। তিনি আরো বলেন, উপজেলা পর্যায়ে এ ধরনের উদ্যোগ নিলে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি এবং গরুর মাংসের দামের ওপর প্রভাব পড়বে। অসাধু ব্যবসায়ীরাও বাধ্য হয়ে সরকার নির্ধারিত মূল্যেই তখন নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি ও মাংস বিক্রি করবেন।
ভোর ৬টা থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত চলে মাংস বিক্রির কার্যক্রম। পাশাপাশি নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি বিক্রি হয় ভোর ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত। এছাড়াও মাহে রমজান উপলক্ষে কালেক্টর বাজারে উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় প্রতিদিন রোজাদারদের জন্য ফ্রি ইফতার বিতরণ কার্যক্রম চালু করেছে।
আপনার মতামত লিখুন :