মোস্তাইন বীন ইদ্রিস (চঞ্চল),খুলনা: সুন্দরবনের দুবলার চরে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের রাসপূজা ও পুণ্যস্নান হবে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে; তবে পুণ্যার্থী ছাড়া অন্যদের ওই সময় সুন্দরবনে ভ্রমণ বন্ধ থাকবে, হচ্ছে না রাসমেলাও। সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের কার্যালয়ে মঙ্গলবার এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আবু নাসের মোহসিন হোসেন জানান। এই বন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, দুবলার চরে আগামী ৬ থেকে ৮ নভেম্বর তিন দিন পুণ্যস্নান ও রাসপূজা হবে। দুবলার চরে যাতায়াতের জন্য পাঁচটি রুটও নির্ধারণ করা হয় ওই সভায়। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত বছরের মত এবারও দুবলারচরে শুধু হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা যেতে পারবেন। অন্য কোনো ধর্মের লোক ওই তিন দিন যেতে পারবেন না। এবারও কোনো মেলা বা উৎসব হবে না। সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় লোকসমাগম কমানোর উদ্দেশ্যে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে।
দুবলারচর রাসপূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, রাসপূজায় সব ধর্মের মানুষের যাওয়া-আসার অনুমতি দিতে অনুরোধ করা হয়েছিল। কিন্তু সেই অনুমতি মেলেনি। সুন্দরবনের দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের বুকে কুঙ্গা এবং মরা পশুর নদীর মোহনায় জেগে ওঠা দুবলার চর বাঙালি হিন্দুদের রাসপূজা, পূণ্যস্নান এবং রাসমেলার জন্য বিখ্যাত।
রাসমেলা মণিপুরীদের প্রধান উৎসব হলেও বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায় বিভিন্ন স্থানে এ উৎসব পালন করে থাকেন।এটি রাসলীলা নামেও পরিচিত। এই মেলার ইতিহাসও দীর্ঘকালের। কার্তিক মাসের শেষ বা অগ্রহায়ণের শুরুতে রাসপূর্ণিমা তিথিতে সুন্দরবনের দুবলারচর, মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ এবং কুয়াকাটার সমুদ্রসৈকতে এ উৎসব হয়।
দুবলার চরে হিন্দু ধর্মাবলম্বী পুণ্যার্থীরা এ সময়ে পুণ্যস্নানের জন্য আসেন দলে দলে। আর মেলাকে কেন্দ্র করে অন্য ধর্মের মানুষেরও ব্যাপক সমাগম দেখা গেছে বিগত সময়ে। ২০১৯ সালে রাসপূজার সময় ঘূর্ণিঝড় বুলবুল আঘাত হানায় কাউকে সেখানে যাওয়ার অনুমতি দেয়নি বন বিভাগ। এরপর কোভিড মহামারী শুরুতে ২০২০ সালে রাসমেলা বন্ধ রাখা হয়। এরপর আর মেলা আয়োজনের অনুমতি দেওয়া হয়নি। সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের স্বার্থে রাসমেলা গতবছর স্থায়ীভাবে বন্ধ ঘোষণা করে সরকার।